পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার সুজানগরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় এগিয়ে আসেনি কেউ। অবশেষে খবর পেয়ে পাবনা শহর থেকে গিয়ে ওই ব্যক্তির দাফন, কাফন ও জানাযা করেছেন দাতব্য সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মাহবুব ও সাংস্কৃতিক কর্মি শিশির ইসলাম।
মৃত ব্যক্তি ইদ্রিস আলী (৬০)। তিনি সুজানগর উপজেলার মসজিদপাড়া মহল্লার নাসির উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি কিডনী সমস্যায় ভূগছিলেন। সোমবার দিবাগত রাতে তিনি মারা যান।
এদিকে ইদ্রিস আলী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এমনটি ভেবেই এলাকার কেউ এগিয়ে আসেননি তার গোসল, দাফন বা কাফনে। এমনকি সুজানগরে যারা পূর্বঘোষনা দিয়েছেন করোনা ভাইরাতে মৃত ব্যক্তিদের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য। অথচ তারাও এগিয়ে আসেননি বলে জানা যায় ।
এমতবস্থায় সুজানগর পৌরসভার মেয়র আব্দুল ওহাব বিষয়টি পাবনা শহরে দাতব্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তহুরা-আজিজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মাহবুব ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, পাঠশালার স্বত্তাধিকারী শিশির ইসলামকে। খবর পেয়েই তারা মঙ্গলবার সকালে ছুঁটে যান সুজানগরে মরহুম ইদ্রিস আলীর বাড়ীতে। সেখানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির গোসল, কাফন ও দাফনে অংশ নেন। স্থানীয় মসজিদের ইমাম জানাযা নামাজ পড়ান।
জানা যায়, মৃত ইদ্রিস আলীর দুই ছেলে ও চার মেয়ে সন্তান রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই কিডনী রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি জ্বরেও আক্রান্ত হন। ইতোমধ্যে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখনও রিপোর্ট আসেনি।
সাংস্কৃতিক কর্মি, পাঠশালার স্বত্তাধিকারী শিশির ইসলাম মুঠোফোনে জানান, গেল ২২ মে পাবনা সদর উপজেলার গয়েসপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ধোপাদহ গ্রামে মৃত রায়হান উদ্দিনের ছেলে নুরুজ্জামান নুরু স্টোক করে মারা যান। করোনা সন্দেহে মরহুমের গোসলসহ দাফন কাফনে কেউ এগিয়ে আসেননি। পরে জানতে পেরে তহুরা আজিজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মাহবুব ও তিনি নিজে ওই বাড়িতে গিয়ে মরহুমের গোসল, কাফন ও দাফনে অংশ নেন।
এদিকে মরণঘাতি ভাইরাসে যেখানে আপন পর হয়ে যাচ্ছে। সেখানে মাহবুব-শিশিরের এই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পাবনার সচেতন মহল। সম্প্রতি শিশির ইসলাম তার ফেসবুকে পোস্ট করেন, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের গোসল, দাফন ও কাফনে তিনি ছুটে যাবেন। তারই ধারাবাহিতকায় তারা এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দাবী, করোনা ভাইরাস উপসর্গে যদি কেউ মারা যান, তাহলে তাদের গোসল, কাফন ও দাফন পর্যন্ত তারা ওই ব্যক্তির পাশে থাকবেন।