কমনওয়েলথ ইয়ং পারসন অব দ্য ইয়ার ফয়সাল
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : চলতি বছরে বাংলাদেশের ফয়সাল ইসলাম ‘কমনওয়েলথ ইয়ং পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া তিনি এশিয়া অঞ্চল থেকে ‘কমনওয়েলথ ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। বুধবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথ এ পুরস্কার ঘোষণা করে। তরুণ উদ্ভাবক, অধিকারকর্মী এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে সেরাদের এ পুরস্কার দেয় কমনওয়েলথ। এবারের পুরস্কারের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের স্থিতিশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বিভিন্ন কর্মসূচিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ফয়সাল ইসলাম গ্রামাঞ্চলে নামমাত্র মূল্যে তিন চাকার অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে এ আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন। অসাধারণ অর্জনে অভিভূত ফয়সাল ইসলাম সমকালকে বলেন, সেফহুইল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে নামমাত্র মূল্যে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। তিনি জানান, তার লক্ষ্য চিকিৎসাসেবাকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করা। এই সেবা তিনি আরও বিস্তৃত করতে চান।
চলতি বছরে এ পুরস্কারের জন্য কমনওয়েলথভুক্ত ৫৪টি দেশের মধ্যে ৪৩টি থেকে ১ হাজার আবেদন পড়ে। যাচাই-বাছাইয়ে পাঁচটি অঞ্চল থেকে ২০ জনকে চূড়ান্ত করা হয়। তাদের মধ্য থেকে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য একজন আঞ্চলিক বিজয়ী নির্বাচিত হন। এই পাঁচজনের মধ্যে একজনকে এ বছরের সেরা সম্মাননা ‘কমনওয়েলথ ইয়ং পারসন অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করা হয়। বিজয়ীদের নাম ঘোষণায় দেখা যায়, এশিয়া অঞ্চল থেকে আঞ্চলিক বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশে গ্রামাঞ্চলে নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান সেফহুইলের প্রতিষ্ঠাতা ফয়সাল ইসলাম। একই সঙ্গে চলতি বছরে সেরাদের সেরা ‘কমনওয়েলথ ইয়ং পারসন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবেও তার নাম ঘোষণা করা হয়। এশিয়া অঞ্চল থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- ভারতের এলিনা আলম, পাকিস্তানের সৈয়দ ওমর আমির এবং মালয়েশিয়ার মোগেশ সাবাবাথির।
ক্যারিবীয় অঞ্চল থেকে এ বছর আঞ্চলিক বিজয়ী হয়েছেন গ্রানাডার শ্যাডেল চার্লস। এ অঞ্চল থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- বার্বাডোসের তাহির বুলবুলিয়া, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর ডাউসের চার্লস এবং গায়ানার জুবিলান্তে কাটিং।
ইউরোপ ও কানাডা অঞ্চল থেকে অটিস্টিক শিশুদের প্রতি স্কুল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তনে অবদান রাখার জন্য এ বছর আঞ্চলিক বিজয়ী হয়েছেন যুক্তরাজ্যের সিয়েনা ক্যাস্টেলন। এ অঞ্চল থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- সাইপ্রাসের দিয়াগো আরমান্দো অ্যাপ্রিকিও, যুক্তরাজ্যের ব্র্যাডলি হেসলপ এবং ইলেনর ম্যাকলনটোশ।
আফ্রিকা অঞ্চল থেকে আঞ্চলিক বিজয়ী হয়েছেন সিয়েরা লিওনের জেরেমিথ থোরনকা। এ অঞ্চল থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- আব্দুল রেহমান আলুই, নাইজেরিয়ার ওয়াদি বেন এবং জাম্বিয়ার নাওয়া জোই সিলসহেবো।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য অধিকার ও সুযোগের পক্ষে প্রচার চালানো কর্মসূচির জন্য আঞ্চলিক বিজয়ী হয়েছেন সামেয়ার মাসেলিনা ইয়ুটা। এ অঞ্চল থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- টোঙার ইলায়সেন লোলোহিয়া মানু, ফিজির শানাল সিভান এবং অস্ট্রেলিয়ার টিম লো সুর্ডো। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পুরস্কারপ্রাপ্ত ২০ জনের প্রত্যেকেই পাবেন ট্রফি, সনদপত্র ও এক হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড। আঞ্চলিক বিজয়ীরা পাবেন ৩ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড। আর সেরাদের সেরা ‘কমনওয়েলথ ইয়ং পারসন অব দ্য ইয়ার’ পাবেন ৫ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড।
ফয়সাল ইসলাম জানান, সেফহুইলের যাত্রা শুরু ২০১৮ সালের নভেম্বরে হাল্টপ্রাইজে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে। এটি স্বল্প খরচে অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে থাকে। এই পুরস্কার জয়ে তিনি আনন্দিত এবং অনুপ্রাণিত। বর্তমানে সেফহুইল ফেনীতে চলমান। ফেনীর সঙ্গে অন্য জেলায়ও সেবা দিতে চায় তারা। সমগ্র বাংলাদেশে স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।