জলঢাকার হিজড়া সম্প্রদায়ের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করলেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ

তুরিন আপাকে সারাজীবন হৃদয়ের মাঝে রাখব : পূর্নিমা হিজড়া

0

বিউটি রানী, নিজস্ব প্রতিনিধি : “আমাদের না আছে পরিবার, না আছে স্বজন। সমাজ আমাদের আপন ভাবে না। আমাদের মানুষও মনে করে না। যেখানেই যাই, সবাই আমাদের দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। আমরা তাহলে কিভাবে বেঁচে থাকবো? কেউ আমাদের কাজ দিতে চায় না। আমাদের পেটের ক্ষুধা পেটেই থেকে যায়। এই লকডাউনে বাজার-হাট বন্ধ, আমাদের কালেকশনও বন্ধ। সামনে ঈদ। কেউ আমাদের কথা ভাবে না। আজকে ব্যারিস্টার তুরিন আপা ঢাকা থেকে এসে জলঢাকার সব হিজড়াদের ডেকে চাল, টাকা আর কাপড় উপহার দিলেন। আমাদের চোখে পানি চলে এসেছে। আমরা তুরিন আপাকে সারাজীবন হৃদয়ের মাঝে রাখব।“ কথাগুলো বললেন নীলফামারীর জলঢাকার পূর্নিমা হিজড়া। গতকাল বিকেলে (১৯ জুলাই ২০২১) জলঢাকার বালাগ্রাম ইউনিয়নের আলোর বাজারে নিজ বাসভবনে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ জলঢাকার তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের এক বিশাল সমাগম আয়োজন করেন এবং তাদের ঈদ উপহার দেন।

ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ফাউন্ডেশন ২০০৮ থেকে নীলফামারীর জলঢাকাতে নানামূখী সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং উন্নয়নমূখী কাজ করে আসছে। ফাউন্ডেশনের বহুবিধ কার্যক্রমের মাঝে অন্যতম হলো সমতা ইউনিট। ফাউন্ডেশনের সমতা ইউনিট জলঢাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে থাকে। জলঢাকার হিজড়া, হরিজন এবং নরসুন্দর গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নে বিভিন্ন রকম সহায়তা প্রদান করে থাকে ফাউন্ডেশন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীদের বিনামূল্যে আইনী সহায়তাও প্রদান করা হয় ফাউন্ডেশন থেকে।

গতকালকের তৃতীয় লিঙ্গের সমাগমে নূপূর হিজড়া বলেন, “ব্যারিস্টার তুরিন আমাদের হিজড়া সম্প্রদায়ের আম্মু। আমরা আম্মুর কাছে যেই ভালবাসা আর স্নেহ পাই তা কোনদিন আমাদের নিজেদের পরিবার আমাদের দেয়নি। আম্মু আমাদের নিয়মিত খবর রাখেন। আমাদের বিপদে-আপদে পাশে থাকেন। আমি পুতুল খুব ভালবাসি। এবার ঈদে আম্মু আমাকে অনেক উপহারের সাথে একটা সুন্দর পুতুলও দিয়েছে। আমার মত একজন হিজড়ার সামান্য খুশীর কথাও তিনি মনে রাখেন। আমি তাঁর দীর্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করি।“

হিজড়া সম্প্রদায়ের মাঝে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল আযহার উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফাউন্ডেশনে প্রধান সমন্বয়ক এনামুল হক, সনাতন সম্প্রীতি সংঘের সভাপতি রনজিৎ কুমার রায়, সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক রঞ্জন কুমার রায়, শিক্ষক সংঘের সভাপতি অনিল কুমার রায়, সহসভাপতি মাহমুদুল ইসলাম লিটু, ইকামা সংঘের সভাপতি হাফেজ মাওলানা জিকরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম, মিডিয়া সেলের সভাপতি আবেদ আলী, চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান প্রামাণিক, ফাউন্ডেশনের কর্মী সাইদুল ইসলাম, এম, এ হান্নান টিটু, মোশাররফ হোসেন বগা, বেলাল হোসেন, শাহিন আলম, সুকুমার রায়, ময়না, ধনেশ্বর, পরেশ রায় কালিপদ, বকুল, বারি প্রমুখ।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.