লাল শালুর হালুয়া রুটিতে রুজি রোজগার কামরুলের
সাইফুর নিশাদ মনোহরদী, ( নরসিংদী ) প্রতিনিধি : সূর্যোদয়ের ভোরে লাল শালুতে ঢাকা হালুয়া রুটির ফেরী নিয়ে পথে নামে এখনো শৈশবে থাকা কামরুল। চার চাকার গাড়ী ঠেলে পথে পথে ঘুরে বেড়িয়ে হালুয়া রুটি ফেরী তার। এভাবেই পৈত্রিক সংসারে উপার্জন সহযোগীর ভূমিকায় নেমেছে কচিমুখো এক কামরুল।
মনোহরদী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় বাস।মানে মহাজনের ভাড়া বাসায় ঠাঁই। সূর্যোদয়ের রক্তিম ভোরে লাল শালু কাপড়ে ঢাকা হালুয়া রুটির ফেরী নিয়ে বেরিয়ে পড়ে পথে। লোহার চার চাকার উপরে একটি টেবিল মতো। তাতে হালুয়া রুটির পসরা সাজিয়ে ঠ্যালা গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে গ্রামের পর গ্রামে ফেরী করে বেড়ায় কামরুল। মঙ্গলবার এ রকম ফেরীর পথে মনোহরদীর হাররদীয়া গ্রামের রাস্তায় দেখা হয় এ হালুয়া রুটির ফেরীওয়ালার। সেখানেই আলাপ তার সাথে। বেশ বড়ো সাইজের ময়দার রুটি।কামরুলের ভাষায়, ছিড়া রুটি।
অ্যায়সা সাইজ একেকটা রুটির। ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে বেচে বলে এ রুটির নাম,ছেঁড়া রুটি। সাথে হালুয়া ফ্রী। খুব সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে পথে নামে। ঘন্টা তিনেক ফেরী করে বেড়ায় নানান রাস্তায়। আস্ত ১৮টা রুটি ৯শ’ টাকায় বিক্রি উঠে। এ থেকে ৩শ’ টাকা পারিশ্রমিক তার, মহাজনের ৬শ’। বাড়ী ব্রাম্মনবাড়ীয়ার নাসির নগরে। প্রায় শৈশব না পেরোনো বয়স এখনো। পিতার অনটনের সংসার। তাই এ বয়সেই পথে নামা তার। কামরুল জানায়, স্কুলে যাওয়া হয়নি জীবনে কোনদিন তার। আগে ঢাকার এক হোটেলে বয়ের কাজ করতো সে। মাস দেড়েক হয় ছেঁড়া রুটি হালুয়ার ফেরীতে নামা। হালুয়া রুটির এ গাড়ী ঠেলে অনেক পথ ভাঙতে হয় প্রতিদিন।
কচি মুখ রোদে পুড়ে লাল হয়। ঘর্মাক্ত ক্লান্ত দেহে শ্রান্ত শরীরে বেশ বেলা করে ডেড়ায় ফেরা নিত্য রুটিন তার। অন্যের মুখে সুস্বাদু ছেঁড়া রুটি হালুয়া তুলে দেয় সে।কিন্তু নিজের ভাগ্যে জুটে মোটা চালের মোটা ভাত। পেত্রিক সংসারে উপার্জন সহযোগী যে সে! তাই এ না করে উপায় কি কচিমুখো কৈশোর ছুঁই ছুঁই এই বালক ছেলেটির ?