বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকাকে জয়ী করার বিকল্প নেই। তাই নৌকার প্রার্থীদের জয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আওয়ামী লীগের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে সর্বাত্মক প্রচারণা চালাতে হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে, আওয়ামী লীগের পক্ষে জনসমর্থন বৃদ্ধি করতে হবে।
দল থেকে যাকেই প্রার্থী করা হোক না কেন, তার বিরোধিতা না করার বিষয়ে সংশ্নিষ্টদের আবারও সতর্ক করে দেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ না হওয়ার জন্য সংশ্নিষ্টদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী এবং তাদের উস্কানি ও মদদদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চতুর্থ ধাপের ৮৪০টি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান এবং তিনটি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে এ বৈঠক ডাকা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে পাবনার আটঘরিয়া, নরসিংদীর রায়পুরা ও কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার মেয়র পদেও দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৩৫৩টি ইউপিতে দলীয় প্রার্থী ঠিক করা হয়। এ অবস্থায় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার বিকেলে মুলতবি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, কাজী জাফর উল্যাহ, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, রমেশ চন্দ্র সেন, রশিদুল আলম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শুরু হয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিসহ রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলেছে। এ সময় দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত ও রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের চুলচেরা বিশ্নেষণ করে স্বচ্ছ, ত্যাগী ও অবিতর্কিত ইমেজের প্রার্থীদের বেছে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে দলীয় ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার জরিপে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে বৈঠকে অংশ নেওয়া কয়েকজন নেতা জানান।
নেতারা আরও জানান, গত তিন ধাপের ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নিয়ে অনেক জায়গা থেকেই নানা অভিযোগ এসেছে। এ প্রেক্ষাপটে এবার অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কোনো অবস্থায় কোনো অনুপ্রবেশকারী কিংবা নানা অপরাধে জড়িত বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি এবং বিশেষভাবে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার পরিবারের সদস্য যেন দলীয় মনোনয়ন পেয়ে না যান, সে বিষয়েও কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে।
এ ছাড়া তৃণমূল থেকে আসা সুপারিশের ক্ষেত্রে স্থানীয় অনেক নেতার বিরুদ্ধে মনোনয়ন-বাণিজ্য কিংবা তথ্য গোপন করে পছন্দের প্রার্থীদের নাম পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ আসছে। এ কারণে তৃণমূলের সুপারিশের তালিকাগুলো যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান কয়েকজন নেতা।
চতুর্থ ধাপের ৮৪০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন পাবনার আটঘরিয়া, নরসিংদীর রায়পুরা ও কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভায় ভোট হবে।
এসব নির্বাচন সামনে রেখে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গত ১২ থেকে ১৬ নভেম্বর দলীয় মনোনয়নের আবেদন ফরম বিক্রি করে আওয়ামী লীগ। চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে চার হাজার ১৬৯ জন এবং টেকনাফ, রায়পুরা ও আটঘরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ১৮ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।