করোনাকালে অর্থনৈতিক বিকাশের নতুন সুযোগ করে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : করোনা পৃথিবীর অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দিলেও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নতুন ব্যবসা সৃষ্টির সুযোগ করে দিয়েছে। ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন খাতে নতুন নতুন স্টার্টআপ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছে অনেক সংস্থা। বাংলাদেশের যে তরুণ মেধাবী শক্তি রয়েছে, তাদেরকে সহায়তা দিলে তারা এই নতুন বাস্তবতায় সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশকে অর্থনীতির নতুন দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে।

গত সোমবার (২ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা সিলিকন ভ্যালিতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র টেক ইনভেস্টমেন্ট সামিটে বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন আয়োজিত ‘রাইজ অফ বেঙ্গল টাইগার: পটেনশিয়ালস অফ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ শীর্ষক রোড শো উপলক্ষে গত সোমবার সিলিকন ভ্যালিতে এই বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য টেক ইনভেস্টমেন্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়। সান্তা ক্লারা সিলিকন ভ্যালির মেয়র টিনা গিলমোর এই ইনভেস্টমেন্ট সামিট উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থানীয় কম্পিউটার প্রযুক্তির ব্যবসায়ীরা এই সামিটে অংশ নেন। অন্যদিকে এই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ যৌথ টেক সামিটে বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতিনিধি দলের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল নজরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. মিজানুর রহমান।

সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে তার উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের একটি তরুণ মেধা শক্তি রয়েছে যারা ডিজিটাল বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। স্টার্টআপ প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করলে কি কি সুবিধা দেয়া হচ্ছে, তার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে হাইটেক পার্ক স্থাপনসহ যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বিনিয়োগ করলে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স রেয়াত সুবিধা সহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাবনা বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে দুটি মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও টিনা জাবিন এবং পেগাসাস টেক ভেঞ্চার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও আনিসুজ্জামান। এছাড়া বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন অ্যাংকরলেজ বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাহাত আহমেদ।

বাংলাদেশের কম্পিউটার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বেসিসের প্রাক্তন সভাপতি ও পেগাসাস টেক ভেঞ্চারের পার্টনার এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও প্রাইভেট ইকুইটি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহসানের পরিচালনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন গ্যারাজ টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা বিল রিকার্দ, টাই-এর ফাউন্ডার বিজয় মেনন, সিলিকন ভ্যালি চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান ডি ম্যালেজিক, মনটা ভিস্তা ভেঞ্চারের পার্টনার ভেঙ্কটেশ শুক্লা, ইনভেন্টাস ক্যাপিটালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কানওয়াল রেখি ও টেকনোহেভেন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান হাবিবুল্লা এন করিম।

সভায় বক্তারা প্রযুক্তি খাতে বিকাশের জন্য বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সরকার এখানে সহায়তা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। সরকার যদি ব্যবসা করতে চায় তাহলে বেসরকারি উদ্যোক্তা সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমানের রহমান বলেন, বর্তমান সরকার বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দিয়েই বিনিয়োগ নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বিদ্যুৎ, গণমাধ্যম, যোগাযোগ ও টেলিকম সেক্টরে বেসরকারি খাতকে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। বিনিয়োগের এই সুবিধা গ্রহণ করে সিলিকন ভ্যালির স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় এই ক্ষেত্র ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আয়োজিত এই বিনিয়োগ সেমিনার গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন এবং লস অ্যাঞ্জেলস শহরে অনুষ্ঠিত হয়।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.