পাবিপ্রবির ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ সোমবার উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের (১৪তম ব্যাচের) শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নবীন বরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাস ছিল জাকমজমকপূর্ণ ও বর্ণিল। নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ক্যাম্পাস ছিল কোলাহলমুখর। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন। সকাল ১০টায় স্বাধীনতা চত্ত্বরে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। স্বাগত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের আহবায়ক অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান। এ পর্যায়ে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
প্রধান অতিথি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে বিকশিত, আলোকিত, পরিশীলিত করার জায়গা। বিশ্ব নাগরিক হিসেবে নিজের স্বপ্নপূরণের জায়গা। আলোর দিকে যাত্রা শুরুর সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। হোচট খেয়ে কীভাবে উঠে দাড়াতে হয় তা শেখার কৌশল শেখায় বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানকে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করে দক্ষ মানব সম্পদের পাশাপাশি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সর্বোপরি এখান থেকে জ্ঞান অর্জন, আহরণ ও জ্ঞান তৈরী করতে হবে। দেশটাকে ভালোবাসতে হবে, দেশকে বুকে ধারণ করে নিজকে, পরিবার, সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। সবার উপরে দেশমাতৃকা। যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই বাংলাদেশ গড়ার জন্য দক্ষ মানবিক আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। তোমাদের মধ্য থেকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযোগি নাগরিক এখান থেকে তৈরি হবে বলে আমি আশাকরি।
তিনি আরও বলেন, সবসময় ভালো চিন্তা করতে হবে কারণ ভালো চিন্তা না করলে ভালো কাজ করা যায় না। তোমরা সময়টাকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করবে, পড়াশোনার পাশাপাশি এক্্রটা কারিকুলামে অংশগ্রহণ করতে হবে। সবাইকে সম্মান করতে শিখতে হবে। সকলের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার বিষয়টি আত্মস্থ করতে হবে। ফুলের সুভাসের মতো নিজেকে মিলিয়ে ধরতে হবে। সহমর্মিতা, দৃঢ়তার বৈশিষ্ট্য অর্জন করে সকলের সমন্বয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আলো- অন্ধকারের পার্থক্য বুঝতে, জানতে হবে। এটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হলেও আমাদের শিক্ষকরা বিশ্বমানের। আমাদের তরুন শিক্ষকরা তোমাদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করবেন। তোমাদের জন্য আমার দ্বার খোলা সবসময়। তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে ইউনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করবো পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে।
বিশেষ অতিথি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কে এম সালাহ উদ্দীন বলেন, প্রতিটি শিক্ষাঙ্গন এক একটি বাংলাদেশ। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমর্যাদা বৃদ্ধি পাবে নবীন শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে। আগামীর বাংলাদেশের জন্য প্রযুক্তি নির্ভর করে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। ৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য তোমাদের এক একজন দক্ষ কারিগর হতে হবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। ব্যর্থ মানুষকে কেউ মনে রাখে না। সফল মানুষ তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়। তোমরা নিজেকে জানার চেষ্টা করবে সবসময়। নিজের প্রতিভা, মেধা, শক্তি সাহস বের করে আনতে হবে। সবসময় চেষ্টা করতে হবে। তাহলে নিজের সম্ভাবনা জানতে পারবে। তোমরা আজকে প্রতিজ্ঞা করো নিজেকে জানার চেষ্টা করবে। তাহলে নিজেকে আবিস্কার করতে পারবে। তাতেই তোমরা সফল হবে। নিজেকে বিকশিত করতে পারবে। মেধাকে শানিত, উর্বর করতে পারবে।
সভাপতির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান বলেন, রাষ্ট্র সমাজের বিবর্তনে আলোকিত মানুষ গড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী প্রজম্মের রুপকার তোমরা। জাতি ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে এই জাতিকে এক করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙ্গালিকে নতুন দেশ, মানচিত্র দিয়েছে। তাঁকে সবসময় শ্রদ্ধায় স্মরণ করতে হবে। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও সবসময় তার উপর নজর রাখতে হবে। সন্তান পড়ালেখা ছাড়াও অন্য কোনো ধরণের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তার খোঁজ খবর নিতে হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের মিলিত প্রচেষ্ঠায় আমরা শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলব।
প্রক্টর মোঃ কামাল হোসেন সকল রকমের সমস্যায় তাঁর সাথে যোগাযোগ করার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।
আরও বক্তব্য প্রদান করেন ডিনদের মধ্যে অধ্যাপক ড. মোঃ খায়রুল আলম, অধ্যাপক ড.দিলীপ কুমার সরকার, অধ্যাপক ড.মোঃ হাবিবুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান, ড. মোঃ রাহিদুল ইসলাম ও ছাত্র উপদেষ্টা ড.সমীরণ কুমার সাহা, নতুন শিক্ষার্থদের মধ্যে জাহানারা খাতুন ও আরেফিন দুর্জয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম। শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।