বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, জীবনযাত্রা স্বাভাবিক, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে শিল্প খাত, বেড়েছে রফতানি আদেশ, আমদানিতে রেকর্ড, রাজস্ব আয় বাড়ছে । বিদেশী বিনিয়োগ আসছে, পর্যটনে প্রাণ ফিরেছে । দেশে করোনার প্রকোপ কমে আসায় চাঙ্গা হচ্ছে অর্থনীতি। গতি ফিরেছে ব্যবসা-বাণিজ্যের কর্মকান্ডে। বিদেশী ক্রেতাদের চাহিদায় বাড়ছে রফতানি আয়। এতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হচ্ছে আমদানিতেও। ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ায় সরকারের রাজস্ব আহরণও বাড়তে শুরু করেছে। খরা কাটতে শুরু করেছে বিনিয়োগে। প্রাণ ফিরেছে পর্যটন কেন্দ্রে। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সম্ভাবনা বাড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা শূন্যপদে শুরু হয়েছে নিয়োগ। করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে অর্থনীতি এখন পুনরুদ্ধারের পথে এমনটাই বলছেন অর্থনীতিবিদ ও শিল্পোদ্যোক্তারাও।
শুক্রবার দেশে করোনা শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই বলছে, কতটা কমেছে করোনার প্রকোপ। চলতি বছরের ১১ আগস্ট সবকিছু চালু হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চাঙ্গা হতে শুরু করে। দোকানপাট, শপিংমল, অফিস-আদালত, ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমা, শিল্প-কারখানা ও সড়ক, নৌ, রেল, আকাশ পথের পরিবহনসহ সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে। শুধু তাই নয়, মানুষের মনের এই স্বস্তি সামষ্টিক অর্থনীতিতেও এক ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সরকারের প্রণোদনা ঘোষণা ছিল সময়োপযোগী পদক্ষেপ। গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এটা নিশ্চিত বলা যায় যে, কোভিডের অচলাবস্থা ভেঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি স্বস্তিকর গতি নিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আমরা কোভিড পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ে আছি। উৎপাদন পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে না গেলেও কাছাকাছি পর্যায়ে গেছে। এটা একটা ইতিবাচক পর্যায়ে যাচ্ছে। আগামী বছরের প্রথম ৩/৪ মাসের মধ্যে হয়ত আমরা কোভিডের বিরূপ প্রভাব থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারব।
পণ্য আমদানিতে রেকর্ড ॥ বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আমদানি ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আমদানিতে এক হাজার ২৬৭ কোটি ডলার ব্যয় হয়েছিল, চলতি অর্থবছরে যা বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৮৭৩ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ। শুধু পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। অর্থমূল্যের হিসাবে এ সময়ে ৪৮৪ কোটি ডলার সমমূল্যের কাঁচামাল আমদানি হয়েছে, যা গতবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ২৮৭ কোটি ডলার। অন্যান্য শিল্পপণ্যের মধ্যে সিমেন্টের কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানি হয়েছে ২৪ কোটি ডলার, যা আগের বছর ছিল ১৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ শতাংশ। তেল বীজ আমদানি হয়েছে ২৯ কোটি ডলার, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৬ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশ। অন্যান্য আমদানি পণ্যের মধ্যে রাসায়নিক দ্রব্য এসেছে ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারের, যা আগের বছরের একই প্রান্তিকে ছিল ৭২ কোটি ৭০ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। প্লাস্টিক ও রাবার পণ্যের কাঁচামাল এসেছে প্রায় ৯৫ কোটি ডলার; প্রবৃদ্ধি ৫৩ শতাংশ। আয়রন, স্টিল ও অন্যান্য ধাতব পণ্যের কাঁচামাল আমদানি হয়েছে ১৬৬ কোটি ৯ লাখ ডলারের, যা আগের বছর একই প্রান্তিকে ছিল মাত্র ৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার; প্রবৃদ্ধি ৭৪ শতাংশ।
