কাপ্তাই প্রতিনিধি : কাপ্তাইয়ে যোগদানের ছয় মাসের মাথায় চট্টগ্রাম ওয়াসায় বদলি হলেন রুমন দে। কাপ্তাইতে এযাবৎ যত ইউএনও মহোদয়রা এসেছেন সকলেই গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে সমন্বয় রেখে দেশের স্বার্থে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ও জনগণের ন্যায্য সুযোগ সুবিধা রক্ষার্থে সকল নিষ্ঠার সাথে কাজ করে গেছেন। অথচ ব্যতিক্রম ভুমিকা রেখে গেছেন ইউএনও রুমন দে। তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে ঐক্যতা না করে মতবিরোধ সৃষ্টি করে গেলেন।
এ ব্যাপারে কাপ্তাই প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী রিপন বলেন দীর্ঘদিন যাবৎ সংবাদকর্মীদের বিধি বিধান মেনে তৃনমূল পর্যায়ে সংবাদ থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে সংবাদকর্মীদের লিখনির মাধ্যমে প্রচারে প্রসার ঘটিয়ে ঘটিয়ে আসছি। দেশে স্বীকৃত রয়েছে সংবাদকর্মীরা স্বাধীন। আমাদের সংবাদ কর্মীদের সংগঠন রয়েছে। এই সংগঠনটি পরিচালিত হয় প্রেস ক্লাবের গঠনতন্ত্র মোতাবেক। কিন্তু সম্প্রতি সংবাদকর্মীদে প্রেসক্লাব নিয়ে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে সহ কাপ্তাই উপজেলা সহকারী তথ্য অফিসার দেলোয়ার হোসেন কতিপয় চাকরীজীবি সাংবাদিক নামধারী ও কাপ্তাই প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কার্যক্রমে পক্ষপাতিত্ব করে ২৫/৫/২০২৩ ইং তারিখ কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে’র কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি অফিস আদেশ করেন। ওই অফিস আদেশটি পরবর্তীতে কাপ্তাই উপজেলা সহকারী তথ্য অফিসার ২৮/০৫/২০২৩ইং স্বাক্ষর করে প্রতিটি দপ্তরে দপ্তরে প্রেরণ করেন। যাতে উল্লেখ করা হয় ইউএনও রুমন দে’র মনোনীত কাপ্তাই প্রেসক্লাব ২০২৩-২৪ গঠন সম্পর্কিত বিষয় অবহিতকরণ।
তাতে উল্লেখ করা হয় গত ১৮/০৫/২০২৩ইং তারিখ কাপ্তাই উপজেলায় কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে ২০২৩-২৪ (২) বছর মেয়াদী কাপ্তাই প্রেসক্লাবের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিকে সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণে উক্ত কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক বরাবর পত্র প্রেরণের বিষয়টি সকলকে অবহিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এক পত্রাদেশে অনুরোধ করেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমন দে ও কাপ্তাই উপজেলা সহকারী তথ্য অফিসার দেলোয়ার হোসেন তা পরবর্তীতে বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করে সাংবাদিকদের ঐক্য বিভক্ত করেন। বিষয়টি অপর নির্বাচিত ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির কাপ্তাই প্রেসক্লাবের নজরে এলে কাপ্তাই প্রেস ক্লাবের নির্বাচিত সদস্যরা প্রতিবাদ জানান। কারণ সংবাদকর্মীরা স্বাধীন, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলে। আমরা জানি গণমাধ্যমকর্মীদের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী যেমন একটি সদস্যও কাজ করতে পারে না তেমনি ভাবে অন্য কোন কর্মকর্তারাও এই ব্যাপারে অনধিকার চর্চা করবে না। কিন্তু কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাপ্তাই সহকারী তথ্য অফিসার পক্ষপাতিত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বৃহত্তর সংবাদকর্মীদের দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা করেছে বলে তার নিন্দা জানান। এ ব্যাপারে কাপ্তাই প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন মারমা আক্ষেপ করে বলেন আমাদের ১২ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচিত কাপ্তাই প্রেস ক্লাব কমিটির প্রথম সভা ১১ মে ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে কে ১৫/০৫/২০২৩ইং তারিখ অবহিত করি। আমাদের নির্বাচিত ১২ সদস্য বিশিষ্ট কাপ্তাই প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটিটি ২৮/০৫/২০১৩ইং আনুষ্ঠানিকভাবে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট জমা প্রদান করা হয় ।
