পাবনা প্রতিনিধি : এলডিডিপির আওতাধীন ডেইরি ও পোলট্রি খামারি প্রণোদনা তালিকায় নাম ওঠাতে পাবনার আটঘরিয়ায় খামারিদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, তালিকায় নাম উঠাতে খামারিদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরের দিকে প্রায় অর্ধশতাধিক খামারি উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস ঘিরে বিক্ষোভ করেছে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন তারা।
খামারীদের অভিযোগে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এলডিডিপির আওতাধীন ডেইরি ও পোলট্রি খামারি উদ্যোক্তাদের ক্ষতি কাটিয়ে মনোবল বাড়ানো ও তাদের ব্যবসা চালু রাখতে সারা দেশে নির্দিষ্টসংখ্যক খামারিকে নগদ আর্থিক সহায়তা (প্রণোদনা) প্রদানের ঘোষণা দেয় সরকার। এর আলোকে আটঘরিয়া উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ও অসচ্ছল খামারিদের একটি তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু খামারিদের অভিযোগ, তালিকায় নাম ওঠাতে তাদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে দেবোত্তর ইউনিয়নের মতিগাছা গ্রামের মুরগী খামারী মুনসী মানিক মোল্লা বলেন, এই তালিকায় নাম উঠাতে এলাকার প্রতি খামারিদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়ে তালিকায় নাম উঠানো হয়েছে। আমরা খামরিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
উপজেলার রায়পুর গ্রামের গরু খামারি আনোয়ার শেখ বলেন, বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস ঘিরে প্রায় আমরা অর্ধশতাধিক খামরি বিক্ষোভ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েছেন তারা।
উপজেলা প্রাণী সম্পদক কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান জানান, প্রান্তিক খামারিদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের সরকারি ঘোষণার আলোকে আটঘরিয়া উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নে মোট ২ হাজার জন পোলট্রি ও গাভী পালন খামারিকে টার্গেট করে তালিকা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৃত খামারিদের ছবি তুলে তালিকা প্রস্তুত করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৃত খামারিরা তালিকায় নাম থাকায় অন্যান্যরা বাদ পড়েছে। সেই কারণেই তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তবে প্রকৃত খামারিদের নামই তালিকায় স্থান পেয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: ফুয়ারা খাতুনকে বারবার ফোন করেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা প্রণোদনার তালিকায় নাম উঠাতে টাকা নিয়েছেন এ বিষয়ে যেন সাংবাদিকরা নিউজ প্রকাশ না করেন সেজন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো: তানভীর ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা গোপনে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ বিষয়ে আমার কাছে খামারিদের লিখিত অভিযোগ এসেছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগীয় কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবী জানিয়েছেন তিনি।