গুজব ও গণপিটুনি রোধে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : গুজব ও গণপিটুনি রোধে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সই করা পূর্ণাঙ্গ রায়টি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে প্রকাশ করা হয়।
গত বছরের জুলাই মাসে রাজধানীতে তাসলিমা বেগমসহ গণপিটুনিতে বেশ কয়েকজনকে হত্যার প্রেক্ষাপটে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই রায় দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনু রায়ে হাইকোর্ট পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন। এগুলো হলো- গণপিটুনির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার প্রচার কার্যক্রম ইলেকট্রনিক এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেকোনো ধরনের অডিও, ভিডিও, খুদে বার্তা, যা গুজব সৃষ্টি বা গণপিটুনিতে মানুষকে উত্তেজিত করতে পারে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা বন্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
যে দুষ্কৃতকারীরা এ কাজে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। যখনই গণপিটুনির কোনো ঘটনা ঘটবে, কোনো রকম দেরি না করে তখনই থানার ওসি এফআইআর নিতে সবসময় বাধ্য থাকবেন এবং দ্রুত সার্কেলের মনোনীত বিশেষ অফিসারকে অবহিত করবেন। দেশের প্রতিটি থানার তদন্তকারী সার্কেল অফিসার এধরণের মামলাগুলো ব্যাক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং তিন মাসের মধ্যে মামলার তদন্ত সমাপ্ত করবেন। গণপিটুনিতে হত্যার আগে তাসলিমা বেগম রেনু উত্তর বাড্ডা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের হেফাজতে ছিল, সুতরাং ওই প্রধান শিক্ষক তার পদে থাকার উপযুক্ত কিনা তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ প্রদান।
পদ্মা সেতুতে শিশুর কাটা মাথা লাগবে গুজবের কারণে গত বছরের ২০ জুলাই রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানের ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন তাসলিমা।
এ ছাড়া একই মাসে (জুলাই) বেশ কয়েকটি গণপিটুনির ঘটনাও ঘটে। ওই সময় গণপিটুনি রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি করে গত বছরের ২৬ আগস্ট গণপিটুনিতে নিহত ব্যক্তিদের জীবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গণপিটুনির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রিটের চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন।