সমাবেশের বার্তা : ‘শেখ হাসিনাকে আবারো চাই’
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের চলমান উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ’ ছাত্রসমাবেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘ওয়ানস অ্যাগেইন শেখ হাসিনা’ (আবারো শেখ হাসিনা) বার্তা পৌঁছেছে। সারাদেশ থেকে আসা ছাত্রলীগের এই ছাত্রসমাবেশে নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ তথ্য। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর মধ্যে বেশ উদ্দীপনা ও আগ্রহ দেখা গেছে। সকাল হতে না হতেই সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা সমাবেশস্থলের দিকে আসতে শুরু করেন। বেলা ১১টার পরে গেট খুলে দিলে সবাই ভেতরে প্রবেশ করতে থাকেন। দুপুরে সেখানে জুমার নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। সমাবেশ শুরুর আগে কিছুক্ষণ বৃষ্টিও হয়। তবে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নেতাকর্মী প্রধানমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।
ছাত্রলীগের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ এই সমাবেশকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই সরাসরি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। সারাদেশ থেকে আসা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী সকাল থেকেই উদ্দীপ্ত মেজাজে মিছিল-শোডাউন আর স্লোগানে স্লোগানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা মুখরিত করে রাখে। গত বৃহস্পতিবার রাতেই তারা বাস, ট্রেন ও মাইক্রোবাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। সকালে তারা ঢাকায় পৌঁছেন। তাদের বেশির ভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন কলেজের হলে সাময়িক বিশ্রাম নেন। কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনদের বাসায় ওঠেন। কেউবা বাসেই বিশ্রাম নিয়ে সমাবেশে অংশ নেন। সমাবেশ শেষ করে তাদের অধিকাংশই বাস, ট্রেন ও মাইক্রোবাসে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যান।
সমাবেশে আসা নেতাকর্মীর কেউ কেউ জানান, আগামী নির্বাচনে ছাত্রলীগ ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে দায়িত্ব ও করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশনায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার দিকনির্দেশনা রয়েছে। যশোর জেলা ছাত্রলীগের কর্মী মোস্তফিজুর রহমান বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখা ও তার বক্তব্য শুনতে সকাল সকাল ঢাকায় এসে পৌঁছেছি। গেট খুলে দিলে সমাবেশস্থলে গিয়ে অপেক্ষা করি। দুপুরে হালকা বৃষ্টির জন্য কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে হয়। তবে এই বৃষ্টি আমাদের সামনে কোনো বাধা তৈরি করতে পারেনি। আমরা মুজিব আদর্শের সৈনিক হিসেবে ছাত্রলীগের এই মহাসমাবেশ সফল করতে এখানে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগ নেতাদের দিকনির্দেশনা পেয়ে আমরা আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করব। এই দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব চলমান থাকা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিলয় জানান, আসন্ন ১২তম জাতীয় নির্বাচনে নৌকার বিজয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর পাশাপাশি দেশের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সমাবেশে বক্তারা বলেছেন। আমরা এই সমাবেশ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা পেয়েছি যে, দেশের উন্নয়নের ধারাকে সমুন্নত রাখতে পুনরায় শেখ হাসিনার সরকার দরকার। নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ আপেল বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে। বিএনপি ও জামায়াত তাদের দোসরদের নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। কারণ একটাই- শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন করেছেন তা তাদের সহ্য হচ্ছে না। নির্বাচনের আগে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। তাই এই সময়ে ছাত্রলীগের এই ঐতিহাসিক শোডাউন ও সমাবেশ দরকার ছিল। এই সমাবেশে আমরা আমাদের দিক-নির্দেশনা পেয়েছি। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে যে কোনো ষড়যন্ত্র আমরা শক্ত হাতে মোকাবিলা করব। দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে পুনরায় রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে আসব- এটাই আমাদের শপথ।
এদিকে সমাবেশে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম, বঙ্গমাতার সাধনা, শেখ হাসিনার সাহসকে নিজের জীবন গঠনে ও সমৃদ্ধ স্বদেশ গড়তে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন মুষ্টিবদ্ধ হাতে শপথ বাক্য পাঠ করান।
সাদ্দামের ঘোষণার সঙ্গে নেতাকর্মী সূর মিলিয়ে উচ্চারণ করেন- আমরা বাঙালির মহান স্বাধীনতা ও পূর্বপুরুষের পবিত্র রক্তে ভেজা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নব রূপায়নের রূপকার বাঙালির নির্ভরতার শেষ ঠিকানা দেশরতœ শেখ হাসিনার নামে দৃঢ়চিত্তে শপথ করছি যে, তারুণ্যের স্বপ্নের স্বদেশ পিতার কাক্সিক্ষত সোনার বাংলা এবং তার কন্যার পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপসহীন, অক্লান্ত আমৃত্যু সদা সর্বদা সচেষ্ট থাকব। এদিকে গতকাল রাত পর্যন্ত কোনোরকম অপ্রত্যাশিত ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে এই সমাবেশ। এর আগে ছাত্র সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে নেতাকর্মীর প্রতি ১০টি জরুরি ও অবশ্য পালনীয় সাংগঠনিক নির্দেশনা দেয় ছাত্রলীগ।