শেখ হাসিনার কূটনীতির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা বিশ্বনেতাদের

0

হীরেন পণ্ডিত : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রাসেলসে দু’দিনব্যাপী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কুড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশনে গত ১৫ বছরে দেশের যুগান্তকারী অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনে তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা তুলে ধরে আবেগঘন কণ্ঠে বক্তৃতাকালে অংশগ্রহণকারীরা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তাকে সাধুবাদ জানান। স্বাধীনতার পরবর্তী বছরগুলোতে দেশের অভ্যন্তরে সংগ্রামের ওপর আলোকপাত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব নেতাদের প্রতি শান্তির জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।

প্রেসিডেন্ট সাল স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বিশেষকরে আফ্রিকা কীভাবে স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরি করতে পারে সে সম্পর্কেও আলোকপাত করেন। বিশ্ব কূটনীতিতে এখন অন্যতম আলোচিত নাম শেখ হাসিনা। একদিকে যেমন বিচ্ছিন্নতাবাদী, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তিনি সারা বিশ্বের রোল মডেল।

শান্তিপূর্ণ উপায়ে কিভাবে সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ নির্মূল করা যায় তার রোল মডেল হলেন শেখ হাসিনা। আবার অন্যদিকে তিনি একজন মানবতাবাদী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বিশ্ব কূটনীতিতে প্রশংসিত, আলোচিত। বিশেষ করে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে তিনি মানবতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনা এ সমস্ত কূটনীতিক তৎপরতা এবং কূটনীতিক বিচক্ষণতা বিশ্ব ডিপ্লোম্যাসিতে এক আলোচনার বিষয়। করোনার সংকটের সময় শেখ হাসিনা বিশ্ব কূটনীতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার বিশ্বের সর্বোচ্চ, যা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে, যেকোনো মানদণ্ডে এটি একটি অবিশ্বাস্য অর্জন।

বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি। তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ১৫ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ৪৬৫ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে।’তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আমরা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছি। চরম দারিদ্র্য ২০০৬ সালের ২৫.১% থেকে ৫.৬%-এ নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে উন্নীত হতে চলেছে।’ বিশ্ব নেতাদের শান্তির জন্য আন্তরিক অনুরোধের মধ্য দিয়ে তার আবেগঘন বক্তৃতা শেষ হয়। অংশগ্রহণকারীরা এসময় বিপুল করতালি দিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

দুই দিনের গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩ ব্রাসেলসে বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সারা বিশ্ব থেকে সরকারের সবচেয়ে সিনিয়র প্রতিনিধিদের একত্রিত করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল এবং আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এডি রামা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে মোহাম্মদের শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে ফোরামের উদ্বোধনী অধিবেশন শেষ হয়। সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকিসাল সকল পক্ষের জন্য নতুন পরিবহন অবকাঠামোর অর্থনৈতিক সুবিধা তুলে ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জন্য তার দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে কথা বলেন। উদাহরণস্বরূপ ট্রান্স-আফ্রিকান হাইওয়ে ৯ নামে পরিচিত ৩৫২৩ কিলোমিটার বেইরা লোবিটো ট্রান্স-আফ্রিকান করিডোর ছয়টি আফ্রিকান দেশের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে শেখ হাসিনার পাঁচটি কূটনীতিক চমক সারা বিশ্বের জন্য মডেল হয়েছে। যে কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে শেখ হাসিনা সারা বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন। তারমধ্যে রয়েছে চীন আর ভারতের সম্পর্কের উন্নয়ন এবং সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশের সীমান্তে এই নিয়ে উত্তেজনা প্রশমন। একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যেও শেখ হাসিনা বিশ্বে একমাত্র দেশ যিনি চীন এবং ভারতের সাথে সমান্তরাল গতিতে এবং প্রায় সমান উচ্চতায় সম্পর্ক রেখেছে। চীন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় অংশীদার। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন সবচেয়ে বড় পার্টনার। আবার অন্যদিকে ভারত বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ এবং দুই দেশের সম্পর্ক গত এক দশকে এক নতুন উচ্চতায় উঠেছে। এই দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করা সেটি সাড়া বিশ্বের জন্য একটা চমক বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশে সব ব্যাপারে নাক গলাত বিদেশীরা। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের মুরুব্বী দেশগুলো বাংলাদেশে কিছু ঘটলে হাহাকার করে উঠত।

রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশকে কি করতে হবে না করতে হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দিতো। আমরা ২০১৪ এর নির্বাচন পর্যন্ত এই রকম তৎপরতা দেখেছি। শেখ হাসিনার দক্ষ কূটনীতি ও বিচক্ষণতার কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বিদেশী হস্তক্ষেপ এখন বন্ধ হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচন বা অন্যান্য বিষয়ে যে কথায় কথায় বিভিন্ন দুতাবাসের বিবৃতি দেওয়া বা মন্তব্য করার করার প্রবণতাগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের মতো দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত বিশ্বে উন্নয়নের জন্য সংগ্রামরত দেশগুলোর ক্ষেত্রে এক ধরনের অনুপ্রেরণা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহার ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবেন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তিনি করেছেন। স্বাভাবিকভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর একটি নেতিবাচক ধারণা ছিল। অনেকে মনে করেছিল এই কারণে সৌদি আরবসহ মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটবে। শেখ হাসিনা একদিকে যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন, অন্যদিকে এই দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করেছেন। অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মধ্যেপ্রাচ্যের দেশগুলোর এখন অনেক উষ্ণ সম্পর্ক রয়েছে। এটাই শেখ হাসিনার আরেকটি কূটনীতিক চমক। কিভাবে তিনি পেরেছেন সেটি ব্যাখ্যা করবেন বিশ্লেষকরা। তবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে এখন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কোন মাথাব্যথা দেখায়নি।

১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী যখন আশ্রয় নিয়েছিলো বাংলাদেশে, তখন অনেকে বলেছিল যে, মিয়ানমারের পক্ষে অনেক দেশ আছে। বিশেষ করে রাশিয়া, চীন, ভারতের কথা বলা হচ্ছিলো। শেখ হাসিনা জেনে বুঝে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং এখনো দিচ্ছেন। তিনি এমন কূটনৈতিক নীতি গ্রহণ করেছেন যার কারণে সারা বিশ্বে মিয়ানমার এখন ধিকৃত হচ্ছে। মানবাধিকার প্রশ্নে রোহিঙ্গাকে একঘরে করা হয়েছে। এটাও শেখ হাসিনার কূটনীতির একটি বড় বিজয়।

শেখ হাসিনা কূটনীতির ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ে প্রাধান্য দিয়েছেন এবং দুটি বিষয়ে তাঁর অবস্থান তাকে বিশ্ব নেতায় পরিণত করেছে। একটি হল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে দেশগুলোকে একাট্টা করা। সেই দেশগুলোর কণ্ঠস্বর হিসেবে নিজেকে স্থাপন করা। দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক কূটনীতির উপর গুরুত্ব দেওয়া। এই দুটির কারণে তিনি তৃতীয় বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে পরিচিত হয়েছেন।
কূটনীতিবিদরা মনে করছেন, যুগোশ্লাভিয়ার মার্শাল টিটো, ভারতের শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী যে পর্যায়ে কূটনীতি করতেন, সংগ্রামরত দেশগুলোকে উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ করছিলেন এবং তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন। তেমনিভাবে শেখ হাসিনা এখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছেন। তাঁর এই কূটনৈতিক চমক তাকে এখন সারা বিশ্বের অন্যতম সেরা কূটনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

সরকারের বিরুদ্ধে দেশের বাইরে যেসব মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়ে এগুলোর যথাযথ জবাবের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, তবে আরো এটি ত্বরান্বিত করা জরুরি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে, বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলো সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সেই অপপ্রচারের প্রতিবাদ ও যৌক্তিক জবাব দিতে সদা তৎপর রয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত প্রেস
ব্রিফিংয়ে এই ডিজিটাল অপপ্রচার মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিদেশে অবস্থিত দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলো নিরলসভাবে কাজ করছে। অপপ্রচার প্রতিরোধে তারা নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন, টুইটারে জবাব দিচ্ছেন বলেও মন্ত্রণাল সূত্রে জানা যায়। সরকারের বিরুদ্ধে যেসব গুজব ও মিথ্যা তথ্য রটানো হচ্ছে তার জবাব দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গতিশীল নেতৃত্বে সবাই কাজ করছেন। সরকারের সাফল্য ও দেশের অগ্রযাত্রায় বিদেশি সরকার, সংস্থা, গণমাধ্যম এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তুলে ধরছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে এবং সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে।

রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা, অপপ্রচারকারী, উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদানকারী এবং তালিকাভুক্ত দুষ্কৃতিকারীদের বিষয়েও মন্ত্রণালয় সচেতন রয়েছে এবং তাদেরকে নিবৃত্ত করার জন্য নানাবিধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কূটনীতি, জন কূটনীতি এবং আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতায় জোর দিয়েছে এবং এগুলোতেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে। দেশের ভাবমূর্তি বিদেশের মাটিকে কিভাবে আরো উজ্জ্বল করা যায় এর জন্য নিত্য নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর সেগুলো নিশ্চিত করার চেষ্টাও করা হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা আরও কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়েও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিবিড়ভাবে কাজ করছে। বিশেষ করে রপ্তানী পণ্যের বহুমুখীকরণ ও অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য নতুন বৈদেশিক শ্রমবাজার বের করার লক্ষ্যেও কাজ করছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে । এখন প্রত্যেকটি মিশনে বঙ্গবন্ধু কর্নার চালু করা হয়েছে। আর এ কর্নারের মাধ্যমে মনিটরে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য দেখা যায়।

বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেকের সুস্পষ্ট ধারণা নেই, তেমনি এদেশের গণতন্ত্র নিয়ে অনেকের ধারণাও স্পষ্ট না। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের আর কোন দেশ গণতন্ত্র, জাস্টিস ও মানবাধিকারের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে এই বিষয়গুলো তুলো ধরছে। বঙ্গবন্ধু কর্নার দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে কাজ করছে। জন কূটনীতিতে আমাদের দায়বদ্ধতা অনেক, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এগুলো নিয়ে পরিকল্পনামাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ।

বিশ্বে যেখানে আঞ্চলিক শান্তি এবং স্থিতিশীলতা নাই সেখানে বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বিরাজমান থাকায় আমরা অনেক সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই আমাদের এ অর্জন। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, নারীনীতি ও মানবাধিকার, জাতিসংঘ পুনর্গঠন বিষয়ে স্ব-স্ব রাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে বর্ণনা করে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনের মাধ্যমে ২০৪১ সালে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সম্মিলিতভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তর অর্থনৈতিক সাফল্যে বাংলাদেশের কৌশলগত ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশি।

দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার চ্যালেঞ্জগুলো বাস্তবায়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করছে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষতা ও যোগ্যতার ওপর বহির্বিশ্বের আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ডি-৮-এর সদস্যভুক্ত দেশের কূটনীতিকদের এখানে প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করছে। কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশ অসামান্য কূটনৈতিক সাফল্যের নজির রেখেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম এবং বিশ্বে ৫ম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পররাষ্ট্রনীতিকে উপজীব্য করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানকে সুদৃঢ় ও মর্যাদাপূর্ণ করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে, সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়।

ভারতের নয়াদিল্লীতে জি-২০ উপলক্ষ্যে বিশ্বনেতাদের যে সম্মিলন ঘটেছিল সেখানেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। বিশ্বের ধনী ও শক্তিধর দেশগুলোর সংগে একই সারিতে বাংলাদেশের এই অবস্থান বৈশ্বিক কূটনীতিতে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছেন অনেকে। এক সময় কূটনীতিকদের ভুল বার্তা দেয়া হয়েছিল। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সে ভুল ভাঙাতে সক্ষম হয়েছে।

ইউরোপিয় ইউনিয়নের দূতসহ এখন অনেক দেশের অনেক রাষ্ট্রদূত এসব আলোচনার পর তারা আসল ঘটনা বুঝতে পেরেছেন বাংলাদেশ সম্পর্কে। শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিশ্বে বাংলাদেশ একটি সম্মানের আসনে স্থান লাভ করেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে বিশ্বের মানচিত্রে একটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করেছেন, আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননত্রেী শেখ হাসিনা গতিশীল ও অদম্য নেতৃত্বে ক্লাসিক ঋণ নির্ভর বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.