বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দেশে এ বছর পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়েছে। যে মজুত আছে, তা দিয়ে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাহিদা মিটবে। কৃষি মন্ত্রণালয় মনে করে, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়বে। তবে পেঁয়াজ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই, বরং কৃষককে সুরক্ষা দিতে আমদানি নিরুৎসাহিত করা দরকার।
দেশে প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে কৃষকের পেঁয়াজ ওঠে। এবারের উৎপাদন ও মজুত পরিস্থিতি নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রতিবেদন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। এতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) হিসাব তুলে ধরে বলা হয়েছে, চলতি বছর দেশে ৩৬ লাখ ৪১ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২ লাখ ৭৯ হাজার টন বেশি। পচে যাওয়া এবং ওজন কমে যাওয়ায় মোট উৎপাদনের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ পেঁয়াজ বিক্রয়যোগ্য থাকে। ডিএই বলছে, কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কাছে এখন পেঁয়াজ আছে কমপক্ষে ২৫ লাখ টন।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, দেশে দ্রুত পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ছে। ভালো দাম পেলে কৃষক পেঁয়াজ চাষে উৎসাহিত হবেন। তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদেরও যাতে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে না হয়, সেই দিকেও আমরা খেয়াল রাখছি।’
ডিএইর পেঁয়াজ উৎপাদনের হিসাবের সঙ্গে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবের পার্থক্য অনেক বেশি। বিবিএস বলছে, গত বছর পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ২২ লাখ ৬৯ হাজার টন, যা ডিএইর হিসাবের তুলনায় প্রায় ১১ লাখ টন কম। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, দেশের মোট চাহিদার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
ডিএই দেশে পেঁয়াজ আমদানির জন্য নতুন করে আমদানির ছাড়পত্র দিচ্ছে না। এ কারণে কয়েক দিন আগে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে যায়। বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) সাড়ে ৫ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এক মাস আগে ১ লাখ ৩৬ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমদানি হয়েছে মাত্র ৫৪ হাজার ৪০০ টন। যে কারণে নতুন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে না ডিএই।
এদিকে ডিএইর হিসাবে, এ বছর দেশি পেঁয়াজের প্রতি কেজির উৎপাদন খরচ পড়েছে ২০ টাকা। আর হাইব্রিড ও বিদেশি জাতের পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) কান্ট্রি ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এখন দেশে পেঁয়াজের সংকট হওয়া বা দাম এতটা বেড়ে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। তাই মূল্যবৃদ্ধির কারণ খুঁজে বের করা উচিত।