ইজিবাইক ও ভটভটি আসছে রেজিস্ট্রেশনের আওতায়

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে চলাচলকারী অবৈধ এবং অনিরাপদ ইজিবাইক, নসিমন করিমন ও ভটভটি নামের ছোট যানবাহনগুলো রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) নীতিমালা সংশোধন করে এসব ছোট ছোট যানবাহন নিবন্ধনের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানান বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নুর মোহাম্মদ মজুমদারের সাথে তার দফতরে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা জানান।

তবে সারা দেশে কতসংখ্যক অনিরাপদ ইজিবাইকসহ অন্যান্য ছোট ছোট যানবাহন দাপিয়ে চলাচল করছে সেই পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি।
ইজিবাইকসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন রেজিস্ট্রেশন দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ইজিবাইক তো আমাদের অভিধানেই নেই। ইজিবাইক হচ্ছে অনিরাপদ একটি যানবাহন। তাহলে এই অনিরাপদ বাহন তো দিব্যি ঢাকাসহ সারা দেশে চলাচল করছে। এটা কিভাবে সম্ভব ? এসব বন্ধে আপনার দফতর থেকে কি অভিযান চলমান রয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে ঘন ঘন মিটিং হচ্ছে। আর অভিযান পরিচালনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারা দেশের লোকাল রিপ্রেজেনটেটিভসহ যারা আছেন তারা সবাই কিন্তু এটা চলার পক্ষে। তা ছাড়া এতগুলো লোকের বিকল্প কর্মসংস্থান কে দেবে? কর্মসংস্থান না হয় বাদ দিলাম; কিন্তু আমাদের নিত্যদিনের চলাফেরা কী দিয়ে হবে? একসময় গ্রামগঞ্জে কিন্তু রিকশা ছিল, বলা যায় ইজিবাইক এখন রিকশার অলটারনেটিভ হয়ে গেছে।

নীতিমালা সংশোধন করে ইজিবাইককে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাওয়ার সুযোগ রয়েছে কি না জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, নীতিমালা হচ্ছে। আমাদের নীতিমালায় বলা হয়েছে এই ইজিবাইককে কাস্টমাইজ করে সেফ যানবাহন বানাতে হবে। এসব যানবাহনের চালক থেকে শুরু করে নানা কারণে এক্সিডেন্ট হচ্ছে। এসব ছোট যানবাহনের কারণে হাইওয়েতে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে এবং অনেক লোক মারা যাচ্ছে। আজকে যেমন ব্যাটারিচালিত রিকশা কিন্তু সেফ নয়, এসব গাড়ি একটু টার্নিং নিতে গেলেই উল্টে যাচ্ছে। আনসেফ গাড়িতে তাহলে কিভাবে অনুমোদন দেবো? এর জন্য আমরা এগুলো গাড়িতে অনুমোদন দিচ্ছি না। এখন আমাদের নীতিমালা সংশোধন হচ্ছে। এগুলো বুয়েট থেকে রি-সেফ করে তারপর অনুমোদন দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কবে নাগাদ নীতিমালা চূড়ান্ত হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নীতিমালা প্রায় চূড়ান্ত। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ মিটিং হয়েছে। এ নিয়ে মিনিস্ট্রিয়াল একটি বৈঠকের পরই অনুমোদন হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি। নিরাপদ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বুয়েট যদি এসব যানবাহনকে নতুন করে সেফ করার ফর্মুলা দিয়ে দেয় তাহলে এর মধ্যে যেগুলো সেফ করা যাবে সেগুলো নতুন করে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এলে তখন আমরা শুধু সেগুলোরই রেজিস্ট্রেশন দেবো। শুধু ইজিবাইক নয়; একই সাথে নসিমন-করিমন, ভটভটিসহ অন্যান্য ছোট ছোট যত যানবাহন আছে সবগুলোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।

প্রসঙ্গত, আগে গ্রামগঞ্জে রেজিস্ট্রেশনবিহীন ইজিবাইক দেদার চলাচল করলেও এখন সেই অনিরাপদ বাহন অহরহ ঢাকার রাস্তা ও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর এসব যানবাহনে উঠে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় পড়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এই যানবাহনকে কেন্দ্র করে দেশের প্রতিটি থানায় গড়ে উঠেছে লাইনম্যান নামক শব্দ। যাদের কাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব গাড়ি থেকে মাসিক হারে চাঁদা আদায় করা। পুরান ঢাকার চকবাজার, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ অনেক এলাকায় এখন দিব্যি চলাচল করছে ইজিবাইক। কিছু পুলিশসহ স্থানীয়দের মাসিক চাঁদা দিয়ে এগুলো চলে। তবে শর্ত দেয়া আছে কোনোভাবেই ইজিবাইক নিয়ে হাইওয়ে সড়কে প্রবেশ করা যাবে না। এরপরও যে গাড়ি আটক হচ্ছে তার জন্য প্রতি গাড়ির চালক অথবা মালিককে নগদ ১২০০ টাকা পরিশাধ করে ছাড়িয়ে নিতে হচ্ছে। টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত ওই গাড়িগুলো পাঠানো হয় ডাম্পিং স্টেশনে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.