শাবনূরের চলচ্চিত্রে ফেরা নিয়ে যা বললেন নায়ক রিয়াজ
বিনোদন ডেস্ক : বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সফল জুটি বলা হয় রিয়াজ ও শাবনূরকে। তবে রিয়াজের আগে প্রয়াত নায়ক সালমান শাহর সঙ্গেই ছিল শাবনূরের জুটি। অল্প সময়ে একসঙ্গে অসংখ্য ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তারা। ১৯৯৬ সালে সালমান শাহর মৃত্যুর পরই শাবনূর জুটি গড়েন নবাগত রিয়াজের সঙ্গে।
প্রায় ৪০টির বেশি ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছেন তারা। জনপ্রিয়তার দিক থেকে এই জুটিকে এখন অবধি সফল হিসেবেই ধরা হয়। টানা প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় ছিল তাদের অভিনীত সিনেমার রাজত্ব। ২০১২ সালের পর রিয়াজ-শাবনূর দুজনই সিনেমায় অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ভেঙে যায় দর্শক নন্দিত এই জুটি।
তবে জুটি ভেঙে গেলেও মাঝেমধ্যে দু-একটি ছবিতে রিয়াজকে দেখা গেছে। কিন্তু তত দিনে শাবনূর পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেই বিয়ে করে এক সন্তানের মা হন।
যদি বিয়েবিচ্ছেদও হয়ে গেছে এই নায়িকার। তবে সম্প্রতি আবার সিনেমায় ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন শাবনূর। জানিয়েছেন, দুটি সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন তিনি। টানা এক যুগের বিরতি ভেঙে তিনি ‘রঙ্গনা’ এবং ‘মাতাল হাওয়া’ নামে ছবি দুটিতে অভিনয় করবেন। কথা হচ্ছে আরো দু-একটি সিনেমা নিয়ে। শাবনূরের এই ‘কামব্যাক’কে বেশ বাহবা দিচ্ছেন ভক্তরা।
তবে তার সবচেয়ে বেশি ব্যবসা সফল সিনেমার নায়ক রিয়াজ মন্তব্য করেছেন শাবনূরের চলচ্চিত্রে ফেরা নিয়ে। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ‘বিনোদন সারা দিন’ নামের একটি অনুষ্ঠানে শাবনূরের সিনেমায় ফেরা প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘সিনেমা যদি করতে হয় সে (শাবনূর) ভালো কিছু করুক। সব সময় তার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভ কামনা আছে। কিছুদিন আগে একটি ঘরোয়া পার্টিতে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, কংগ্রাটস জানিয়েছি। তবে আমি বলব, যদি সে (শাবনূর) সিনেমা করতে চায়, তাহলে এত দিন বিরতিতে থাকার মানে কী ছিল? আসলে অনেক সময় আমরা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। শাবনূর কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানি না। যদি সিনেমা করতে চায় তাহলে বন্ধু হিসেবে আমি শাবনূরের উদ্দেশে বলব, তার উচিত হবে ২০২৪ সালে এসে ২০২৪-এর কনটেন্ট, স্ক্রিপ্ট এবং পরিচালক নির্বাচন করে ছবি করা। শাবনূরকে এমনিতেই মানুষ ১০০ বছর মনে রাখবে। তবে সে (শাবনূর) আবার যে ছবি করবে, সেই ছবি যেন তাকে পরবর্তী আরো ১০০ বছর বাঁচিয়ে রাখে।’
শাবনূরের উদ্দেশে রিয়াজ আরো বলেন, ‘তাকে মনে রাখতে হবে, সে যে সময়টা বিরতি নিয়েছিল, এর মাঝে বাংলাদেশের সিনেমা এবং মিডিয়ায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। আগে অনেকেই ছিল, যারা এখন বেঁচে নেই। তাই যদি শাবনূর স্ক্রিপ্ট, ডিরেক্টরসহ পুরো টিম ঠিকঠাকভাবে সিলেক্ট করে আবার সিনেমা করে, তাহলে আমি বলতে চাই, তার সিনেমায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত সঠিক হবে।’
তবে অনুষ্ঠানে রিয়াজ নিজেকে নিয়েও কথা বলেন। উপস্থাপিকা তাকে প্রশ্ন করেন, বলিউডে রিয়াজের সময়কার নব্বইয়ের দশকের অভিনেতারা আজও চলচ্চিত্রে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ তাদের সিনেমা দিয়ে শতকোটির ক্লাবে পা রাখছেন। অথচ রিয়াজ কেন অনিয়মিত? উত্তরে এই নায়ক বলেন, ‘এখনো বাংলা চলচ্চিত্র একজন অভিনেতাকে ইকোনমিক সিকিউরিটি দেওয়ার উপযোগী হয়নি। শুধু অভিনয় করে জীবন কাটানো যাবে এই গ্যারান্টি চলচ্চিত্র দেয়নি। দিনশেষে সার্ভাইভ করতে হয় অথবা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাইতে হয়। আমি এটা পছন্দ করি না। আমি মনে করি, এর বাইরে শিল্পীদের উত্তরণে যদি কিছু করতে পারি সেটা ভালো হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’