বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বিশ্বজুড়ে ডলারের দামে অস্থিরতা চলছে। এই সময়ে বাংলাদেশে ডলারের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশেরও বেশি। পরিস্থিতি এমন, সেই বাড়তি দামেও পাওয়া যাচ্ছে না ডলার। ফলে ডলারের জোগান দিতে গিয়ে চাপ পড়ছে রিজার্ভের ওপর। ডলারের ওপর চাপ কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকল্প মুদ্রায় ঝুঁকছে সরকার। এই বাস্তবতায় জুলাই থেকে রুপিতে আমদানি দায় পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। এছাড়া চীনা ইউয়ান ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক দেশই বিকল্প মুদ্রায় লেনদেনে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চীন-রাশিয়ার নেতৃত্বে অনেক দেশ বিকল্প মুদ্রায় বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদীয়মান অর্থনৈতিক জোট ‘ব্রিকস’-এ যুক্ত হতে আগ্রহ দেখিয়েছে আরও ২৫টি দেশ। এসব দেশ এখন ডলারমুক্তকরণে বিকল্প মুদ্রায় ঝুঁকছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দেশগুলো যদি ডলারের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে বিকল্প মুদ্রা ব্যবহার করে তবে বিশ্ব অর্থব্যবস্থায় আরেকটি শক্তিশালী মুদ্রার উত্থান ঘটবে, যা ডলারকে টলিয়ে দিতে পারে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বাড়ছে। ফলে একদিকে রিজার্ভের পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বড় ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বাড়াতে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার। এই ঋণের শর্ত হিসেবে আগামী জুনে দেশের নেট রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন ডলার হতে হবে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংককে রুপির মাধ্যমে লেনদেনের অনুমতি দিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে জুলাই থেকে রুপিতে আমদানি দায় পরিশোধ করা যাবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) ২০২২ সালের ১১ জুলাইয়ের সার্কুলার শর্তের আলোকে সোনালী ও ইস্টার্ন ব্যাংককে ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) ও আইসিআইসিআই ব্যাংকে হিসাব খুলতে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব হিসাবের মাধ্যমে শুধু রুপিতে লেনদেন করা যাবে, যা জুলাই নাগাদ বাস্তবায়নে কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, লেনদেনের শর্তের আলোকে সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক এবং ভারতের এসবিআই ও আইসিআইসিআই ব্যাংক পারস্পরিক হিসাব খোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে গত মাসে আরবিআই ও এসবিআইয়ের প্রতিনিধিদল ঢাকায় সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আফজাল করিম ও ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখারের সঙ্গে বৈঠকও করে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে ২০০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। আর বাংলাদেশ ভারত থেকে পণ্য আমদানি করেছিল ১ হাজার ৬১৯ কোটি ডলারের। ঘাটতির পরিমাণ ১ হাজার ৪১৯ কোটি ডলার। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে জড়িত এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ভারতের ব্যাংক থেকে রুপিতে ঋণ নিয়ে আমদানি ব্যয় পরিশোধ আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। একটা পর্যায়ে তারা টাকার বিপরীতে রুপির দর বাড়িয়ে দেবে।’ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, গত ডিসেম্বরে রুপি ও টাকার বিনিময়ে লেনদেন করতে প্রস্তাব দেয় ভারত। সেটি এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের রপ্তানি বাণিজ্য ২ বিলিয়ন ডলারের মতো। আমরা আমদানি করি ১৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি। রপ্তানি করে আমাদের কাছে যে রুপি আসবে সেটা আমরা আমদানি বিল পরিশোধে ব্যবহার করতে পারব এটাই আমাদের লাভ। এ ছাড়া এই দুই বিলিয়ন ডলারের বাইরে আমাদের যে লেনদেন হবে সেটা করার জন্য আমাদের রুপি কিনতে হবে। এতে আমাদের কোনো লাভ হবে না। কারণ আমাদের রিজার্ভে বর্তমানে রুপির মজুত নেই। রিজার্ভ থেকে ডলার দিয়ে রুপি কিনতে হবে। এতে ডলারের মজুত কমে যাবে।
লেনদেনে কোনো সমস্যা হবে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রুপি এবং টাকায় লেনদেনে আমি কোনো সমস্যা দেখি না। এর ফলে রিজার্ভের বৈচিত্র্যকরণ শুরু হবে। আস্তে আস্তে ইউয়ান, রুবলের মতো মুদ্রাও রিজার্ভে যুক্ত হবে। বর্তমানে ডলার ছাড়া ইউরো ও গ্রেট ব্রিটেনের কিছু মুদ্রা মজুত আছে। সিপিডির এই বিশেষ ফেলো বলেন, যেহেতু দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি অনেক, সে জন্য বাংলাদেশের সুযোগ সীমিত। তবে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়াতে পারলে সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। এই উদ্যোগ ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করবে। বিশে^র অনেক দেশ ডলারনির্ভরতা কমাতে নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেনে ঝুঁকছে।
