কুমারখালীতে মাছের সাথে শত্রুতা, নৈশ প্রহরীকে বেঁধে মাছ চুরি
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের উত্তরপার সাঁওতা গ্রামে লিজকৃত সরকারি জলাশয় কালিগঙ্গা নদী থেকে নৈশ প্রহরীদের বেঁধে রেখে মাছ চুরির অভিযোগ উঠেছে।
গত বুধবার ১৬ জানুয়ারি দিবাগত রাতে এই দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মাছ বেড় জাল দিয়ে চুরি করে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বুধবার রাত আনুমানিক ৩.০০ ঘটিকার দিকে ঐ এলাকার শরিফুল ইসলাম কালু ও রাশিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন লোক এসে নদীতে থাকা নৈশ প্রহরীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বেঁধে রেখে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
নদীতে থাকা নৈশ প্রহরী আহেদ আলী সেখ বলেন, অস্ত্রের মুখে আমাকে বেঁধে রেখে আমাদের জাল দিয়ে বেশ কয়েকজন মানুষ মাছ ধরে নিয়ে যায়। আমি প্রাণ ভয়ে সরগোল করতে পারিনি।
আরেক নৈশ প্রহরী বাদশা জানান, রাতের আঁধারে কালু ও রাশিদুল লোকজন সাথে নিয়ে আগ্নেয় অস্ত্র দেখিয়ে আমাদের বেঁধে রেখে মাছ ধরা নৌকা ভাঙ্চুর করে মাছ মেরে নিয়ে চলে যায়।
এঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জয়নাল সেখ বলেন, কালু ও রাশিদুলের নেতৃত্বে দূর্বৃত্তরা প্রথমে রাতে পুলিশ পরিচয়ে আমার বাড়িতে ডাকাতি করে।পরে তারা নদীর নৈশ প্রহরীদের বেঁধে রেখে বেড় জাল দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
বাঁধবাজার কালিগঙ্গা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শহিদ মিঞা বলেন, আমাদের সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম কালু সমিতির সদস্যদের সঞ্চিত প্রায় ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। পরে তার নেতৃত্বেই গতকাল রাতে মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। এঘটনায় আমরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।
চাঁপড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বর হেলাল সেখ মাছ চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যারাই এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকনা কেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ।
নাম প্রকাশের অনিশ্চুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, শরিফুল ইসলাম কালু একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও একাধিক মামলা রয়েছে তার নামে। এলাকায় অনেক আগে থেকেই সে বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িত।
কালিগঙ্গা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির একাধিক সদস্য জানান, কালুকে বিশ্বাস করে তার হাতে সমিতির দায়িত্ব তুলে দিয়ে ছিলাম কিন্তু সে আমাদের টাকা আত্মসাৎ করেছে আবার চুরি করে আমাদের মাছ গুলোও মেরে নিলো।
অভিযোগের ভিত্তিতে শরিফুল ইসলাম কালুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। কালু বলেন, নদীর মালিকইতো আমি, তাহলে আমি কেন চুরি করে মাছ ধরতে যাবো।
এবিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, যে বা যারাই এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকনা কেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।