এশিয়ার সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রা তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে টাকা

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বিশ্বের প্রভাবশালী বাণিজ্যিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ প্রকাশিত এশিয়ার সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রার তালিকায় প্রথম হংকং ডলার, দ্বিতীয় সিঙ্গাপুরের ডলার ও তৃতীয় ভারতের রুপি।

এশিয়ার সবচেয়ে স্থিতিশীল ১৩টি মুদ্রার তালিকা প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ। এই তালিকায় অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী অনেক দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের টাকা চতুর্থ স্থান দখল করেছে। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে হংকংয়ের মুদ্রা ডলার। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুরের ডলার এবং ভারতের রুপি।

মুদ্রাকে বৈশ্বিক বাণিজ্যের জীবনীশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একটি দেশের মুদ্রার শক্তি বিচার করে সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাকে পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ মুদ্রার স্থিতিশীলতা বা শক্তি একটি দেশের অর্থনৈতিক শক্তিকেও প্রতিফলিত করে। মুদ্রার শক্তি বাড়লে একটি দেশের অর্থনীতিতে আস্থা বাড়ে। এতে ওই দেশটি বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব বাড়াতেও সক্ষম হয়।

বিশ্বের প্রভাবশালী বাণিজ্যিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রতিবেদনে বলেছে, মূলত অস্থির সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের কারণে স্থিতিশীল রয়েছে এশিয়ার মুদ্রাগুলো। সংকটময় মুহূর্তে ডলার সরবরাহ করেছে তারা। পাশাপাশি রপ্তানি ও আমদানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশি মুদ্রার (টাকা) এই সফলতা অর্জনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপ। বৈশ্বিক করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মধ্যে পড়েছে। এ অবস্থায় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব ও সুদূরপ্রসারী উদ্যোগের ফলে দেশের অর্থনীতির সব সূচকই স্বাভাবিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে শুরু করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্কতামূলক বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়। বিলাসি পণ্যের ওপর আমদানি নিষেধাজ্ঞা, রপ্তানি বাড়ানোর জন্য প্রণোদনামূলক মজবুত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠন, রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা এর মধ্যে অন্যতম। গভর্নরের এমন সব পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়।

ব্লুমবার্গের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এশীয় অঞ্চলের সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রার তালিকায় চতুর্থ স্থানে আছে বাংলাদেশের টাকা। পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে ফিলিপাইনের পেসো। আর দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা ওনের অবস্থান ষষ্ঠ।

তালিকার সপ্তম স্থানে আছে তাইওয়ানের ডলার। অষ্টম অবস্থানে রয়েছে চীনের মুদ্রা ইউয়ান বা রেনমেনবি। নবম জায়গা দখল করেছে ভিয়েতনামের ডং। আর দশম অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার রুপিয়াহর।

আলোচ্য অর্থবছরে এশিয়ার সর্বোচ্চ স্থির মুদ্রার তালিকায় শেষের তিনটি স্থানে যথাক্রমে রয়েছে থাইল্যান্ডের বাথ (১১তম), মালয়েশিয়ার রিঙ্গিত (১২তম) ও জাপানের ইয়েন (১৩তম)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বছরে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক দেশের মুদ্রার বড় পতন ঘটেছে। তবে তালিকায় স্থান পাওয়া এশিয়ার মুদ্রাগুলোর মান স্থির রয়েছে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রতিটি ইউএস ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৯ দশমিক ৬০ বাংলাদেশি টাকায়। এই ভিত্তিতে আলোচিত সময়ে কারেন্সিটির অবনমন ঘটেছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। সব মিলিয়ে অবমূল্যায়নের দিক দিয়ে অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রা চীনা ইউয়ানের চেয়ে ৪ ধাপ এগিয়ে রয়েছে টাকা। আর জাপানি ইয়েনের তুলনায় এগিয়ে আছে ৯ ধাপ।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.