বিশ্বের পাঁচ দেশের মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ ‘হাই ভ্যালু কারেন্সি’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। চীনের ইউয়ান সেগুলোর অন্যতম। আইএমএফের কারেন্সি বাস্কেটে ইউয়ান স্বীকৃতি পেয়েছে ২০১৬ সালে। এরপর থেকে সংস্থাটির পর্যালোচনায় মুদ্রা হিসেবে ইউয়ান আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়েছে। তবে ভারতীয় রুপি এখনো আইএমএফের স্বীকৃতি পায়নি। তবুও রিজার্ভ সাশ্রয়ে বাংলাদেশ-ভারত বিকল্প মুদ্রায় ঝুঁকছে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব উদ্যোগের ফলে এখনই রিজার্ভের চাপ কমানো সম্ভব নয়। চাপ কমাতে হলে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করতে হবে। নির্ধারণ করতে হবে একক রেট। তাদের মতে, বিকল্প মুদ্রায় লেনদেনের যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, সেগুলো সুদূর ভবিষ্যতে কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারে। চীন এখন পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিশালী অর্থনীতি। তাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও বেশ ভালো এবং তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে। সে ক্ষেত্রে চীনের মুদ্রার ওপর ভরসা করা যায়। ভারতও বড় এবং সম্ভাবনাময় অর্থনীতির দেশ। তা ছাড়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। তাই রুপিতেও বাণিজ্য হতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি যত বাড়বে, রুপিতে বাণিজ্যের সম্ভাবনা ততই বাড়বে। বাংলাদেশে এখন ভারতে ২০০ কোটি ডলারের রপ্তানি করে। এর বেশি পণ্য রুপিতে কেনা যাবে না, কারণ রপ্তানি ছাড়া রুপি পাওয়ার সুযোগ নেই। সে জন্য অশুল্ক বাধা দূর করে ভারতে রপ্তানি বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে ডলারের ওপর চাপ কমাতে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় মুদ্রায় লেনদেনের বিষয়ে আলোচনা করছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে এলসি খোলার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণ ইউয়ানে পরিশোধের বিষয়ে বাংলাদেশ ও রাশিয়া সম্মত হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মুদ্রায় লেনদেনের সুযোগ তৈরির একটি প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। তাদের প্রস্তাবিত অন্য মুদ্রাগুলো হলো পাউন্ড, ইউরো, ইয়েন ও রুবল। এর আগে ডলারে নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়া বাংলাদেশের কাছে ঋণের অর্থ চেয়েছিল রুবলে। তবে রুবলে ঋণ পরিশোধ সম্ভব না জানিয়ে চীনা মুদ্রায় সম্মতি দেয় বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে এক নির্দেশনায় ইউএস ডলার, ইউরো, জাপানি ইয়েন, যুক্তরাজ্যের পাউন্ড ও কানাডিয়ান ডলারের পাশাপাশি ইউয়ানে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য নিষ্পত্তির সুযোগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে তখন ব্যাংকগুলো এ সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি।
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বিশ্ব মুদ্রাব্যবস্থায় যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে তাতে দিন দিনই ডলারবিরোধী অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে। চীন-রাশিয়ার নেতৃত্বে অনেক দেশ বিকল্প মুদ্রায় বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। এমনকি ব্রিকস জোটে যুক্ত হতে আগ্রহ দেখিয়েছে আরও ২৫টি দেশ। এতে ব্রিকসের সদস্যসংখ্যা বেড়ে হবে ৩০। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দেশগুলো যদি ডলারের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে বিকল্প মুদ্রা ব্যবহার করে তবে বিশ্ব অর্থব্যবস্থায় আরেকটি শক্তিশালী মুদ্রার উত্থান ঘটবে, যা ডলারকে টলিয়ে দিতে পারে। পরবর্তী ব্রিকস সম্মেলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় থাকবে ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্যবহারের বিষয়টি। আগামী আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে সদস্য দেশগুলো নিজেদের বাণিজ্যিক পরিশোধ কিভাবে ডলারের বিকল্প মুদ্রায় করবে, এ নিয়ে আলোচনা করা হবে। ফলে শুধু বেইজিং আর মস্কো নয়, ভারত থেকে শুরু করে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো এখন ডলারমুক্তকরণে ঝুঁকছে। বর্তমানে ব্রিকস সদস্য দেশগুলো হচ্ছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ বছরই জোটটি সম্প্রসারিত হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জোটে আরও দেশের যোগদানের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টিও আগস্টের সম্মেলনে আলোচনা করা হবে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক ডজনেরও বেশি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে ডলার শক্তিশালী অবস্থানে থাকায় যে কোনো দেশের বিরুদ্ধে কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তাই বিশেষত রাশিয়া ও চীন এই মুদ্রা থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা দীর্ঘদিন থেকে চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক এই চেষ্টায় অন্যান্য দেশও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হচ্ছে। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের জুলিয়াস সেন বলেন, ‘ডলার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের ফলে যে দেশ টার্গেটে পরিণত হয় সেই দেশটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে এটি সবার জন্যই ক্ষতিকর।’
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে লেনদেন বাড়ছে। ব্লুমবার্গের গত ফেব্রুয়ারির তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, রাশিয়ার বাণিজ্যে প্রথমবারের মতো ডলারকে ছাড়িয়েছে চীনের ইউয়ান। এমনকি চীন-রাশিয়ার বাণিজ্যের ৭০ শতাংশের বেশি হচ্ছে এখন স্থানীয় মুদ্রায়। অনেক দেশই এখন রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে ডলারের বিকল্প ইউয়ানসহ অন্যান্য মুদ্রাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবেও ডলারের অবস্থান ক্রমে দুর্বল হচ্ছে। ২০০০ সালে যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রিজার্ভ মুদ্রার ৭০ শতাংশ ছিল ডলার, এখন তা কমে ৬০ শতাংশের নিচে নেমেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বিশ্বে রিজার্ভ মুদ্রার ৫৮.৩৬ শতাংশ ছিল ডলার। ২০.৪৭ শতাংশ ছিল ইউরো, ৫.৫১ শতাংশ জাপানি ইয়েন, ৪.৯৫ শতাংশ পাউন্ড স্টার্লিং, ২.৬৯ শতাংশ চীনা ইউয়ান, ২.৩৮ শতাংশ কানাডিয়ান ডলার, ১.৯৬ শতাংশ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, ০.২৩ শতাংশ সুইস ফ্রাঁ এবং ৩.৪৫ শতাংশ অন্যান্য মুদ্রা।