নলকূপ খননে ৬৯ বছর পার আজিজের

0

সাইফুর নিশাদ , নরসিংদী প্রতিনিধি : ৮০ বছরের বয়োঃবৃদ্ধ আজিজ। ৬৯বছর ধরে নলকূপ খননের পেশায়। খুবই পরিশ্রমী এ খনন শিল্পী। শুধুই নলকূপ খনন কাজে সীমাবদ্ধ নয় তার শ্রম। জমি ক্ষেতির কাজেও শ্রম তার প্রচুর। বার্ধক্য যেন পরাজিত পরাভুত অশীতিপর এ যুবাটির কাছে।

আঃ আজিজের জবানিতে, কেলাস সিক্সে পড়ুনের সময় একবার বসন্ত অইছিল। হেই যে ইস্কুল বাদা অইছে আর গেছিনা।হেই সুৃময়তে কলের কাম শুরু। অর্থাৎ কিনা আ: আজিজ যখন ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়েন তখন একবার বসন্ত রোগে আক্রান্ত হন তিনি। তাতে স্কুল কামাই হয় বেশ কদিন,
তারপর থেকে আর স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। পানীয় জলের অগভীর নলকূপ খননের পেশায় লেগে আছেন সেই থেকে।প্রথমে বড়োদের সহকারী,পরে নিজে মিস্ত্রী। নলকূপ খনন দলবদ্ধ কাজ।৪ থেকে ৫ জনের দল একেকটা। আঃ আজিজ এ রকম দলে প্রায় ৭০ বছর ধরে আছেন এ কাজে। এখনো আছেন এভাবেই। আগে করতেন অন্ন সংস্থানের প্রয়োজনে।

এখন রোজগেরে ছেলেরা।নলকূপ খননের কাজ করে উপার্জন করার দরকার পড়ে না আর আগের মতো।ছেলেপুলেরাও করতে দিতে চায়না। তিন ছেলে এক মেয়ের জনক আঃ আজিজ। দু’ছেলেই কর্মজীবি। সব ছেড়ে ছুড়ে অকর্মা বসে খেতে নারাজ তিনি। নলকূপের কাজ না থাকলে জমি খেতির কাজে লেগে থাকেন তিনি। নিজের জমিতে শ্রম দিতে যত্ন নিতে ভালো লাগে তার। এক কথায় হাত গুটিয়ে অকর্মা বসে থাকতে রাজী নন অশীতিপর এ যুবাটি। আঃ আজিজের ভাষায়, আইজ্জাও এক কানি ক্ষেতের কুলা কুবাইছি আমি (আজকেও এক বিঘে জমির ধার কুপিয়েছেন তিনি)। আঃ আজিজ জানান, কাজ কর্মে থাকলে শরীর মন দুটোই ভালো থাকে।

এছাড়া নিজের হাতে রোজগার করে খাওয়ার মজাই আলাদা। আঃ আজিজ আরো জানান, তার প্রথম জীবনের কাজের সঙ্গীদের কেউই বেঁচে নেই এখন। পরে কাজে নামা সঙ্গীদেরও অনেকেই এ পেশায় নেই এখন। ভদ্রলোক বনে গেছেন তারা এখন সবাই। তিনি জানান, যতোদিন শরীরে সামর্থ্যে কুলোয় ততোদিন এ কাজে লেগে থাকার পণ তার। নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার সরৈকান্দী গ্রামের বাসিন্দা এ অশীতিপর আঃ আজিজ।জীবনে কখনো কারো ঘাড়ের বোঝা হয়ে সংসারে বেঁচে থাকতে নারাজ তিনি।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.