চলাচলের অনুপযোগী গৌরীপুর -শ্যামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটি
মো হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর : প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা,সংস্কারের নেই উদ্যোগ। তবু নীরব কর্তৃপক্ষ। এমন অবস্থা ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার গৌরীপুর-শ্যামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কটির। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সড়কটি ব্যবহারকারীরা। গৌরীপুর থেকে নেত্রকোনা জেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে এই সড়ক দিয়ে। সড়কটি এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিস থেকে জানানো হয়েছে, সড়কটি টেকসইভাবে নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বর্ষার আগে জরুরি সংস্কারের জন্যও চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আট কিলোমিটার সড়কের ছয় কিলোমিটারই খানাখন্দে ভরা। এর মধ্যে মইলাকান্দা গ্রামের মড়লবাড়ি থেকে কাউরাট চকবাড়ি বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে গিয়ে এমটিই দেখা গেছে।
সড়কটির এমন বেহালের দুটি কারণ। প্রথমত, সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সড়ক দিয়ে পাথর, বালু ও কয়লাবোঝাই শত শত ভারী ট্রাক চলাচল করে। ১০ টন ওজন বহন ক্ষমতার সড়কে চলে ২০-৩০ টনের মালবোঝাই ট্রাক। দ্বিতীয়ত, এর দুই পাশে রয়েছে শতাধিক পুকুর। সড়কটিকে পাড় হিসেবে ব্যবহারের কারণে বর্ষায় এটি ভেঙে যায়। পুকুরের পাড় হিসেবে সড়ক ব্যবহারে সরকারি আইনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না পুকুরের মালিকেরা বলেছেন স্থাননীয়রা।
সড়কের দুই পাশে পুকুরের কারণে সড়কটির এ দশা। সড়কটি এমনভাবে ভেঙেছে যে, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। প্রায়ই উল্টে যায় হালকা যানবাহন। এমন কথা বলেছেন কাউরাট গ্রামের আহাম্মদউল্লাহ। স্থানীয় ব্যবসায়ী এমদাদুল হক বলেন, ভারী ট্রাক চলাচল বন্ধ না করলে সড়ক সংস্কার করে লাভ নেই। তা ছাড়া পুকুরের পানিতে সড়ক সব সময় ভেজা থাকে, আর বর্ষায় ভেঙে যায়। এ বিষয়গুলো সমাধান না করলে সড়ক টিকবে না।
সাংস্কৃতিক কর্মী ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ বলেন, ‘সড়কটি দিয়ে ভারী ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবিতে বছরের পর বছর আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি কানেই তুলছে না। মানুষের এই দুর্ভোগে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি কেউ কোনো খবর নেন না।
গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. ওয়াহেদুল হক বলেন, ‘ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ না হলে সড়ক মেরামত করে লাভ নেই। সড়কের পাশে পুকুরের জন্যও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সড়কটি টেকসইভাবে নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তবে বর্ষার আগে জরুরি সংস্কারের জন্য চাহিদা দেওয়া হয়েছে।’ গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, সড়কে যানবাহন চলাচলের বিষয়টি বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণাধীন। তারা চাইলে এই সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে পারে। নির্দেশনা পেলে পুলিশ এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান মারুফ বলেন, ‘ভারী যানবাহন চলাচল ও দুই পাশের পুকুরের জন্যই সড়কটি এমন বেহাল। পুকুরের মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে মৎস্য কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরাও ব্যবস্থা নিতে পারেন।’