জ্যামাইকায় বাংলাদেশী জেনিথ ইসলামের অকাল মৃত্যু কথা ছিলো মা-বাবা বোনের সাথে ফোর্থ জুলাই ডিনার পার্টির
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত মুখ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, কুইন্স আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একে এম শফিকের একমাত্র পুত্র জেনিথ ইসলাম উইনার ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নাল্লিহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন। তার বয়স হয়েছিলো মাত্র ২৪ বছর। গত ১ জুলাই বৃহস্পতিবার কুইন্সের হলিস উডে তার এক বন্ধুর বাসায় সকাল ৮ থেকে ১০টার মধ্যে ঘুমন্ত অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করে বলে জানা যায়। খবর ইউএনএ’র।
পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে হার্ট অ্যাটাকে জেনিথ ইসলাম উইনারের মৃত্যু হয়েছে। সে কুইন্স কলেজের ব্যাচেলরের শিক্ষার্থী ছিলেন। ৩ ভাই বোনের মধ্যে জেনিথ ইসলাম ছিলেন সবার বড়। জেনিথের ছোট দু’জন বোন আছে। তার আকাল মৃত্যুর খবরে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। জেনিথ ইসলাম উইনার তার বাবা-মা ও বোনদের সঙ্গে নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যামাইকা এস্টেটে বাস করতেন। তারা বাংলাদেশের ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার কসবা থানার অধিবাসী।
জেনিথের মৃত্যুর খবর পেয়ে সিটি পুলিশ তার মরদেহ বৃহস্পতিবার নিয়ে যায় এবং প্রাথমিক তদন্ত শেষে পরদিন শুক্রবার দুপুরের পর জেনিথের মরদেহ অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়। এদিকে শুক্রবার বাদ মাগরিব জেনিথ ইসলাম উইনারের নামাজে জানাযা জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে (জেএমসি) অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জেএমসি’র খতিব ও পেশ ইমাম মওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। জানাজার আগে জেএমসি পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. সিদ্দিকুর রহমান ও সেক্রেটারী মনজুর আহমেদ চৌধুরী ছাড়াও জেনিথের পিতা একেএম শফিকুল ইসলাম উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এসময় শফিকুল ইসলাম তার ছেলের পক্ষে ক্ষমা চাইতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং নিজেদের সন্তানকে আরও বেশি সময় দিতে কমিউনিটির অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।
জানাজায় বাংলাদেশী কমিউনিটির সর্বস্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে উপস্থিত মুসল্লিরা জেনিথ ইসলামের মরদেহ একনজর দেখার পর তার মরদেহ ফিউনারেল হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। জেনিথ ইসলামের মরদেহ পরদিন শনিবার সকালে ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে জেনিথ ইসলামের পিতা একেএম শফিকুল ইসলাম রোববার এই প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জানান, গত বুধবার সকালে পিতা-পুত্র কাজের উদ্দেশ্যে এক সাথে বাসা থেকে বেড়িয়ে যাই। জেনিথ লং আইল্যান্ডে একটি কোম্পানীতে পার্ট টাইম কাজ করতো। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় জেনিথ তার বাবাকে জানায় ফোর্থ জুলাই (আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস)-এর দিন রাতে তারা পরিবারের সবাই মিলে (মা-বাবা বোন নিয়ে) এস্টোরিয়ার একটি হোটেলে ডিনার পার্টি করবে। সেই পার্টির বিল দেবে জেনিথ। এরপর বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমার সাথে ফোনে তার (জেনিথ) সর্বশেষ কথা হয়। তখন সে জানায় জেনিথ বাড়ি আসতেছে। কিন্তু সে আর বাড়ী ফিরেনি।
শফিকুল ইসলাম জানান, সকালে জেনিথের এক বন্ধু জানায়, তাকে (জেনিথ) মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন- ‘আমি জাস্টিস চাই। এভাবে যেনো আর কোন অভিভাবককে তার সন্তান-কে হারাতে না হয়।’ তিনি জানান, কিভাবে বা কি কারণে জেনিথের মৃত্যু হলো তার সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। মেডিকেল রিপোর্ট পেতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। শোক প্রকাশ: একেএম শফিকুল ইসলামের পুত্র জেনিথের অকাল মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, জামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার ও সাধারণ সম্পদক সৈয়দ আল আমীন রাসেল সহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে জেনিখের বিদেহী আতœারমাগফেরাত কামনা করেছেন।