সাইবার নিরাপত্তা আইনে সন্তোষ জাতিসংঘ

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করায় সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে শুনেছি, তা সত্য হলে আমি খুশি।’ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দপ্তরে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিচার সম্পর্কে বলেন, পুরনো মামলার বিচার হতে পারে নতুন আইনে । বিএনপি বলেছে, ‘নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন আরও বেশি বিপজ্জনক হবে। এ বিষয়ে সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘উনারা (বিএনপি নেতা) জিনিসটা না পড়ে, যেহেতু উনারা পড়েন নাই অবশ্যই উনারা বোঝেন নাই বলেই এই কমেন্টটা করেছেন।

জাতিসংঘের কর্মকর্তা গোয়েন লুইস সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। আইনটিকে ভালোভাবে যাচাই করার মতো কারিগরি জ্ঞানসম্পর্কিত ব্যক্তি না আমি। কিন্তু এই পরিবর্তনেই আমি খুব খুশি। আইনে কী পরিবর্তন করা হয়েছে, তা আমাদের ভালো করে দেখতে হবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন আর নেই, সেখানে নতুন আইন প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।’এ সময় আইনমন্ত্রীর সঙ্গে মানবাধিকার ইস্যু নিয়েও তার কথা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি টেকিনক্যাল পারসন না, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি দেখিনি। তবে তারা যা করেছে, তা সত্যি হলে প্রশংসনীয়।’

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘উনি বলেছেন যে নতুন আইন করা হয়েছে, এটা এখনো সম্পূর্ণভাবে দেখেননি। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছেন না। আইনে যে পরিবর্তন এসেছে সেটা উনি শুনেছেন। যেটা শুনেছেন সে পরিবর্তন যদি হয়ে থাকে তা হলে সেটা ভালো ও খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, বিএনপি নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন না পড়েই মন্তব্য করেছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিচার সম্পর্কে বলেন, পুরনো মামলার বিচার হতে পারে নতুন আইনে। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আগে যে মামলাগুলো হয়েছে সেগুলো নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করব। যেসব অপরাধ পুরনো আইনে করা হয়েছে, পুরনো আইনে যে শাস্তি সেই শাস্তি অপরাধীকে আদালত দিতে পারেন। কিন্তু সেখানে আমরা চিন্তা-ভাবনা করব। এই আইনে যেহেতু শাস্তির পরিমাণ অনেকাংশেই কমানো হয়েছে এবং সেই শাস্তি কমানোটাই সরকার ও আইন সভার উদ্দেশ্য। সেটাই যাতে বাস্তবায়িত হয় সে চেষ্টা আমরা করব।

বিতর্কিত ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন করে সরকার ‘সাইবার নিারপত্তা আইন, ২০২৩’ করছে। এ জন্য সোমবার সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনের বিভিন্ন ধারায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিএনপি বলেছে, ‘নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন আরও বেশি বিপজ্জনক হবে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উনারা (বিএনপি নেতা) জিনিসটা না পড়ে, যেহেতু উনারা পড়েন নাই অবশ্যই উনারা বোঝেন নাই বলেই এই কমেন্টটা করেছেন। উনারাও দেখেন, আপনারও দেখেন, তারপর যদি আলাপ করতে চান তখন করব। দেখুন আমি ঢালাওভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

আইনজীবী শাহদীন মালিকসহ কয়েকজন আইনজীবী বলেছেন, নতুন আইনে মানুষের হয়রানি কমবে না, পুলিশকে অবারিত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘উনারা আমাদের কোনো পদক্ষেপই ভালো মনে করেন না কিন্তু দেশের ভালো হয় আমাদের পদক্ষেপে।’ ‘উনার সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় আমি বলেছি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট যখন সাইবার সিকিউরিট অ্যাক্টের একটি দফার মধ্যে আছে এটাকে রহিত করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মধ্যে যেসব টেকনিক্যাল ধারাগুলো ছিল, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মধ্যেও সেই টেকনিক্যাল ধারাগুলো আছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য আমি সব সময় বলে আসছি এটা পরিবর্তন হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট সংশোধন হয়নি, আবার কেউ যদি বলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট রহিত করা হয়েছে। সেটাও সম্পূর্ণভাবে ঠিক হবে না। পরিবর্তন হয়েছে এবং পরিবর্তনগুলো এতই বেশি ছিল যে তখন যদি আমরা ডিজিটাল সিকিউরিট অ্যাক্ট নামটা রাখতাম তা হলে নামটা হতো ডিজিটাল সিকিউরিটি সংশোধিত আইন। যখন ডিজিটাল আইন পড়তে হতো তখন সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা সংশোধনী আইনটাও সঙ্গে রাখতে হতো। এটা কনফিউজিং হতো। সে জন্য এটাকে সম্পূর্ণ পাল্টিয়ে নতুন এবং সাইবার নামটা রাখা হয়েছে এটা ব্যাপ্তি বাড়ানোর জন্য, সে জন্য এটার নাম সাইবার নিরাপত্তা আইন দেওয়া হয়েছে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বিচার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে মামলাগুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করব। কারণ আইনের অবস্থান হচ্ছে পুরনো আইনে সেসব অপরাধ হয়েছে সেই অপরাধের শাস্তিও সেই পুরনো আইনেই আদালত দিতে পারে। কিন্তু সেখানে আমরা চিন্তা-ভাবনা করব যে, এই আইনে যেহেতু শাস্তির পরিমাণ অনেকাংশেই কমানো হয়েছে, সেই কমানোটাই সরকার এবং আইনসভার উদ্দেশ্য, তাই সেই কমানোটা যাতে বাস্তবায়িত হয় সেই চেষ্টা আমরা করব।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.