গতিসীমা নির্ধারণ সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ

0

হীরেন পণ্ডিত : সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ করেছেন এর আওতায় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি বিধিমালা তৈরি করা হয়েছে।

আবার গতিসীমা নির্দেশনা জারি করেছে ৫ মে ২০২৪। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের জারি করা মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা দুর্ঘটনা ও প্রতিরোধযোগ্য অকালমৃত্যু ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সবার বিশ্বাস। সেই সাথে এই নির্দেশিকার যথাযথ বাস্তবায়ন ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

সরকার দেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। এরপরেও সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাচ্ছেনা বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। দেশের সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। পাশাপাশি মোটর সাইকেলের অনিয়ন্ত্রিত গতি প্রতিনিয়ত দেশের কর্মক্ষম তরুণসহ অনেকের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।
গত ৫ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা প্রণয়নে গ্রামাঞ্চল ও শহরের ঘনত্বের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েছে। রাস্তার ধরন ও প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন মোটরযানের গতি ভিন্ন ভিন্ন করা হয়েছে, যা সড়ক নিরাপত্তার জন্য মানসম্মত বিষয় বলে মনে করে সবাই। তবে এক্ষেত্রে লেন ভিন্ন করলে নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন সহজতর হবে। নির্দেশনাটি বাস্তবায়ন করা গেলে দুর্ঘটনা এবং সড়কে অকাল মৃত্যু কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য যে, এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করলে সড়কে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ঝুঁকিপূর্ণ পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করাসহ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের গতিশীল ভূমিকার কারণে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। তবে এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কে যথাযথ এক্সেস কন্ট্রোল নেই সেহেতু যানবাহনের ধরন অনুযায়ী গাড়ির যে গতি সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি সড়ক ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক।

আবার নির্দেশিকার কিছু বিষয়ে বিশেষ করে মোটরসাইকেলের গতি সীমা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে- এ ব্যাপারে গ্রামাঞ্চল ও শহরের জন্য মোটর সাইকেলের গতি সীমা নির্ধারণ করায় সড়কে চলাচলের জন্য শিশু, নারী ও বৃদ্ধ ব্যক্তিরা উপকৃত হবেন। মোটরসাইকেলের গতি কম থাকার ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেও হতাহত কম হবে। এছাড়াও গতি কম থাকার ফলে মোটরসাইকেলের কন্ট্রোলিং-এ বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে, যা অপ্রত্যাশিক দুর্ঘটনা এড়াতে সহায়তা করবে। বিশ্বের অনেক দেশ শহরাঞ্চলে সড়ক নিরাপত্তার জন্য মোটরসাইকেলের গতির সীমা কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশেও অনুরূপভাবে গতি সীমা বাস্তবায়ন করলে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে সড়কে নিহত ও আহতের ঘটনাসমূহ প্রতিরোধযোগ্য হওয়া সত্তে¡ও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ প্রণয়ন করা হলেও বিগত ৬ বছরে কোনো গতি সীমা নির্দিষ্ট না থাকায় এই সমস্যার সমাধান অর্জন করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে এই নির্দেশিকা জারি করায় সরকার অভিনন্দন পাবার যোগ্য। সড়ক দুর্ঘটনা আমাদের দেশের একটি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর। আমাদের দেশে ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনা গুলি কখনোই দুর্ঘটনা বলে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। প্রতিটি দুর্ঘটনাই ঘটছে কারো না কারো অবহেলার কারণে। তাই কারো অবহেলার কারণে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাকে কি কোনভাবেই দুর্ঘটনা বলে আখ্যায়িত করা যায়? প্রতিটি মানুষের মৃত্যু আমাদেরকে ভীষণভাবে ব্যথিত করে
অনেক সময় দেখা যায় চালক তার সহকারীর হাতে যানবাহনের স্টিয়ারিং ছেড়ে দিয়ে নেমে পরেন আর অদক্ষ সহকারী মহাসড়কে হাতে স্টিয়ারিং পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠে। অদক্ষ সহকারী বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে কেড়ে নেয় অনেক মানুষের জীবন। সবচেয়ে বড়কথা হলো যে সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু ব্যক্তিই নিহত হন না, নিহতের পরিবারকেও সারাজীবন এই বোঝা বহন করতে হয়।

পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে ওই পরিবারের সদস্যদের চোখে অন্ধকার নেমে আসে এক একটি পরিবারকে ভাসতে হয় বিপদের অথৈই সাগরে। আহত হয়ে কাউকে আবার চিরতরে পঙ্গুত্ব নিয়েই অন্যের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে হয় আজীবন।

সড়ক ও সড়কে গাড়ি থাকলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে এটা অস্বীকার কোন উপায় নেই তবে এ ধরনের দুর্ঘটনা মাত্রা অবশ্যই সহনশীল পর্যায়ে থাকতে হবে। আমাদের অন্য কারণগুলোও বিবেচনায় আনতে হবে যেমন গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি, পথচারীদের বেপরোয়া পথচলা ও কিন্তু দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) দুর্ঘটনার কারণ-সংক্রান্ত পুলিশের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এআরআই বলছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে ৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও গতির কারণে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে। তাদের গবেষণা বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার ৪৩ শতাংশই ঘটছে জাতীয় মহাসড়কগুলোতে।
হাইওয়ে পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালে কুমিল্লা হাইওয়ে রিজিয়নে ৩২৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪৭ জন, আহতের সংখ্যা ৩১৩। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৩৪৭ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০৬ জন, আহত হয়েছেন ৩৫৭ জন। এ মহাসড়কের কুমিল্লা অঞ্চলে ২০২২ সালে যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে ১৮১টি ঘটেছে বেপরোয়া গতির কারণে। সমীক্ষা থেকে জানা যায়, দেশে ৮৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ যানবাহনের বেপরোয়া গতি।

বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর হওয়া সত্তে¡ও ঢাকার সড়কে দুর্ঘটনা বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৫২টি দেশের ১ হাজার ২০০টির বেশি শহরের মধ্যে সবচেয়ে ধীরগতির শহর ঢাকা। সম্প্রতি ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় ইমাদ পরিবহণের যে বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল, সেই বাসের চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এক্ষেত্রে চালকের প্রয়োজনীয় বিশ্রামের বিষয়টি হয়েছে উপেক্ষিত।

দেশের সড়ক-মহাসড়কে গাড়ি চলাচলের গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে সরকার। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জারি করা মোটরযানের গতিসীমা-সংক্রান্ত নির্দেশিকা-২০২৪ অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন, পৌর এলাকা এবং জেলা সদরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। বাংলাদেশ সড়ক কর্তৃপক্ষ বিআরটিএর চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে বলা হয় ১০ ধরনের গাড়ির জন্য সড়কের গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ ক্যাটাগরিতে।

মোটরসাইকেলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিসীমা- এক্সপ্রেসওয়েতে ৬০ কিলোমিটার, জাতীয় মহাসড়ক (ক্যাটাগরি-এ) ৫০ কিলোমিটার, জাতীয়(ক্যাটাগরি-বি) ও আঞ্চলিক মহাসড়কে ৫০ কিলোমিটার, জেলা সড়ক ৫০ কিলোমিটার, সিটি করপোরেশন, পৗরসভা, জলা সদরে ৩০ কিলোমিটার, উপজেলা মহাসড়ক ও শহর এলাকায় প্রাইমারি আরবান সড়ক ৩০ কিলোমিটার, শেয়ার রোড ও অন্যান্য সড়ক এবং গ্রামীণ সড়ক ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে।
সাধারণ নির্দেশনায় বলা হয়, নির্ধারিত এ গতিসীমা মেনেই সড়ক মহাসড়কে মোটরযান চালাতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা এবং হাট-বাজার সংলগ্ন সড়ক বা মহাসড়ক মোটরযানের সর্বোচ্চ গতিসীমা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা রাস্তা নির্মাণকারী বা উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত হবে; তবে তা কোনোক্রমেই জাতীয় মহাসড়কের ক্ষেত্রে ৪০ কিলোমিটার ঘণ্টা এবং আঞ্চলিক মহাসড়কের ক্ষেত্রে ৩০ কিলোমিটারের অধিক হবে না; জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিত মোটরযান, যেমন: অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের ক্ষেত্রে এই গতিসীমা শিথিলযোগ্য হবে।

