অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ ধামাচাপা দিতে তৎপর প্রধান শিক্ষক
মেহেদী হাসান আকন্দ: নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার কুমারপাড়া হিলোচিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়ার বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন হিলোচিয়া গ্রামের সাধারণ জনগণ ও অভিভাবক। জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগের পর থেকে অভিযোগ ধামাচাঁপা দিতে বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া। অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া নানা অজুহাতে অধিকাংশ সময় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। বিদ্যালয়ে আসলেও ২ টার পর পরই তিনি বিদ্যালয় থেকে চলে যান।
মহামারী করোনার কারণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখি করতে স্থানীয় গ্রামবাসী বা অভিভাবকদের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ বা কোনো ধরনের অভিভাবক সমাবেশ, মা সমাবেশ করেননি। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট কাউন্সিল হলেও এই বিদ্যালয়ে কোনো স্টুডেন্ট কাউন্সিল করেননি। দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় প্রধান শিক্ষক তার ইচ্ছা অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। ম্যানেজিং কমিটি গঠনের কথা বললে তিনি উদাসীনতা দেখান। এমনকি শিক্ষার্থী অভিভাবক বিদ্যালয়ে গেলে অথবা ফোন করলে তিনি বিরক্তবোধ করেন। বিভিন্ন জাতীয় দিবসেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, মহামারী করোনার পর মার্চের ২ তারিখ থেকে বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়। আগস্টের ৭ তারিখ পর্যন্ত মোট ৯৪ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া ২৪ দিন নৈমিত্তিক ছুটি ভোগ করেন। ১৪ দিন চিকিৎসা ছুটি ভোগ করেন। বন্যার সময় বিদ্যালয়ে পানি না উঠলেও তিনি শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখেন। বন্যাকালীন সময়ে অন্যান্য শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসলেও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেননি। অথচ তিনি হাজিরা খাতায় ঠিকই স্বাক্ষর করেন। অভিযোগকারীগণ জানান, অভিযোগ প্রত্যাহারে তাদেরকে নানামুখী চাঁপ প্রদান করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মামুন মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা। তদন্তে সত্যিটা বের হয়ে আসবে।
বারহাট্টা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আবু রায়হান বলেন, অভিযোগটি আমাদের কাছে পৌছেছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট উপজেলার কর্মকর্তাদের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলবো।