মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত করা যাবে না

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : গাজীপুরে রেললাইন কাটা এবং ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত করতে পারবে না। যারা এসব করছে তাদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। জনগণকে বলব এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য।

বুধবার গণভবনে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে হত্যা করে সরকার উৎখাত করবে? মানুষ হত্যা করে আন্দোলন? আমি জানি না এই আন্দোলন করে কি পাবে তারা? বিএনপি যে এই জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। প্রতিদিন তারা অবরোধ আর হরতাল ডেকে যাচ্ছে। হরতাল অবরোধ মানে কি কয়েকখান বাস পোড়ানো, গাড়ি পোড়ানো, যাত্রীসহ বাস পোড়ানো? 

শেখ হাসিনা বলেন, চাল যাচ্ছে, চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। ধান যাচ্ছে ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখে মারা। এই ঘটনা এর আগেও তারা করেছে ২০১৩ সালে। আমি জানি না তাদের কোনো মতে কেউ থামাতে পারবেন কি না। এই মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত তো করতে পারবে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, মানুষকে পুড়িয়ে মারার মধ্য দিয়ে কি আন্দোলন হয়? সেটা আমার জানা নেই। আমরাও আন্দোলন করেছি জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, আর মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি হয় সেটা চিন্তা করে। কিন্তু আমি এ রকম আন্দোলন দেখি নাই।’

তিনি বলেন, এটা দেখেছি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে, তারা আমাদের এভাবে সব জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। আর এখন দেখি ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের হামলা, হাসপাতালেও রেহাই পায় না। হাসপাতালের ওপর পর্যন্ত তারা বোম্বিং করে। ঠিক আমাদের দেশে যেন সেই চিত্রটাই দেখতে পাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আন্দোলনের নামে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা করা। পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে সেখানে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেওয়া। পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা। এ রকম বীভৎস ঘটনা বাংলাদেশে ঘটানো হচ্ছে। এটা নাকি আন্দোলন? তা হলে কার স্বার্থে আন্দোলন?

গাজীপুরে রেললাইন কাটা এবং ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটু চিন্তা করে দেখুন, কি রকম ধ্বংসাত্মক কাজ, এটা আন্দোলন না। রেললাইন ফেলে দিয়ে, প্রায় ৮টা বগি পড়ে যায়, একজন মানুষ মারা যায়, কয়েকজন আহত। তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। তার মানে হচ্ছে রেলের বগি ফেলে দিয়ে মানুষকে হত্যা করা।

বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা মানুষ মারার জন্য রেললাইন উপড়ে ফেলে বা রেললাইন কেটে দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার পরিকল্পনা করে বা জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারেÑ এদের মধ্যে মনুষ্যত্ব বোধ বলে কিচ্ছু নেই। এটা জনগণকেই প্রতিহত করতে হবে। সেটাই আমার আহ্বান সারাদেশের মানুষের প্রতি।

তিনি বলেন, যারা রেললাইন কেটে দিয়ে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়; আর পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ সাংবাদিক থেকে সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে এদের ক্ষমা নাই। এদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে। জনগণকে বলব এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য।

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা আওয়ামী লীগের নেই মন্তব্য করে দলটির প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের কাছে যাবে, জনগণ যাকে ভোট দেবে, সে ক্ষমতায় আসবে। ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার তো কোনো চেষ্টা আমাদের নাই। দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি দেশের উন্নতি করছি। এবং দেশ যে উন্নতি হয়েছে এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আজকে বাংলাদেশটা বদলে গেছে। 

ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের তো হাওয়া ভবন নেই। কারও পাওনা দিয়ে ব্যবসা নিতে হয় না। ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারেন। অন্তত এটুকু সুযোগ আমরা করে দিয়েছি।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রেসিডেন্ট মাহবুব আলমের নেতৃত্বে এফবিসিআইএর নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এফবিসিআইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আমিন হেলালী, তিন ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, যশোদা জীবন দেবনাথসহ নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.