মাছ চাষে স্বাবলম্বী বাবুল বছরে বিক্রী কোটি টাকা!
মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর : মাছের জন্য বিখ্যাত ময়মনসিংহে নীরব বিপ্লব ঘটছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে উঠেছে বেসরকারি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন অসংখ্য মৎস্য খামার। মৎস্য চাষ করে অনেকেই ঘুরিয়েছেন ভাগ্যের চাকা, হয়েছেন কোটিপতি।এমনই একজন বাবুল মিয়া। তিনি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের রামগোপালপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মৃত আবুল হাশেম মিয়ার ছেলে। মাছচাষ করে জীবনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন তিনি।
কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্থানীয় চাষীদের পরামর্শে জীবনের মোড় ঘুরিয়েছেন তিনি।সংসারের অভাব অনটনের কারণে বেশিদুর পড়া লেখা করতে পারেননি তিনি। বিয়ের পর বাবার অল্প জমি চাষাবাদ করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এমতাস্থায় তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কয়েক মাস চাকরি করেন। এতে সংসার চালাতে না পেরে চলে আসেন বাড়িতে। বাড়িতে এসে স্থানীয় মৎস্য চাষীদের পরামর্শে বাবার কাছ থেকে এবং নিজের উপার্জিত ৩০ হাজার টাকা পুজি নিয়ে ২০১৪ সালে নিজের ২৫ শতাংশ জমির পুকুরে ১ কেজি গুলশা মাছের রেনু দিয়ে চাষ শুরু করেন। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
এ বিষয়ে বাবুল মিয়া বলেন, ৩০ হাজার টাকার পুজি নিয়ে একটা পুকুরে ২০১৪ সালে মাছ চাষ শুরু করি। এখন আমার ১৫ টি পুকুর আছে। এই ১৫ টি পুকুর থেকে বছরে প্রায় এক কোটি টাকার মাছ বিক্রি করতে পারি।এখন আমার মাছের খামারে ১০ জন কর্মচারী কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় মৎস্য অফিস থেকে কোন সহায়তা পাইনা। যদি মাছ চাষ বিষয়ে কোন পরামর্শ পেতাম। তাহলে হয়তো আরও বেশি মাছ উৎপাদন করতে পারতাম।
করোনাকালীন সময়ে মাছের চাহিদা কম থাকায় মাছের দাম কমে যায়। তবে এখনো মাছের দাম তেমন বাড়েনি,এদিকে বছরে কয়েকবার মাছের খাদ্যের দাম বেড়েছে। এমতাবস্থায় সরকার যদি মাছের খাদ্যের দাম কমানোর দিকে নজর দিত তাহলে হয়তো, আমরা আরও বেশি লাভবান হতে পারতাম।
এবিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জান্নাত-এহুর বলেন, বাবুল মিয়া একজন সফল মৎস চাষী। তিনি মাছ চাষ করেই সফল হয়েছেন।সে নিজে অনেককেই মৎস্য চাষে আগ্রহী করে তুলেছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উপজেলায় ৮ হাজারের ও বেশি চাষি রয়েছেন। তবে, মাঠ পর্যায়ে কর্মী খুব কম। তাই সবাইকে পরামর্শ দেয়া সম্ভব হয়না। তবে যে কোন সময় যে কোন মৎস্য চাষী কোন পরামর্শের জন্য আসলেই তাকে পরামর্শ দেব।