কেশবপুরে শত বছরের সরকারী রাস্তা গিলে খাচ্ছে মৎস্যঘের পুকুর

0

যশোর প্রতিনিধি : যশোর কেশবপুরে সরকারী রাস্তা গিলে খাচ্ছে ব্যক্তিমালিকানা মৎস্যঘের ও পুকুর। সড়কের পাশে কোন রকম যেনতেনভাবে মাটি দিয়ে পাড় বেঁধে শুরু করে মৎস্যঘের। মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করার ফলে অল্পদিনে পাড় ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক হয় ঘেরের পাড়। আর পরের কয়েক বছরের মধ্যে সড়ক ভেঙ্গে মৎস্যঘেরের মধ্যে হারিয়ে যেতে থাকে।

এতে করে পথচারীদের ভোগান্তি শুরু হয়। জানা যায়, একটি মাছ চাষীর পুকুরের কবলে পড়ে ৩ গ্রামের মানুষের চলাচলের শত বছরের একটি সরকারী রাস্তা প্রায় বিলীন হতে চলেছে।

সরকারী এই রাস্তাটি পুনঃউদ্ধারে ভুক্তভোগী গ্রামবাশী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৭নং পাঁজিয়া ইউনিয়নের নতুনহাট হতে গড়ভাঙ্গা বাজার পাকা রাস্তা সংলগ্ন রাজনগর বাঁকাবর্শী গ্রামের উত্তর প্রান্তে রামপদ দেবনাথের বাড়ী হতে পাঁচবাকা বর্শী রথখোলা পর্যন্ত শত বছরের যে ইটের সলিং এর রাস্তাটি আছে তার শুরুতেই পাশে একটি বড় চাষী পুকুর বিদ্যামান রয়েছে। ঐ পুকুরের বর্তমান মালিক মাদারডাঙ্গা গ্রামের মৃত কাদের বয়াতির ছেলে মুনসুর ও শহিদুল বয়াতি।

পুকুর সংলগ্ন সরকারী রাস্তাটির সিংহভাগ অংশ ধবসে গিয়ে পুকুরে পরিনত হয়েছে। যে কারনে জনগুরুত্ব পূর্ন ঐ সরকারী রাস্তাটি সাধারন জনগনের যাতায়াতের সম্পূর্ন অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। বারবার বলা সত্বেও পুকুর মালিকরা রাস্তাটি সংষ্কার না করায় বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে।

পুকুর চাষীদের কবল থেকে সরকারী রাস্তা উদ্ধার ও জনসাধারনের জন্য যাতায়াতের উপযোগী করতে গত ২৪ আগষ্ট-২১ রাজনগর বাঁকাবর্শী গ্রামবাসীর পক্ষে ওমর ফারুক, শ্রী রামপ্রসাদ, আরিফ হোসেন, লোকমান, অরুন দে, বরুন দেবনাথ ও সুনীল দেবনাথ ১২ জন ভুক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

যাতায়াতের অনুপযোগী সরকারী রাস্তাটির দৃশ্য ধারনের জন্য সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে রাজনগর বাকা বর্শী (উত্তরপাড়া) গ্রামের পল্লী চিকিৎসক গবিন্দ দেবনাথসহ অনেক ভুক্তভোগী সংখ্যালঘুরা বলেন, ঠাকুর দাদার আমল থেকে এই রাস্তা দিয়ে শতাধিক পরিবাররা চলাচল করে আসছে।

বর্তমানে রাস্তাটি ধসে পুকুরে পরিনত হওয়ায় চলাচলে একেবারে ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। শুধু তিনি নন, সুশিল দর্জি, পাঁচবাঁকা বর্শী গ্রামের ভ্যানচালক ওলিয়ারের মত অনেকেই প্রতিদিন ওইখান দিয়ে চলার সময় পুকুরে পড়ে আহত হচ্ছেন। রাজনগর বাঁকাবর্শী গ্রামের বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সম্ভব্য মেম্বর প্রার্থী জিয়াউর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন, জনগুরুত্বপূর্ন এই রাস্তা দিয়ে বাঁকা বর্শী, পাঁচবাকা বর্শী ও মাদারডাঙ্গা গ্রামসহ অনেক গ্রামের মানুষ শত বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছে। চাষী পুকুরের কবলে পড়ে সরকারী রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান, ইজিবাইক চলাচল তো দূরের কথা মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত এখান দিয়ে পায়ে হেটে যেতে সাহস পাচ্ছে না।

পুকুর মালিক এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা রাস্তার বিষয়ে ভয়ে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছেনা। রাস্তার বিষয়ে কথা হলে পুকুরের যৌথ মালিক মনসুর ও শহিদুল সাংবাদিকদের জানান, রাস্তাটি সবার জন্য প্রয়োজন। যেহেতু এখন বর্ষা মৌসুম, শুকনো মৌসুমে এলে এটি সংষ্কার করে দিব।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.