অথচ কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমন দে গণমাধ্যম কর্মীদের উৎসাহ প্রদান না করে ঈর্ষান্বিত হয়ে কাপ্তাই প্রেস ক্লাবের গঠনতন্ত্র আইন সংশোধনী ২০১৩ইং অনুচ্ছেদ ১০৪ খ) বিধি বিধান পরিপন্থী চাকুরীজীবী নামধারী সাংবাদিক উনার আজ্ঞাবহ ৭ জনের পক্ষ নিয়ে কাপ্তাই ইউএনও রুমন দে কিভাবে তাদের পক্ষে স্বীকৃতি দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে?, এ বিষয়ে কাপ্তাইয়ে কর্মরত অধিকাংশ গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ ও হতাশাবোধ করছেন।
কাপ্তাই প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহফুজ আলম বলেন সংবাদকর্মীগণ যেখানে স্বাধীন এবং ঐক্য থাকার কথা সেখানে কাপ্তাই ইউএনও রুমন দে গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে বিভক্ত তৈরি করে গেলেন। বিষয়টি দুঃখজনক এর ফলে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সংবাদে তুলে ধরার কার্যক্রম। ইউএনও রুমন দে’র অগণতান্ত্রিক, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজন প্রীতি কাপ্তাই প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী এক পত্রাদেশ জারী করায় গণমাধ্যম কর্মীরা হতাশ হন। এতে করে কাপ্তাই মফস্বল গণমাধ্যমকর্মীদের বৃহৎ একটি অংশ নিরুৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিবাদ ও দুঃখ প্রকাশ করেন। কাপ্তাইয়ের সচেতন গণমাধ্যম কর্মীরা মনে করুন ইউএনও রুমন দে’র স্বজন প্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার কারণে এলাকার সরকারি সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড ও সমাজের নানা অসংগতি এবং সামাজিক কর্মকান্ডগুলো সংবাদে তুলে ধরার ক্ষেত্রে একটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অথচ কাপ্তাইয়ের কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা চায় সংবাদকর্মীরা এক হয়ে দেশের স্বার্থে এলাকার স্বার্থে দ্বিধাদ্বন্দ ভুলে গিয়ে একই পতাকা তলে এসে কাজ করতে অথচ গেল দুই মাস যাবত সংবাদকর্মীদের প্রেসক্লাব নিয়ে কাপ্তাই ইউএনও রুমন দে এর পক্ষপাতিত্ব অফিস আদেশ প্রত্যাহারের জোর দাবি করে আসছিলেন কাপ্তাইয়ে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীগণ।
এক পর্যায়ে ইউএনও রুমন দে বলেন ওনার অফিস সুপার আলা উদ্দিনের কারণে ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন প্রেরিত পত্রাদেশটি সংশোধন করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন গণমাধ্যম কর্মীদের । এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান মহোদয় ও রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুল হক অবগত আছেন অথচ ইউএনও আজ করছি কাল,কাল করছি বলে সময় কালক্ষেপণ করে কোন কার্যবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এক পর্যায়ে ইউএনও রুমন দে গণমাধ্যম কর্মীদের আবারো হতাশ করে ৪ আগষ্ট কাপ্তাই থেকে বদলিরজনিত কারণে চলে যান বর্তমান কর্মস্থল চট্টগ্রামের ওয়াসার উদ্দেশ্যে । ইউএনও রুমন দে কর্তৃক গণমাধ্যম কর্মীদের মাঝে সৃষ্ট দ্বিধা -বিভক্তি সমন্বয় না করে অমীমাংসিত অবস্থায় রেখে যান। এ ব্যাপারে কাপ্তাইয়ে কর্মরত অধিকাংশ গণমাধ্যম কর্মীরা মনঃক্ষুণ্ণ ও হতাশ এবং অপ্রত্যাশিত বলে মনে করছি।