গ্রামে লকডাউন যেমন চলছে !
নজরুল শাহ্ (টাংগাইল) : ১লা জুলাই থেকে সরকার ঘোষিত ৭দিনের কঠোর লকডাউন কেউ কেউ যেমন মেনে চলছে, ঠিক তেমনী অমান্যকারীর সংখ্যাটাও কম নয়। বিশেষঃত গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা তো দুরে থাক লকাডাউনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবাধে চলছে চা-স্টল,হোটেল এবং নিয়ম বহির্ভূত অন্যান্য দোকানপাট।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের যে কয়টি জেলাকে করোনা ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের মধ্যে টাংগাইলের অবস্থান দ্বিতীয়। আর সে দিক থেকে জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের সমন্বিত সিদ্ধান্তে টাংগাইল সদর, কালিহাতী, মির্জাপুর, এলেঙ্গা পৌর এলাকায় ১৯জুন হতে প্রথম দফার লকডাউন শেষে ১জুলাই থেকে সারাদেশের মতো টাংগাইলের সবক’টি উপজেলায়ও লকডাউন চলমান।
কিন্তুু পৌর এলাকাগুলোতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিশেষ তৎপরতায় লকডাউন সফল করা গেলেও পৌর এলাকার বাইরে বিভিন্ন হাট-বাজারে নির্বিঘ্নে চলছে গন-জমায়েত। আজ শুক্রবার ২জুলাই লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে টাংগাইলের ঘাটাইল ও সখিপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার (তেতুলতলা, সুন্দইল,মোথাজুরি,খানমোড়) ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে চায়ের দোকানগুলোতে টিভি দেখে গল্প-আড্ডায় ব্যস্ত অনেকেই। ছোট ছোট হোটেল গুলোতেও ভীড় রয়েছে নিয়মিত। যাদের অনেকেই সর্দি- জ্বরে আক্রান্ত। কথা হলো কয়েক জনের সাথে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বললো, জ্বর আসছে পাঁচ দিন হলো। জিমাক্স ট্যাবলেট খাচ্ছি। কাজ তো হচ্ছে না। তাই চা খাই। গরম চা খাইলে নাকি করোনা হয় না।
এদিকে স্থানীয় কয়েকটি ফার্মেসীতে গিয়ে দেখা গেলো,রোগীদের প্রচন্ড ভীড়। অধিকাংশ জনই প্রচন্ড সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। উপজেলার ইন্দারজানী বাজারে সিকদার মেডিকেল হলের সত্ত্বাধিকারী ও সাংবাদিক ইমরান সিকদার বলেন, জ্বর ও সর্দি নিয়ে অনেক মানুষ ঔষধ নিতে আসতেছে।কিন্তু তাদের চাহিদা মতো প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ দিতে পারতেছিনা। প্যারাসিটামলের খুব সংকট।
পোড়াবাসা খানমোড় বাজারে সামিও মেডিকেল হলের মালিক মোঃ আমিনুল ইসলাম(এল এম এ এফ পি)বলেন, গ্রামের অধিকাংশ মানুষই প্রচন্ড সর্দি জ্বরে আক্রান্ত।তবে, অনেকেই না বুঝে কোন প্রকার পরীক্ষা -নিরীক্ষা ছাড়াই উচ্চ মাত্রার এন্টিবায়োটিক খাচ্ছে। যা মানবদেহের জন্য বিরাট ক্ষতির কারন।
এ বিষয়ে জনাব মোঃ মাকছুদুল আলম, অফিসার ইনচার্জ (ঘাটাইল থানা) বলেন, সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী কঠোর লকডাউন হওয়ায় ঘাটাইল থানা এলাকায় করোনা ভাইরাস সংক্রমনরোধে ঘাটাইল থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়, করণীয় নিয়ে জনগনকে সচেতন থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে জনগন যাতে অযথা বিভিন্ন দোকানে আড্ডা না দেয় এবং নিজ নিজ বাড়ী-ঘরে অবস্থান করার আহবান জানিয়ে চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন,আমাদের ভ্রাম্যমান অভিযান অব্যাহত আছে।