আজ পাবনার ভাঙ্গুড়া সদর ও মন্ডতোষ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন

0

পাবনা প্রতিনিধি : আজ ২০ অক্টোবর পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ভাঙ্গুড়া সদর ও মন্ডতোষ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দুই ইউনিয়নে প্রায় ২১ হাজার ভোটার রাত পোহালেই পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন দুটিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী সহ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন প্রার্থী। এরমধ্যে সদর ইউনিয়নের ৫ জন এবং মন্ডতোষ ইউনিয়নে ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। সদর ইউনিয়নে নৌকা ও ধানের শীষের সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে ধারণা ভোটারদের। কিন্তু মন্ডতোষ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর সাথে দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় সচেতন মানুষ।

ভাঙ্গুড়া সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী (বর্তমান চেয়ারম্যান) বেলাল হোসেন খান ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিদ্যুৎ এর চেয়ে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) গোলাম ফারুক টুকুন। এই ইউনিয়নটিতে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ ভোট ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামে। এছাড়া ৩০ শতাংশ ভোটার রয়েছে চরভাঙ্গুড়া গ্রামে। ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা গোলাম ফারুক টুকুন এবং চরভাঙ্গুড়া গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হোসেন খান। গোলাম ফারুক গ্রাম থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমানকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করিয়ে গ্রামের প্রায় ৪ হাজার ভোটের একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন। কিন্তু বেলাল হোসেন খান চরভাঙ্গুড়া গ্রামে সাধারণ ভোটারদের তেমন সাড়া পাচ্ছেন না। এরপর গ্রামে রয়েছে আরো একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। অপরদিকে ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের প্রত্যেক গ্রামে বিএনপি সমর্থিত ভোটারের সংখ্যা বেশি। তাই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিদ্যুৎ তার নিজ এলাকা নৌবাড়ীয়া সহ অন্যান্য এলাকায় দলীয় ভোট প্রার্থনা করছেন। তবে উপজেলা বিএনপির একটি গ্রুপ নিষ্ক্রিয় থাকায় নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী প্রচারণায় হিমশিম খাচ্ছেন। তাই সার্বিক বিবেচনায় আওয়ামী লীগ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম ফারুক টুকুন প্রচার প্রচারণায় এবং ভোটারদের ঐক্য ধরে রাখতে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। এ অবস্থায় নৌকা মার্কার প্রার্থী বেলাল হোসেন খান অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

একই অবস্থা প্রায় সাত হাজার ভোটারের সবচেয়ে ক্ষুদ্র মন্ডতোষ ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী নুর ইসলাম মিন্টুর কারণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আফসার আলী মাস্টার বিএনপির প্রার্থী আবদুর রশীদের কাছে পরাজিত হন। এবারও নুর ইসলাম মিন্টু ইউনিয়ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগের ভোট দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ায় নৌকার প্রার্থী আফসার আলী বেকায়দায় পড়েছেন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে নুর ইসলাম মিন্টুর পক্ষে নির্বাচন করায় দল থেকে বহিষ্কার করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। অপরদিকে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ বিএনপি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে এবছর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তাই নতুন মুখ আকরাম হোসেন মাস্টার বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তবে দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের সাথে কোনো পরিচিতি না থাকায় তেমন সুবিধাজনক অবস্থানে নেই তিনি। এক্ষেত্রে এই ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফসার আলীর সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী নুর ইসলাম মিন্টু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রশিদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা ভোটারদের।

নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের ও তার সমর্থকদের বহিষ্কার করা হয়েছে দল থেকে। এরপরেও বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যেহেতু বহিস্কৃত কর্মীরা আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন। সেহেতু নৌকার কিছু ভোট তারা কেটে নিবেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ক্ষতি হবে। তবে নৌকার জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে তিনি জানান।

এদিকে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে ঐক্যের অভাবের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জেড আই হিরোক বলেন, সিনিয়র নেতাদের মধ্যে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় আন্তরিকতার ঘাটতি থাকলেও মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রার্থীকে জয়ের ব্যাপারে প্রচার প্রচারণার ঘাটতি নেই। তাই ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বিএনপি। আর মন্ডতোষ ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী নতুন। তবে সেখানেও প্রত্যাশিত ফলাফল হবে বলে আশা করি।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রোকছানা নাসরিন বলেন, ভোট গ্রহণের জন্য সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। ইতোমধ্যে বিজিবি, পুলিশ, সাদা পোষাকের পুলিশ ও আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.