বিদায়-২০২০ : করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে ৩ শতাধিক বাংলাদেশীর মৃত্যু প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে বিদায়ী বছর স্বজন হারানোর বছর

0

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): দিন, মাস পেরিয়ে ইতিহাস থেকে বিদায় নিলো আরো একটি বছর। বিদায়-২০২০, স্বাগতম ২০২১। মহামারী করোনার ভায়াল ছোবলে বিদায়ী বছর শোকের বছর হিসেইে চিহ্নিত থাকবে বিশ্বাসীর মাছে। আমেরিকানদের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে বিদায়ী বছর স্বজন হারানোর বছর। এই বছরে গত এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে করোনায় ৩ শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশীর মৃত্যুর হয়েছে। কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, সামাজিক সংগঠন, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, বিভিন্ন মিডিয়া আর বার্তা সাংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব আমেরিকা (ইউএনএ)-এর অনুসন্ধানে এই তথ্য জানা গেছে। এদিকে করোনার প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতে দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতে আবার নতুন করে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে গোটা কমিউনিটি। নিউইয়র্ক সহ বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশীদের ঘরে ঘরে এখন হানা দিয়ে ফিরছে এই মরণ ব্যাধি। তবে করোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশী বাংলাদেশী অধ্যুষিত রাজ্য নিউইয়র্ক, মিশিগান আর ক্যালিফোর্নিয়ায়। এই তিন রাজ্যের অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। খবর ইউএনএ’র।

মহামারি করেনায় অনেক পরিবার হারিয়েছেন একাধিক সদস্য। কেউ হারিয়েছেন মা-বাবা, কেউ বা ছেলে-মেয় বা স্ত্রী। আবার কেউ হারিয়েছেন বাড়ীর একমাত্র উপার্জনকারী। করোনায় পিতা-পুত্র আর দুই সহদরের মৃত্যুর ঘটনাও রয়েছে। মৃতের তালিকায় আছেন মুক্তিযোদ্ধা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সমাজসেবী সহ সকল শ্রেনী পেশার মানুষ। বলা যায় বিদায়ী ২০২০ সাল ছিলো শোকের বছর। ছিলো ঘরে ঘরে স্বজন হারানোর বেদনা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, কমিউনিটির অনেকেই করোনায় মৃত্যু লোকলজ্জার কারণে গোপন রাখতে চান। যার ফলে মৃত্যু বা আক্রান্তের সঠিক তথ্য-পরিসংখ্যান পাওয়া খুবই কঠিন। কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্টরা মৃত্যুর এই সংখ্যা আরো অনেক বেশী হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২শ ৮৫ জন বাংলাদেশীর মৃত্যুর তথ্য জনসমক্ষে এসেছে। এই পরিসংখ্যান কমিউনিটির বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া।

এদিকে মহামারী করোনার টিকার প্রয়োগ শুরু হলেও থেমে নেই মৃত্যুর মিছিল। প্রথম ধাপে ভ্যাকসিন পাচ্ছেন ডাক্তার, নার্স সহ যারা ফ্রন্ট লাইনে কাজ করছেন কেবল সেইসব লোকজন। সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য হতে কয়েক মাস সময় লাগবে। তারপরও ভ্যাকসিন নিলেই কোভিড থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে সেটাও পরিস্কার নয়। বিদায়ী বছরের বিদায়ী মাস ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় অর্ধশত প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। এই মৃত্যু নিউইয়র্কে বেশী। এরপর রয়েছে মিশিগান, নিউজার্সীও ভার্জিনিয়া। করোনায় আক্রান্ত হয়ে শত শত প্রবাসী নিউইয়র্ক ও মিশিগান সহ বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।

