আমরা চেয়েছি শিক্ষার্থীদের মনের সুপ্ত ভালোবাসা বিকশিত করতে: নোবিপ্রবি উপাচার্য

0

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি : শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালনের অভিযোগ উঠেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তবে নোবিপ্রবি উপাচার্যের দাবি,বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের চেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি আনন্দের। আমরা চেয়েছি শিক্ষার্থীদের মনের সুপ্ত ভালোবাসা বিকশিত করতে,যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে তারা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসা থেকে অংশগ্রহণ করে।

এদিকে হাতে গোনা শিক্ষার্থীদের নিয়ে দিবস উদযাপন করায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড়

জানা যায়,আজ ১৫ জুলাই ১৭ বছর পেরিয়ে ১৮ বছরে পর্দাপণ করেছে উপকূলীয় অক্সফোর্ডখ্যাত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ হাতেগোনা কয়জন শিক্ষার্থী আর শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে এই দিনটি উদযাপন করতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে যেখানে সবার উপস্থিত থাকার কথা সেখানে মাত্র অল্প কয়েকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

আরো জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। পাঁচ আবাসিক হলে প্রায় পনেরোশর অধিক শিক্ষার্থী বাস করেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের হার ছিলো একেবারে সর্বনিম্ন যা মোট শিক্ষার্থীর অনুপাতে ১% চেয়ে কম ও আবাসিক শিক্ষার্থীর অনুপাতে ৪% এর কম।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে শিক্ষার্থীদের বহুল আকাঙ্খিত একটি দিন উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, এদিনে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে পূর্ণ আলোকসজ্জার আওতায় আনা,জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন, আবাসিক হলগুলোতে ফিস্টের আয়োজন সহ টি-শার্ট ব্যবস্থা করার দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জয় প্রকাশ বলেন, শিক্ষার্থীরা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নেই মানেই বোঝা যায় প্রশাসন কতটা ব্যার্থ বা সাধারন শিক্ষার্থীরা কতটা ডিটাচ এই প্রসাশন থেকে! এই বেশিদিন আগে না ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আর আজকের দিবসের মধ্যে দিন রাত পার্থক্য। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন দেখলে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয় যখন একই সময়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের ক্যাম্পাসে ঘটা করে আয়োজন করা হয় তাদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবস।এসব বলেও আসলে লাভ নাই!

শিক্ষার্থী ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি’র শিক্ষার্থী ফারদ্বীন শাওন বলেন, এতো আবেগ পূর্ণ ভালোবাসা প্রেমিকাও দেখায় না, ভালোবাসার ঠেলায় গত কয়েক বছর শিক্ষার্থীরা পিষ্ঠ হয়ে গেছে একদম।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয় যখন নিজেদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে নানা আয়োজন করে থাকে সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নোবিপ্রবির এমন আয়োজন আমাদের জন্য লজ্জার।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক নূর হোসেন বাবু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, বিবেক বন্ধক দেওয়া দলকানা এক প্রকার দালাল গুলো হালুয়া রুটির লোভে সত্যকে লুকিয়ে মিথ্যাকে সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তাদের এই হীন উদ্দেশ্য সফল হবেনা এবং অচিরেই তারা তাদের কর্মের ফল পাবেন ইনশাআল্লাহ ।

নোবিপ্রবিতে কর্মরত এক কর্মচারী দু:খ প্রকাশ করে বলেন, দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত একজন কর্মচারী হিসেবে কতৃপক্ষের কাছ থেকে আরো ভালো আয়োজন আশা করেছি,কিন্তু আয়োজন দেখে রীতিমতো মর্মাহত হলাম।

নোবিপ্রবি উপাচার্য(ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড আব্দুল বাকী বলেন, বন্ধের দিন হওয়াও ছাড়া নানাবিধ প্রতিবন্ধকতায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি,তবে আগামী বছর ভালো কিছু হবে এ আশা করছি।

শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের আয়োজন রাখা হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,খাবার দিয়ে প্রলুব্ধ করে ভালোবাসা জাগ্রত করা যায়না,আমরা চাই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোবেসে এর সকল অনুষ্ঠানে নিজ থেকে অংশগ্রহণ করবে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.