ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় বৃষ্টির সাথে সাথে বাড়ছে দমকা হাওয়া, বেড়েছে নদনদীর পানি, বেঁড়বাধ ভাঙন আতংকে উপকুলবাসী
রিজাউল করিম,স্টাফ রিপোর্টার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়া যতই বেলা গড়াচ্ছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদনদীর পানির ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, উপকুলীয় এলাকার মানুষকে ইতিমধ্যে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে। আইলা, সিডর ও আম্পানের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবারো ঘূর্নিঝড়ের খবরে আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এলাকার মানুষ। ষাটের দশকের জরাজীর্ণ বেঁড়িবাঁধে আবারও প্লাবনের আশংকায় উদ্বেগ আর উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির প্রায় ৫লাখ মানুষ।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, নি¤œ চাপের প্রভাবে সাতক্ষীরায় বৃষ্টিপাতের সাথে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বেড়েছে। এছাড়া নদ-নদীর পানির ইতিমদ্যে ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সোমবার মধ্যরাত বরাবর উপকুলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত হানতে পারে। সকল উপকুলীয় এলাকায় ৭ নম্বর দূরবর্তি হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গপোসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে নিরপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে এবং চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির দূর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে বলে জানান, জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের আওতাধীন ৭৮০ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ রয়েছে। এর মধ্য ১০ টি পয়েন্টে ৮০ কিলোমিটার বাঁধ ঝুকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছে। বেড়িবাধ ভাঙ্গন এড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ২০ হাজার জিও ব্যাগ মজুদ রাখা হয়েছে। যা ইতিমধ্যে ঝুকিপূর্ণ বেঁড়িবাধ এলাকায় পাঠাতে বলা হয়েছে। এছাড়া উপকুলীয় এলাকায় ২৫৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে আশাশুনিতে ১০৮ টি, শ্যামনগরে ১০৩ টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ৪৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করাা হয়েছে। ইতিমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে মানুষ উঠতে শুরু করেছে। এছাড়া দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ঔষধ, সুপেয় পানিসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।