পাহাড়ি এলাকা, আঁকাবাঁকা সড়ক, বাঁক, ব্রিজ, রেল বা লেভেলক্রসিং, সড়ক সংযোগস্থল, বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের সামনে সাইনে প্রদর্শিত গতিসীমা প্রযোজ্য হবে। উল্লিখিত গতিসীমা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে ‘মোটরযানের গতিসীমা সংক্রান্ত নির্দেশিকা, ২০২৪’ জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক ও মহাসড়কে দ্রæতগতির পরিবহনের সংখ্যা বাড়ছে। অতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে চায় সড়ক পরিবহন বিভাগ। তবে জরুরি সেবার অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের ক্ষেত্রে গতিসীমা শিথিল থাকবে।

গতিসীমা নির্ধারণের নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে ও মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, গতিসীমা নিয়ে গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। এখন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে যারা গতিসীমা লঙ্ঘন করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ সড়কে কম গতির গাড়ী। এজন্য থ্রি হুইলার নীতিমালা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন হতে হবে।

তবে অনেকে মনে করছেন একই লেনে যদি সব ধরনের যানবাহন চলে, তা হলে কোনোভাবেই যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। গতিসীমা ঠিক করার উদ্দেশ্য হলো সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো। কিন্তু যেভাবে গতি ও অবকাঠামোর সঙ্গে মিল রেখই কাজ করতে হবে। সড়কে বিশৃঙ্খলা রোধে প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো এই আইন নীতিমালা ও গতি নির্দেশিকার যথাযথ বাস্তবায়ন। কারণ একই লেনে সব ধরনের যানবাহন চললে দুর্ঘটনাও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবে এই নির্দেশিকা বাস্তবায়নই বড় চ্যালেঞ্জ। সরকার আগস্ট ২০১৫ সালে ২২টি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক থ্রি-হুইলার চালানো নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু এটি পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। কর্তৃপক্ষ সারাদেশে গতিসীমা কীভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান জানান সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো সড়কে গতিসীমা সংবলিত প্রয়োজনীয় সাইনবোর্ড স্থাপন করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব¡ চালক ও সড়ক ব্যবহারকারীসহ সবার।

গাড়ির গতি কমিয়ে শহর এলাকায় দুর্ঘটনা কমানো গেলেও এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির গতি কমিয়ে কখনো দুর্ঘটনা কমানো নিয়ে ভিন্নমত আছে। শহর ও আবাসিক এলাকায় গাড়ির গতি বেঁধে দেওয়া যেতে পারে। মহাসড়কে গাড়ির গতি নির্ধারণে ভিন্ন ভিন্ন লেন তৈরি করা যেতে পারে। সেখানে হাইওয়ে পুলিশ নীরব নজরদারি করবে, যাতে সীমিত গতির গাড়ি দ্রুত গতির লেনে যেতে না পারে।

গতিরোধকে নির্দেশকের বালাই নেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধিকাংশ সড়কে, বিশেষ করে গলিতে। ডিএসসিসিতে গতিরোধকের সংখ্যা প্রায় ১৭৫ বলে জানায় সংস্থার যান্ত্রিক বিভাগ। অন্যদিকে, ডিএনসিসির কাছে গতিরোধকের কোনো হিসাব নেই। গতিরোধক সাধারণত দুই ধরনের। ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন হানিফ ফ্লাইওভারে গাড়ির গতি নির্ধারণ করা থাকলেও অধিকাংশ গাড়িচালক সেটি মানছে না।

রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, ছোট যানবাহন ক্রমশ বৃদ্ধি, বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেন না থাকায় ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা বিভিন্ন ফিডার সড়ক থেকে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে নেমে আসার ফলে এসব ছোট যানবাহন দূরপাল্লার বাস ও প্রাইভেট কারের গতি কমিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া, গুরুত্বপূর্ণ জংশন, রাস্তার মোড় ও বাস স্টপেজগুলোয় যানজট তৈরি করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশ বাড়িয়ে দিচ্ছে।

হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.