মহামারী করোনায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের ‘মাদার সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, সহ সভাপতি আবুল খায়ের খয়ের ও কার্যকরী সদস্য বাকির আজাদ, প্রবাসের অন্যতম সামাজিক সংগঠন চট্টগ্রাম সমিতি ইউএসএ’র সভাপতি অব্দুল হাই জিয়া, ছাতক সমিতি ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি ও নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসের স্টারলিং বাংলাবাজার বিজনেস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দীন, নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নর্থ শোর এলএইজের প্যাথোলজিক্যাল বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার সাবেক সভাপতি ডা. তৌফিকুল ইসলাম, ফটো সাংবাদিক এ হাই স্বপন, সঙ্গীত শিল্পী বীনা মজুমদার, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃীষ্টান ঐক্য পরিষদ ইউএসএ’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ দাস, ডা. রেজা চৌধুরী, ডা. শামীম আল মামুন, মোস্তফা আল্লামা, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ারের শশুর প্রবীণ প্রবাসী আব্দুস সালাম খান প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে হারিয়েছি। মৃতের তলিকায় রয়েছেন-দুদু মিয়া, গোলাম রহমান, কামরুজ্জামান, লুৎফুর রহমান, মাদারিস আলী, মোহাম্মদ জাফর, মনির উদ্দিন, মন্তাজ খান, পেয়ারা হোসেন বেবী, রাশিদা আহমেদ, রওশন আরা ফেরদৌস, এস দুদু, শাহানা আহমেদ তালুকদুর, সানাউর আলী, শামীম খান, আমানুল হক, শহীদুল হায়দার দুই সহদর সাইফুর হায়দার খান আজাদ ও শফি হায়দার এবং শিপন আহমেদ ও ইকবাল হক ভূঁইয়া প্রিন্স প্রমুখ।

বিদায়ী বছরের বিদায়ী মাসের মধ্যে অতি সম্প্রতি মিশিগানে নিজ বাসায় মারা যান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কলকাতা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জন্মভূমি পত্রিকা’র সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও আশির দশকে সিলেটের মোস্তফা আল্লামা গোল্ডকাপ খ্যাত বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা আল্লামা (৭৭)। স্থানীয় পুলিশ তাঁর বাসার দরোজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে। মৃত্যু পর পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। মোস্তফা একাই বসবাস করতেন। তাঁর বাড়ী সিলেটের গোলাপগঞ্জে।

গত ২৩ ডিসেম্বর বুধবার মিশিগানে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এমএজি ওসমানীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহচর এবাদুর রহমান (৭৪)। তাঁর বাড়ী মৌলভীবাজারের বড়লেখার বর্ণি গ্রামে। এবাদুর রহমানের পুরো পরিবার করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রী ও ২ ছেলে বেশ কয়েক দিন হাসপাতালে থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি নিজে প্রায় ৩ সপ্তাহ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ে হেরে যান। তিনি হ্যামট্রামিক শহরের বাংলাদেশ এভিনিউ সহ বায়তুল মামুর মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।

প্রায় ১ মাস হাসপাতালে থেকে করোনার কাছে পরাজয় বরণ করে নেন মিশিগান ষ্টেটস বিএনপির সাবেক আহবায়ক শামীম আখতার খান (৬২)। তার দেশের বাড়ী সিলেট শহরতলির দক্ষিণ সুরমার পাঠান পাড়া গ্রামে। এনামুল হক (৫৫)। তার গ্রামের বাড়ী সিলেটের বিয়ানীবাজা উপজেলার মাথিউরায়। এনামুল হক ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় মেম্বার ছিলেন।

করোনা ছিনিয়ে নিয়েছে নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের নর্থ শোর এলএইজের প্যাথোলজিক্যাল বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. তৌফিকুল ইসলাম (৬১)-কে। তিনি নিউইয়র্ক বাংলাদেশী কমিউনিটির অত্যন্ত প্রিয় মুখ এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি ২ সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থানয় থেকে গত ১৩ ডিসেম্বর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বাংলাদেশী চিকিৎসকদের মধ্যে তিনি উচ্চপদে কর্মরত ছিলেন। ডা. তৌফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকার সাবেক সভাপতি। তার স্ত্রী ডা. নাঈমা ভূঁইয়া একজন খ্যাতনামা ডেন্টিস্ট।

গত ২১ ডিসেম্বর নিউইয়র্কের কোনি আইল্যান্ডের বাসিন্দা ইমিগ্রেশন আইনজীবি সাঈদ আলী হায়দার (৪২) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি ঢাকার বাসিন্দা। হায়দার যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সুহেলের শ্যালক। ওয়াশিংটন মেট্রো আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার আহমদ খসরু করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন ৯ ডিসেম্বর। তিনি ভার্জিনিয়ায় মারা যান। তার দেশের বাড়ী সুনামগঞ্জ।

