প্রতারণার মাধ্যমে ইছামতি ক্লিনিক দখলের অভিযোগ ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে

0

পাবনা প্রতিনিধি : ব্যাংক ঋণ পরিশোধের কথা বলে এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে পাবনার ইছামতি ক্লিনিক দখলের অভিযোগ উঠেছে ভাড়াটিয়া আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে। ওই ভাড়াটিয়ার হুমকি-ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভবন মালিক ভুক্তভোগী পরিবার।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনার দৈনিক সিনসা পত্রিকা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ক্লিনিকের মালিক প্রয়াত আব্দুর রহমানের পরিবার।

তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০২১ সালের ১১ আগস্ট ইছামতি ক্লিনিকের মালিক আব্দুর রহমান মারা যাওয়ার পর উত্তরাধিকার সূত্রে তার স্ত্রী মেরী রহমান দুই আনা এবং একমাত্র ছেলে তুষার রহমান চৌদ্দ আনার মালিক হন। ছেলে তুষার ঢাকায় থাকার সুবাদে মা মেরী রহমানকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করে ক্লিনিক ভাড়া নিতে চেষ্টা করেন আতাউর রহমানের নামের এক ব্যক্তি।

এর মধ্যে ভুল বুঝিয়ে গত বছরের ৯ জুন ক্লিনিকের নামে ৮৫ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ পরিশোধের আশ্বাস এবং নানা প্রতারণার মাধ্যমে একাংশের মালিক বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ মেরী রহমানের সঙ্গে গোটা ক্লিনিক দশ বছরের ভাড়া নিতে চুক্তি করেন ক্লিনিকের কর্মচারী রেশমা রহমান ও তার ভাই আতাউর রহমান। পরে পাবনায় ফিরে বিষয়টি জানতে পেরে ক্লিনিকের চৌদ্দ আনার মালিক তুষার রহমান প্রতিবাদ করলে তার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা জিডি দিয়ে হয়রানি করছেন। পরবর্তীতে তুষারকে নানা মাধ্যমে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দিয়ে যাচ্ছেন ভাড়াটিয়া আতাউর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তুষার রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমানে তার বাবার ব্যাংক ঋণ সুদ আসলে বেড়ে প্রায় ১ কোটি টাকা হয়ে ক্লাসিফাইড হয়ে গেছে এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিলাম করার লাল নোটিশ দিয়েছে। তাছাড়া ক্লিনিকের আরও অংশীদাররা ক্লিনিকের মালামাল বিক্রি করে অর্থ ফেরত চাচ্ছেন। ওই ভবনের চৌদ্দ আনার মালিক তিনি ও তার মা দুই আনার মালিক। তাহলে আতাউর রহমান কিভাবে, কি করে চৌদ্দ আনার মালিকের কাছে না জেনে, দুই আনার মালিকের কাছ থেকে পুরো ভবন ভাড়া নিলেন। আবার ওই ক্লিনিকের মালিক অংশীদার রয়েছেন আরও তিনজন। তাদের কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে কিভাবে ক্লিনিকটা তার নামে করে নেন আতাউর।’

তুষার রহমানের মা মেরী রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে কাছে না থাকার সুযোগে আমাকে ভুল বুঝিয়ে প্রতারণা করে আতাউর রহমান এই কাজ করেছে। সে যে চুক্তির স্ট্যাম্প তৈরী করে আমাকে দেখিয়েছিল, সেটা পরে পাল্টিয়ে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে। আমি লেখা স্ট্যাম্প আমার লোকদের দেখানোর জন্য চাইলে আতাউর দেয়নি। আমার সরলতার সুযোগ নিয়েছে সে। এখন আমাদের পথে বসানোর অপচেষ্টা করছে আতাউর। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই।’

তাদের অভিযোগ, ‘আতাউর রহমান নানা কৌশলে বাড়িটি নিলাম করিয়ে তাদের পথে বসানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আতাউর রহমানের জালিয়াতি ও প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে গণমাধ্যমকর্মীদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তুষার রহমান ও তার মা মেরী রহমান।’

সংবাদ সম্মেলনে ক্লিনিকের মালিক প্রয়াত আব্দুর রহমানের স্ত্রী মেরী রহমান ও ছেলে তুষার রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত আতাউর রহমান বলেন, তিনি বৈধভাবে ভাড়াটিয়া হিসেবে দশ বছরের চুক্তিতে ভবন ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করছেন। ভাড়া নেয়ার এক বছর হঠাৎ করে এমন অভিযোগ অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন। যদি ভাগের কথা বলা হয় তাহলে বলবো, মা তার ছেলের অংশ দখল করে অন্যত্র ভাড়া দিয়েছে। তারা মা-ছেলের ঝামেলা, তারা বুঝে নিক, আমার বোঝার বিষয় না। তবে, যদি তারা বৈধ ও উপযুক্ত দাবি দাওয়া উপস্থাপন করলে সেটি পূরণ করতে প্রস্তুত আছি। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে একটি পক্ষ পরিস্থিতি ঘোলা করার অপচেষ্টা করছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.