এছাড়া শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য মূলধনী পণ্য আমদানিতেও হয়েছে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। এ তিন মাসে ৩৬৯ কোটি ডলার সমমূল্যের মূলধনী পণ্য আমদানি হয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ২৬৩ কোটি ডলার। শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল- ইপিজেডগুলোর জন্য বিশেষভাবে আমদানি হয়েছে ১১০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য, গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এসেছিল মাত্র ৬৯ কোটি ৪০ লাখ। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো মুস্তাফিজুর রহমানের মতে, আমদানি বৃদ্ধি এই ইঙ্গিত দেয় যে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি সঠিক পথে আছে। মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি বাড়ার বিষয়টি একটা ভাল লক্ষণ। এর মানে হচ্ছে ব্যবসা বাড়ছে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্যের প্রভাবের বিষয়টাও বিবেচনায় আনতে হবে। কারণ আমদানিকৃত পণ্যের দামও বাড়তির দিকে। বৈশ্বিকভাবে পণ্যের চাহিদা বাড়ার কারণে পরিবহন খরচ সঙ্কটপূর্ব সময়ের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে। ফলস্বরূপ এখনই কোন কোন ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির চাপ দেখা যাচ্ছে। যা সামনের দিনগুলোতে আরও তীব্র হতে পারে। সিপিডির সম্মানীয় এই ফেলোর ভাষ্য, আয় না বাড়লে এটা সাধারণ মানুষের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
রফতানি আয়ে উল্লম্ফন ॥ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক রফতানিতেও অর্থবছরের প্রথম চার মাসে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে রেকর্ড পণ্য রফতানির পর অক্টোবরেও তা আরও বেড়েছে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রয়াদেশ বাড়তে থাকায় ভবিষ্যতে আরও ভাল করবে রফতানি খাত। ইপিবির তথ্য বলছে, অক্টোবরে ৪৭২ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি। ২০২০ সালের অক্টোবরে আয় এসেছিল ২৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। সেপ্টেম্বরেও একক মাসে রেকর্ড পরিমাণ ৪১৬ কোটি ৫৪ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য রফতানি হয়েছিল, প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৩৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস শেষে রফতানি আয় হয়েছে এক হাজার ৫৭৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধি ২২ দশমিক ৬২ শতাংশ। পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বিপুলসংখ্যক মানুষকে করোনার টিকা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। তাই সেসব দেশের ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমের জন্য করোনার আগের মতো ক্রয় আদেশ দিচ্ছে। তা ছাড়া মিয়ানমারে সেনাশাসন ও ভারতে করোনার ভয়াবহতার কারণেও কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বড়দিন কেন্দ্র করেও প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। তার আগেই চীন থেকে কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে স্থানান্তর করেন ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা।
গতি ফিরেছে রাজস্ব আয়ে ॥ করোনার কারণে ২০২১ অর্থবছরের বড় একটা সময় ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত ছিল। তারপরও আগের বছরের তুলনায় এ খাত থেকে সরকারের আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। ব্যাংক হিসাব খোলা, ঋণ প্রদান, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ঋণের হিসাব, আমদানি-রফতানিসহ ব্যাংকের সব ধরনের সার্ভিস চার্জ থেকে সরকার ১৫ শতাংশ ভ্যাট পায়। এ ছাড়া ব্যাংকের কেনাকাটায়ও দিতে হয় উৎসে ভ্যাট। এনবিআরের তথ্য বলছে, ২০২১ অর্থবছরে ব্যাংকের এসব চার্জের ওপর ২ হাজার ২৫১ কোটি টাকা ভ্যাট পেয়েছে সরকার। আগের বছর এ খাতে আদায়কৃত ভ্যাট ছিল ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা। করোনাকালে ভাল ব্যবসা করেছে ওষুধশিল্প। গত বছর করোনার লকডাউনের মধ্যেও সচল ছিল আবাসনসহ নির্মাণ খাত। এ খাতের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কনস্ট্রাকশন ফার্মগুলো থেকে সরকারের রাজস্ব আহরণ বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। এ খাতের অনুষঙ্গ রড, সিমেন্ট ও সিরামিকস থেকেও রাজস্ব ১০ শতাংশের বেশি হারে বেড়েছে। এনবিআরের তথ্যানুসারে, গত বছর স্টিল ও রডশিল্প থেকে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে ২৭ শতাংশ, সিমেন্ট খাত থেকে ১১ শতাংশ ও সিরামিকস থেকে ৩৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।
