হিমেল হাওয়ার পরশ ইবির ১৭৫ একরে

0

আবির হোসেন, ইবি: মুক্তোর দানার নুপুর পায়ে শীত নেমেছে বাংলায়। প্রান্তিক প্রকৃতিতে ভর করেছে অপরূপ সৌন্দর্যের ঢেউ। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ, এখানে ঋতুর বৈচিত্রের সাথে সাথে প্রকৃতি সাজে নবরূপে। সকালের হালকা কুয়াশা, শিশির সিক্ত ঘাস, একটু পরেই মিষ্টি রোদ, দুপুরে কড়া রোদ, শেষ বিকেলে আবারো হালকা ঠান্ডা হাওয়া জানান দেয় শীতের আগমনের।

শীতের আগমনে অপরূপ সাজে সজ্জিত হতে শুরু করেছে চিরসবুজে ঘেরা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। ১৭৫ একরের নয়ানাভিরাম সৌন্দর্যে ঘেরা ক্যাম্পাস শীতের আগমনে নবরূপ ধারণ করেছে। সকালের ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ার সাথে বিভিন্ন জাতের পাখির কিচিরমিচির আওয়াজে ঘুম ভাঙে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের। সন্ধ্যা নামার আগেও আবাসিক হলগুলোর প্রাঙ্গণে জড়ো হয় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ সন্ধ্যার প্রকৃতিকে করে তোলে আরো উপভোগ্য। এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য উপভোগ করে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

সকালের শিশির ঘাসের উপরে যেনো মুক্তোর দানার মতো চিকচিক করে ওঠে। প্রত্যেকটা ভোর হয়ে উঠেছে আলাদা মাত্রাই উপভোগ্য। অনন্দ্যি সুন্দর এই ভোরে আড়মোড়া ভেঙে হাঁটতে বের হয় অনেক শিক্ষার্থী। কেউবা গল্প করছে, কেউ আবার শরীর চর্চার মাধ্যমে নিজেকে একটু উষ্ণ করে নিচ্ছে। শীতের এই সকালে হালকা উষ্ণতার ছোঁয়া পেতে বন্ধুরা মিলে আড্ডা জমায় চায়ের দোকানে। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বন্ধুদের বাঁধভাঙা গল্প জন্ম দেয় ভিন্ন রকমের পরিবেশ।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশা কেটে উঁকি দেয় সূর্য। সকলের প্রতিক্ষিত সোনা রোদ যেন প্রকৃতিতে নবপ্রাণের সঞ্চার ঘটায়। বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। শীতের সকালের উষ্ণতা ভেঙে সবাই ছুটতে থাকে ক্লাস-পরীক্ষায়। ক্লাস শেষে দুপুরে আবারো দেখা কড়া রোদ। হালকা শীত ও গরমের এমন পরিবেশ একসাথে উপভোগ এই ‘রূপের রানী’র দেশেই সম্ভব।

আবাসিক হলগুলোর প্রাঙ্গণে বিভিন্ন জাতের ফুল ফোঁটা শুরু করেছে। প্রধান ফটকের সামনে, প্রশাসন ভবনের সামনে, স্মৃতিসৌধের সামনে, কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় ও পাখি চত্বরে দেখা মিলছে বিভিন্ন জাতের ফুল। এসব ফুলে যখন শীতের সকালের শিশির জমে তখন এগুলোর সৌন্দর্য পায় ভিন্ন মাত্রা। প্রকৃতিপ্রেমী শিক্ষার্থীদের দেখা মেলে পাখি চত্বরে। এখানে প্রকৃতিকে অনেক কাছ থেকে উপভোগ করা যায়।

শীতের বিকেল উপভোগ করতে সবাই ছোঁটে মফিজ লেকে। ইবির হাতিরঋিল খ্যাত এই লেকে শীতের বিকেলে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। বন্ধুরা মিলে আড্ডা জমায়, কেউবা অপলক দৃষ্টিতে অস্তমিত সূর্যের দিকে চেয়ে প্রাক্তনের কথা ভাবে। সূর্য ডুবে যায় পশ্চিম দিগন্তে, সেও ফিরে আসে বাস্তব প্রকৃতিতে। সন্ধ্যায় অনুভূত হয় হালকা শীত, রাত বাড়ার সাথে সাথে যার মাত্রা বাড়তে থাকে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.