গত ১৯ ডিসেম্বর মাত্র ৩ ঘন্টার ব্যবধানে করোনায় নিউইয়র্কে মারা যান পিতা-পুত্র। ব্রুকলীনের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ খাইররুজ্জামান (৬৭) ও তার একমাত্র ছেলে আবুল বাশার পান্না সিপিএ (৪৫)। তাদের দেশের বাড়ী সন্দ্বীপে। বাবা ও ছেলের করুণ মৃত্যুতে নিউইয়র্কে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এছাড়াও করোনা কেড়ে নেয় নিউইয়র্কের বোর্ড অব এডুকেশনের ক্যারিকুলামে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পথিকৃত কুইন্স কলেজের খন্ডকালীন ও লং আইল্যান্ড সিটি হাই স্কুলের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ (৭১) মারা যান ৩০ নভেম্বর। দীর্ঘ ২১ দিন মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে লড়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেন নিউইয়র্ক জ্যাকসন হাইটসের বাসিন্দা গোলাম রহমান সেলিম (৪৮)। ভাগ্নির বিয়েতে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এলমহার্স্টের শেফালী বেগম (৫৫)।

ব্রঙ্কসের বাংলাদেশী মোহাম্মদ জাফরের মৃত্যুতে বাংলাদেশীদের সাথে কেঁদেছে আমেরিকার মানুষও। সিএনএন জাফরকে নিয়ে মর্মস্পর্শী একটি প্রতিবেদন প্রচার করলে কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। আমেরিকা যাদের রক্ত ঘামে রঙিন ও মহান হয়ে উঠেছে জাফর ছিলেন তাদের একজন। নিজে অসম্ভব পরিশ্রম করে ছেলেকে পাঠিয়ে ছিলেন বিখ্যাত হার্ভাডে। পেশায় ইয়েলো ক্যাবি জাফর নিউইয়র্কের রাস্তায় ট্যাক্সি চালাতেন। মেয়েকে পড়াতেন সেরা ট্রিনিটি স্কুলে। তার জীবনের গল্প থামিয়ে দিয়েছে করোনা। জাফরের দেশের বাড়ী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া।

পেনসেলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটে সিলেটের অতি প্রিয়মুখ জুলকারনাইন জায়গীরদারের। তিনি প্রায় ৩ সপ্তাহ হাসপাতালে থেকেও আপনজনদের সান্নিধ্যে ফিরে আসতে পারেননি। সিলেটের হাউজিং ষ্টেটসের বাসিন্দা জুলকারনাইন ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ সংগঠক ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান মিশিগান কমিউনিটির অন্যতম একজন মুরব্বী কামরুজ্জামান (কমই মিয়া)। তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ স্বপরিবারে মিশিগান রাজ্যের ওয়ারেন শহরে বসবাস করে আসছিলেন।

এছাড়া করোনা ছিনিয়ে নেয় মিশিগান কমিউনিটির সুপরিচিত শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ হোসেনের পিতা সানাওর আলী, আওয়ামী লীগ নেতা ও বিশিষ্ট সংগঠক সিরাজম মুনির, দুদু মিয়া, মদরিছ আলী, বড়লেখা সমিতির উপদেষ্টা চুনু মিয়ার মা নেওয়ারুন নেসা ও পিতা মনির উদ্দীন, আনোয়ার হোসেনের মা, বিয়ানী বাজার সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান এখলাসের শ্বাশুড়ী সামসুন নেহার, লুৎফুর রহমান, আব্দুল আহাদ লোদী ও সুফিয়া খাতুন। মারা গেছেন মসজিদের মুয়াজ্জিন মন্তাজ খান। অত্যন্ত ধর্ম পরায়ন মন্তাজ খান ছিলেন ডেট্রয়েট শহরের মসজিদুন নুরের দীর্ঘ কালীন মুয়াজ্জিন। এদের সকলের দেশের বাড়ী বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন স্থানে।

ডেট্রয়েট শহরের অন্যতম মসজিদ আল ফালাহর খতিব ও বিশিষ্ট আলেম মাওলানা আব্দুল লতিফ আজম জনান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মসজিদের ফিউনারেল হোমে কোভিড-১৯-এ মৃতদের লাশ আসছে প্রতিনিয়ত। তারা প্রায় প্রতিদিন জানাযা পড়াচ্ছেন। করছেন দাফন কাফনের ব্যবস্থা। নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি) আর মিশিগান কমিউনিটির সব থেকে পুরনো মসজিদ মসজিদুর নুরেও প্রায় প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মৃতদের নামাজে যানাজা। মসজিদ নুরের প্রবীন সদস্য কমিউনিটি নেতা ইকবাল হোসেন চৌধুরী এ তথ্য জানিয়ে বলেন, কেবল ডিসেম্বর মাসেই কম করে প্রায় ৩০ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মিশিগানে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.