বিনিয়োগের খরা কাটছে ॥ করোনায় দেশে বিনিয়োগের যে খরা তৈরি হয়েছিল, তা কাটতে শুরু করেছে। ব্যাংক ব্যবস্থায় ঋণের জন্য আবেদন বাড়ছে। বেড়েছে বিতরণও। ফলে ব্যাংকে যে অতিরিক্ত তারল্য জমে ছিল, তা ছোট হতে শুরু করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ঋণ বিতরণ হয়েছে ৫৪ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম প্রান্তিকে মার্চ পর্যন্ত বিতরণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে এর প্রায় দ্বিগুণ। ঋণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমছে উদ্বৃত্ত আমানত। কেবল জুলাইয়ে উদ্বৃত্ত আমানত কমেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় অর্থনৈতিক কর্মকা- বেশ গতিশীল হয়েছে। তবে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ কাক্সিক্ষত মাত্রায় না আসায় কিছুটা সতর্ক পর্যবেক্ষণ তার। তিনি বলেন, বহির্বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে বিশেষ করে ইউরোপে এখনও স্বাভাবিক চলাফেরায় অনেক সতর্কতা রয়েছে। সেই কারণে কাক্সিক্ষত পরিমাণ নতুন বিদেশী বিনিয়োগ আসেনি। তবে যেসব বিদেশী কোম্পানির আগে থেকেই এ দেশে বিনিয়োগ রয়েছে তারা প্রয়োজন মতো নতুন বিনিয়োগ করছে। আবার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতেও বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কোভিডের মধ্যেও ‘ভার্চুয়াল কনফারেন্স’ করে বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা অব্যাহত ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, অনেকেই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, কিন্তু ভ্রমণে বিধিনিষেধ থাকায় অনেক কিছুই থেমে আছে। সে কারণে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোভিডের প্রভাবমুক্ত হতে আরও কিছুদিন সময় প্রয়োজন হবে
বাড়ছে কর্মসংস্থান, নতুন নিয়োগ শুরু ॥ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চাঙ্গা হওয়ায় কর্মসংস্থানের বন্ধ দুয়ারও খুলছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। অধিকাংশ কারখানাতেই নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে থেমে থাকা সরকারী নিয়োগ প্রক্রিয়াও চালু হয়েছে। রফতানিকারকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, পোশাক খাতে ক্রয়াদেশ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ খাতে নতুন দক্ষ কর্মীরও প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ বড় কারখানায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শ্রমিকের চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর আসছে। শুধু তৈরি পোশাকে ২৫ লাখ শ্রমিক হিসাব করলেও এ খাতে নতুন করে আরও তিন লক্ষাধিক মানুষের কর্মস্থল তৈরি হয়েছে, যদিও এর সুশৃঙ্খল কোন তথ্য নেই। সম্প্রতি মিয়ানমার, চীন ও ভিয়েতনাম থেকে পোশাকের কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তরিত হয়ে আসছে বলে খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দীর্ঘদিন পর ইউরোপ-আমেরিকায় অফিস চালু হওয়ায় নিট পোশাকের পাশাপাশি উভেন পণ্যের চাহিদাও বাড়তে শুরু করেছে।
জিডিপি উন্নতির পূর্বাভাস ॥ আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি ফিচ সম্প্রতি বাংলাদেশের রেটিং আগের মতো ‘বিবি মাইনাস’ বজায় রেখেছে। গত ৮ নবেম্বর প্রকাশিত পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের কোভিড পূর্ববর্তী প্রবৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরে মহামারী পরবর্তী সময়ে জিডিপি অনেক ভাল হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। আগামী বছর ২০২২ সালে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে তা ৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে আভাস প্রতিষ্ঠানটির। তবে বৈশ্বিক মহামারী পরিস্থিতির অবনতি হলে তা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ফিচের পর্যবেক্ষণে। এতে বলা হয়েছে, আগস্টের পর থেকে দৈনিক শনাক্তের হার কমছে এবং টিকাদান কর্মসূচী চালিয়ে নিতে টিকার সরবরাহের যে ঘাটতি ছিল তা পূরণ হতে শুরু করেছে। তবে টিকাদানের হার খুবই কম। ২০২১ সালের ৩ নবেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১৮ শতাংশ পুরোপুরি টিকার আওতায় এসেছে। রেটিং এজেন্সিটির পর্যবেক্ষণে তৈরি পোশাক রফতানি ২০২০ সালে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমলেও এখন তা ভালভাবেই পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে বলে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।