ডিজিটাল লেনদেন গ্রামগঞ্জেও

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে ব্যাংক এখন হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। ব্যাংকিং লেনদেনে গ্রাহকদের এখন আর ব্যাংকে যেতে হয় না। ঘরে বসেই এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার করা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, ব্যাংক এখন এ্যাপভিত্তিক সেবা দেয়া শুরু করেছে। সরকারী ও বেসরকারী খাতের সব ব্যাংকই ডিজিটাল সেবায় মনোযোগ দিচ্ছে। নগদ অর্থের পরিবর্তে কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে লেনদেন করতে আগ্রহীর সংখ্যাও বাড়ছে। আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহারের হার বাড়ছে। এভাবেই ক্যাশলেস লেনদেনের বিপ্লব ঘটছে নীরবে। এমন অবস্থা শুধু রাজধানী ঢাকাতেই নয় বরং বিভাগীয় এবং জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। অর্থাৎ গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে শহরে, শহর থেকে গ্রামে এবং গ্রাম থেকে শহরে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে যাচ্ছে। এভাবেই বাড়ছে ক্যাশলেস লেনদেন। এতে বাড়ছে কার্ডের ব্যবহার। কমছে কাগুজে চেকের ব্যবহার।

জানা গেছে, দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবায় নীরব এক বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে ব্যাংকিং খাতে। ঘরে ঘরে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে গেছে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন ব্যাংকিং আর এজেন্ট ব্যাংকিং। শুধু তাই নয়, ঘরে বসে ব্যালেন্স দেখা এবং ক্যাশ ট্রান্সফারের মতো কাজও হচ্ছে ব্যাংকে না গিয়েই। এ ছাড়া দুর্গম পাহাড়ী ও চরাঞ্চলের মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় এনেছে এজেন্ট ব্যাংকিং। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সুবাদে বিদেশ থেকে স্বজনের পাঠানো টাকার জন্য প্রিয়জনকে অপেক্ষায় থাকতে হয় না দিনের পর দিন। জরুরী প্রয়োজন টাকা উত্তোলন কিংবা জমার ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার প্রয়োজন হয় না। ক্রেডিট কার্ডের বিল, কিংবা গ্যাস-বিদ্যুতের বিল পরিশোধও জীবনকে করেছে আরও সহজ। এ ছাড়া এটিএম সেবা চালু হয়েছে আরও এক যুগ আগেই। ভবিষ্যত প্রজন্মকে সঞ্চয়ে উৎসাহী করতে চালু করা হয়েছে স্কুল ব্যাংকিং। কৃষক তার ভর্তুকির টাকা পাচ্ছেন ১০ টাকায় খোলা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে। বিধবা, বয়স্কসহ বিভিন্ন ধরনের ভাতাও বিতরণ করা হচ্ছে ব্যাংকের মাধ্যমে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সিরাজুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা ব্যাংকগুলোকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখছে। যে ব্যাংক যত সহজ করছে গ্রাহকরা সেই ব্যাংকের প্রতি বেশি ঝুঁকছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোও মানুষের আরও দোরগোড়ায় ব্যাংকিং সেবা নিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছে।

জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকও এ্যাপভিত্তিক ব্যাংকিং শুরু করেছে। এর ফলে মুঠোফোন এ্যাপসের মাধ্যমে দুই মিনিটে ঘরে বসেই খোলা যাচ্ছে নতুন হিসাব। আর এই এ্যাপস থেকে টাকা স্থানান্তর, বিল পরিশোধ, সরকারী ভাতা ও ভর্তুকি গ্রহণসহ ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের সব সুবিধা মিলছে। ব্যাংকটি তার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর ভাতা পাঠানো শুরু করেছে।

জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আতাউর রহমান প্রধান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক প্রথমবারের মতো সোনালী ই-সেবা এ্যাপস চালু করেছে। এ এ্যাপসের মাধ্যমে দেশের যে কোন নাগরিক মাত্র ২ মিনিটেই তার ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে। এতে মানুষকে ব্যাংক হিসাব খোলার জন্য ব্যাংকে যেতে হবে না। ঘরে বসেই মানুষ ব্যাংক সুবিধা পাবেন।’ তিনি বলেন, ‘এ এ্যাপসের মাধ্যমে যে কোন গ্রাহক সোনালী ব্যাংকের কোন শাখায় না গিয়ে কেওয়াইসি-এর আওতায় সোনালী ই-সেবা এ্যাপস ব্যবহার করে ব্যাংকে এ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন।’

বেসরকারী খাতের ইসলামী ব্যাংক সেলফিন এ্যাপ দিয়ে গ্রাহকদের সেবা দিচ্ছে। এভাবে পুরনো ব্যাংকের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোও ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবায় মনোযোগ দিচ্ছে। অর্থাৎ গ্রাম থেকে গ্রামে, শহর থেকে শহরে, শহর থেকে গ্রামে এবং গ্রাম থেকে শহরে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়া চেক বই না থাকলেও টাকা উঠানো সহজ করেছে কিছু ব্যাংক। শুধু একটি মোবাইল হাতে থাকলেই যেকোন এজেন্ট শাখা থেকে ফিঙ্গার দিয়ে টাকা উঠানো যাচ্ছে।

ডিজিটাল
Comments (0)
Add Comment