বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ঘোষণার প্রায় ৬ বছর পর শেওলাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকেও স্থলবন্দরে উন্নীতের লক্ষ্যে জমি অধিগ্রহণকাজ শুরু হয়েছে। এর আগে তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০১ সালে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে সেখানে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।
পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হচ্ছে সিলেটের আরও দুটি শুল্ক স্টেশনে। এর মধ্যে সিলেটের বিয়ানীবাজারের শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দিয়ে উন্নয়নকাজ শুরু হয়ে গেছে। আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ শুরু হলেও শেওলা শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয় ২০১৫ সালের ৩০ জুন। এত দিন ঘোষণার মধ্যেই আটকে ছিল স্থলবন্দর। শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো, লোকবল নিয়েই চলছিল শেওলার কার্যক্রম। সেবাও ছিল শুল্ক স্টেশনের।
অবশেষে ঘোষণার প্রায় ৬ বছর পর শেওলাকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরে রূপ দেয়ার কাজ শুরু হয়। ওই দিন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী শেওলা স্থলবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। পরদিন তিনি ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের ঘোষণা দিয়ে জমি অধিগ্রহণকাজের উদ্বোধন করেন।
শেওলা ও ভোলাগঞ্জের আগে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিলে স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু হয়। তামাবিল শুল্ক স্টেশনকে ২০০১ সালে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় ১৬ বছর পর ২০১৭ সালে সেখানে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়।
শেওলার অবস্থান ভারতের আসাম রাজ্যের বিপরীতে। ব্যবসায়ীরা জানান. ভারতের সাত রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ অপেক্ষাকৃত সহজ হওয়ায় এখানে স্থলবন্দরের কাজ শুরু হলে আমদানি-রপ্তানি আরও বাড়বে। ভোলাগঞ্জ দিয়েও আমদানি-রপ্তানি বাড়বে বলে আশা তাদের।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে প্রায় অচল অবস্থায় রয়েছে শেওলা ও ভোলাগঞ্জ শুল্ক স্টেশন। কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। ভোলাগঞ্জ দিয়ে কেবল পাথর ও শেওলা দিয়ে কিছু ফল আমদানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তারা।
শেওলার ফল আমদানিকারক আবুল কালাম বলেন, ভারত থেকে এই শুল্ক স্টেশন দিয়েই আমদানি অপেক্ষাকৃত সহজ। কারণ, এখানকার যোগাযোগব্যবস্থা ভালো।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শেওলা স্থলবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়া হচ্ছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১-এর আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব বলেন, প্রায় ২৫ একর জায়গার ওপর শেওলা স্থলবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় আগের ১৫ একরের বাইরে নতুন করে ৯ একর জমি অধিগ্রহণসহ গোডাউন, ইয়ার্ড, নিরাপত্তাপ্রাচীর, ওয়েব্রিজ স্কেল, ট্রাক পার্কিং, ডমেস্টিক ব্যারাক নির্মাণ করা হবে।
ভোলাগঞ্জের কাজের বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘এটিকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করতে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সরকারি খাসজমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নামে প্রদানের জন্য আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তাবনা প্রেরণ করেছি। অচিরেই এই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেয়া হবে।’
সিলেটের দুই শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়ের। তিনি বলেন, ‘কেবল স্থলবন্দরে উন্নীত করলেই চলবে না। ব্যবসায়ীরা যাতে স্থলবন্দরের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পান, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নতুবা ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত হবেন।’