নির্বাচন কমিশন: সার্চ কমিটির ১০ নাম চূড়ান্ত
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও আরও চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতিকে সুপারিশ করতে ১০টি নাম চূড়ান্ত করেছে সার্চ কমিটি। তবে তারা কারা, সেটি জানানো হয়নি। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সার্চ কমিটি। এরই মধ্যে নামের তালিকা সিলগালা করে পাঠানো হবে।
সার্চ কমিটি গঠনের ১৭ দিনের মাথায় মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে কমিটির বৈঠকে এই নামগুলো চূড়ান্ত হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘১০ জনের নাম তারা (সার্চ কমিটি) ফাইনাল করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে তারা জমা দেবেন।
‘ওনাদের মিটিং শেষ, ওনাদের সিলেকশন শেষ, সব কিছু তারা ফাইনাল করেছেন। তারা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে দিলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন।’ এই ১০ জনের নাম প্রকাশ করা হবে না, সেটি আগেই জানিয়েছিলেন সার্চ কমিটির প্রধান আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি এও জানিয়েছেন, তাদের এখতিয়ারে থাকলেও তাদের কাছে জমা পড়া নামের বাইরে যাননি।
তবে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সার্চ কমিটিতে জমা পড়া যে ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছিল, তার বাইরেও কিছু নাম থাকতে পারে। এর কারণ, সেদিন নাম প্রকাশের পরও বিশিষ্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে সার্চ কমিটির বৈঠকে কিছু নাম জমা পড়েছে। সেগুলো আর প্রকাশ করা হয়নি।
গত শনিবার এসব নাম থেকে ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করে সার্চ কমিটি। দুই দিন পরের বৈঠকে তালিকা ১০ জনে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হলেও তা হয়নি, সেদিন হয় ১৩ জনের তালিকা। সার্চ কমিটির চূড়ান্ত বৈঠক বসে বিকেলে। এতে কমিটির প্রধান ছাড়াও উপস্থিত রয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এই কমিটি নিজেদের মধ্যে বৈঠক ছাড়াও বিশিষ্টজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে। কমিটি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কাছ থেকে নাম চায়। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ আগ্রহী হলে তারও নাম জমা দেয়ার সুযোগ ছিল।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপর থেকে কমিশন এখন পর্যন্ত শূন্য রয়েছে।নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে এবার আইন করেছে সরকার। এর আলোকে গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি। এর আগের দুটি কমিশনও সার্চ কমিটি গঠন করেই করা হয়েছিল, যদিও তখন সুনির্দিষ্ট কোনো আইন ছিল না।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি। এই কমিটি নিজেদের মধ্যে বৈঠক ছাড়াও বিশিষ্টজন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ করে। কমিটি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের কাছ থেকে নাম চায়। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ আগ্রহী হলে তারও নাম জমা দেয়ার সুযোগ ছিল। গত ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নাম পাঠানোর সুযোগ ছিল। পরে দুই দিন বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনায় উঠে আসা পরামর্শের ভিত্তিতে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবার নাম পাঠানোর সুযোগ দেয়া হয়।
তবে যে কারণে এই বাড়তি সময় দেয়া হয়, সেটি সফল হয়নি। বিএনপি বর্ধিত সময়েও কোনো নাম প্রস্তাব করেনি। এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটি গঠন করে করা হয়েছিল। এই কমিটি রাষ্ট্রপতিকে নাম সুপারিশ করার পর ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও ২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। দুই বারই বিএনপি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়, সার্চ কমিটিতে নামের তালিকাও জমা দেয়। তবে এবার সার্চ কমিটির বিরোধিতা করছে দলটি।
জমা পড়া ৩২২টি নাম গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হয়। পরের দিন আট বিশিষ্ট সাংবাদিকের সঙ্গে আরেকটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেও কিছু নাম প্রস্তাব করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এরপর তালিকা সংক্ষিপ্ত করতে ১৯ ফেব্রুয়ারি বসে আরেকটি বৈঠক, সেখানে তিন শতাধিক মানুষের নাম ছেটে ফেলা হয়। ২০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করার দিন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) সামসুল আরেফিন জানান, আরও দু-একটি বৈঠক করে ১০ জনের চূড়ান্ত তালিকা করে রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া হবে।
এর আগেও দুটি নির্বাচন কমিশন সার্চ কমিটি গঠন করে করা হয়েছিল। এই কমিটি রাষ্ট্রপতিকে নাম সুপারিশ করার পর ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ ও ২০১৭ সালে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। দুই বারই বিএনপি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়, সার্চ কমিটিতে নামের তালিকাও জমা দেয়। তবে এবার সার্চ কমিটির বিরোধিতা করছে দলটি।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে আপিল বিভাগ অসাংবিধানিক ঘোষণার পর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনে আওয়ামী লীগ। তবে এর প্রতিবাদে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিহতের ডাক দিয়ে আন্দোলনে নামে বিএনপি।
ব্যাপক প্রাণহানি ও সহিংস সেই ভোটের পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট অংশ নেয় দলীয় সরকারের অধীনেই। তবে সেই নির্বাচনে আগের রাতেই ভোট হয়ে গেছে- এমন একটি অভিযোগ তোলে তারা। এ কারণে দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে যেতে চাইছে না তারা। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা একটি মীমাংসিত ইস্যু। শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন করতে এবার নির্বাচন কমিশন আইনও করা হয়েছে। আর এই আইনের আলোকেই গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি।