কক্সবাজারে ‘আমরাও পারি-আমরাই সেরা’ শ্লোগানে দৈনিক যায়যায়দিনের দুইদিনব্যাপী প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি : দুর থেকে বহুদুর। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া। দেশের প্রতিটি জেলা আর উপজেলা থেকে জড়ো হয়েছিলেন দেশের জনপ্রিয় সর্বাধিক পাঠকপ্রিয় জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিনের কর্মরত প্রতিনিধিরা। আকাশ, সড়ক, নৌ সব পথ দিয়ে সব বাঁধা ডিঙিয়ে প্রতিনিধিরা ছুঁটে আসেন বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র বেষ্টিত নগরী কক্সবাজারে।
সমুদ্র নগরীর সমুদ্র ঘেঁষা জমকালো পাঁচতারকা হোটেল সী ওয়ার্ল্ডে গত ৩ ও ৪ ডিসেম্বর দুইদিনব্যাপী আয়োজন করা হয় নানা আয়োজনের বর্ণিল মিলনমেলা। দৈনিক যায়যায়দিন কর্তৃপক্ষ এই মিলনমেলা জমকালো আর আনন্দময় করে তুলতে দুইদিন আগে থেকেই নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করে।
‘আমরাও পারি-আমরাই সেরা’ শ্লোগান নিয়ে জমে ছিল এই মিলনমেলা। কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়সহ সকল স্টাফ ও প্রতিনিধিদের জন্য থাকা, খাওয়া, বিনোদন ও ঘুরে বেড়ানোর সকল ব্যবস্থার আয়োজন করে।
যায়যায়দিন পরিবারের এই মিলনমেলার প্রথম দিনেই দেশের বিভিন্নপ্রান্ত থেকে প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দিতে আসা প্রতিনিধিদের স্বাগত জানিয়ে হোটেলের রুমের চাবি, নাস্তা ও খাবারের টোকেন এবং যায়যায়দিনের টিশার্টসহ উপহারের ব্যাগ তুলে দেন সার্কুলেশন ম্যানেজার বিল্লাল হোসেন ও সিনিয়র হিসাবরক্ষক মোঃ রইচ উদ্দিন।
প্রথমদিনে আগত প্রতিনিধিরা সকালের নাস্তা সম্পন্ন করে হোটেলের রুমে গিয়ে ক্লান্তি ঝেড়ে দুপুরের লাঞ্চের পর শুরু হয় প্রতিনিধি সম্মেলনের মূল আয়োজন। হোটেল সী ওয়ার্ল্ড এর সপ্তম তলার সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করা হয় প্রতিনিধি সম্মেলনের মূল পর্ব।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার চট্টগ্রামের লোহাগাড়া প্রতিনিধি আব্দুল জব্বার। শুরুতেই স্মরণ করা হয় যায়যায়দিনের বন্ধু ও তাদের পরিবারের সদস্যদের। যারা চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তাদের স্মরণে আত্মার মাগফেরাত কামণায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য শুরু করেন পর্যায়ক্রমে। এ সময় তাদের বক্তব্যে যায়যায়দিনের কাছ থেকে প্রত্যাশা, প্রাপ্তি, সমস্যা ও সম্ভাবনার নানা কথা উঠে আসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রতিনিধিরা তাদের পরিচয় দিয়ে একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
আলোচনান্তে স্বাগত বক্তব্য দেন দৈনিক যায়যায়দিনের কান্ট্রি ডেক্স ইনচার্জ মায়মুনা আক্তার লীনা।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের শ্রী বৃদ্ধি করেন দৈনিক যায়যায়দিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হালিফ রাঈস চৌধুরী। তার বক্তব্যে প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে জানালেন, সবাইকে নিয়ে সামনের দিকে আরও শক্তিশালী হয়েই এগিয়ে যাবে যায়যায়দিন। দেশসেরা যায়যায়দিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে চলমান অবস্থান ধরে রেখে ভবিষ্যতের পথনির্দেশনা তৈরি করবে। সেরাদের সেরা হয়ে নিজের অবস্থান অটুট রাখবে। এজন্য সম্ভাব্য সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি দায়িত্ব পালনে সবাইকে আরও সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে ধাপেধাপে বক্তব্য দেন, পত্রিকাটির চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, সিনিয়র রিপোর্টার সাখাওয়াত হোসেন ও আহমেদ তোফায়েল, চিফ রিপোর্টার (ভারপ্রাপ্ত) হাসান মোল্লা, সিনিয়র সহ-সম্পাদক আবু জাফর মো. সোহেল, সহ-সম্পাদক শামীম আহমেদ, ব্যবস্থাপক মো. নূরুল হক, উপ-ব্যবস্থাপক (বিজ্ঞাপন) ইব্রাহিম খলিল স্বপন, সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসেন, সার্কুলেশন ম্যানেজার বিল্লাল হোসেন ও সিনিয়র হিসাব রক্ষক মো. রইছ উদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় বিভিন্ন জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিদের নানা জিজ্ঞাসার জবাব দেন যায়যায়দিনের বার্তা সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী। জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বরিশাল ব্যুরো চিফ আরিফুর রহমান, খুলনা ব্যুরো চিফ আতিয়ার রহমান শান্ত, স্টাফ রিপোর্টার (পিরোজপুর) জহিরুল হক টিটু, স্টাফ রিপোর্টার (মাদারীপুর) মঞ্জুর হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার (নেত্রকোনা) চন্দন চক্রবর্তী, স্টাফ রিপোর্টার (খাগড়াছড়ি) রিপন সরকার, গাজীপুর প্রতিনিধি আবুল হোসেন, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি তারেক মাহমুদ, বাগেরহাট প্রতিনিধি ইসরাত জাহান, শেরপুর প্রতিনিধি তপু সরকার হারুন, কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি ফখরুল ইসলাম খসরু, কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি নিজামুল আলম মুরাদ, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি সোহেল আক্তার মিঠু, টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি রেজাউল কবির রাজীব প্রমুখ।
প্রতিনিধি সম্মেলনে পাবনা থেকে যোগ দেন জেলা প্রতিনিধি আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, সুজানগর প্রতিনিধি এম মনিরুজ্জামান , বেড়া প্রতিনিধি উজ্জল হোসাইন ও চাটমোহর প্রতিনিধি আতাউর রহমান স্বপন। অনুষ্ঠানে জেলা পর্যায়ে সেরা প্রতিনিধি হিসেবে সম্মিলিত দ্বিতীয় পুরস্কার পান পাবনা জেলা প্রতিনিধি আরিফ আাহমেদ সিদ্দিকী। এছাড়াও অন্য প্রতিনিধিদেরও উপহার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠান চলাকালে পত্রিকার সেরা প্রতিনিধিদের পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের এই জমজমাট আয়োজন শেষ হয়। এ সময় বিভাগীয়, সারাদেশের জেলা প্রতিনিধি ও উপজেলা প্রতিনিধিদের সেরাদের সেরা প্রতিনিধিদের পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়াও প্রত্যেক প্রতিনিধির জন্য ছিল বিশেষ উপহার।
দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যবস্থাপক নুরুল হকের নেতৃত্বে হোটেল সী ওয়ার্ল্ড এর সামনে থেকে বের করা হয় আনন্দ র্যালি। র্যালিটি কক্সবাজার লাবনী বীচে গিয়ে শেষ করা হয়। সেখানে তৈরী হয় মিলনমেলার। সেখানে জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় প্রতিনিধিদের গ্রুপ ভিত্তিক ছবি তোলা হয়। তৈরী করা হয় আনন্দ প্রাচীর। বিকেলে হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা, র্যাফেল ড্রয়ের পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংগীত পরিবেশন করেন কক্সবাজারের উদয়মান সংগীত শিল্পীরা।