বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে ১১ হাজার কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রপ্তানি নীতিমালার (২০২৪-২৭) খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান রপ্তানিনীতি ২০২১-২০২৪-এর মেয়াদ আগামী ৩০ জুন শেষ হবে। বৈঠকে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি বা স্থানীয়ভাবে কেনা পদ্ধতির সময়সীমা ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর আগে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে টিসিবির জন্য মসুর ডাল, সয়াবিন তেল এবং কৃষকের সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে বুধবার দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অর্থমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এ বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
অনুমোদিত রপ্তানি নীতিতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়া রপ্তানি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক কৌশল নেওয়া হয়েছে।
সার আমদানি : রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কানাডা, কাতার, সৌদি আরব এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান কাফকো থেকে এক লাখ ৭০ হাজার টন সার আমদানি ও ক্রয় করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৬৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯০ হাজার টন ইউরিয়া, ৪০ হাজার টন এমওপি এবং ৪০ হাজার টন ডিএপি সার রয়েছে। কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে ৪০ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। ব্যয় হবে ১২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি টনের মূল্য ২৮৫ মার্কিন ডলার। সৌদি আরব মা আদেনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানি করা হবে। এতে ব্যয় হবে ২২৮ কোটি টাকা। প্রতি টনের মূল্য ৫১৯ মার্কিন ডলার। কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। এছাড়া কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (কাফকো) কাছ থেকে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৮৯ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
মসুর ডাল ক্রয় : ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১০২ কোটি টাকা। প্রতি কেজি ডালের দাম ধরা হয়েছে ১০১ টাকা ৯৪ পয়সা। এর মধ্যে ইজি জেনারেল ট্রেডিং থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন এবং নাবিল নাবা ফুড প্রডাক্ট থেকে ৪ হাজার মেট্রিক ডাল কেনা হবে। এছাড়া শবনম ভেজিটেবল অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে কেনা হবে ১০ হাজার মেট্রিক টন। এতে মোট ব্যয় হবে ১০৪ কোটি টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম পড়বে ১০৩ টাকা ৭৫ পয়সা। রাজশাহীর মেসার্স সালমান খুরশীদের কাছ থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন এবং খুলনার শেখ অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬১ কোটি টাকা। প্রতি কেজির ডালের দাম পড়বে ১০১ টাকা ৪০ পয়সা।
এছাড়া সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বসুন্ধরা মাল্টি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের কাছ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৮২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম পড়বে ১৫২ টাকা। অপর প্রস্তাবে মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং মজুমদার ব্রান অয়েল মিলস লিমিটেড থেকে ৪০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কেনার বিষয় অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেলের দাম পড়বে ১৪৮ দশমিক ৭৫ টাকা, যা আগে ছিল ১৫২ টাকা।
খুলনায় বিদ্যুতের উপকেন্দ্র : বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ক্ষমতা বাড়ানোর প্রকল্পের আওতায় খুলনা বিভাগে ৫টি লটে ২৫টি নতুন উপকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ব্যয় হবে ৬০৮ কোটি টাকা। টিএসটিএল এবং ইইএল প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্যে যশোর ও ঝিনাইদহে ৫টি করে ১০টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ব্যয় হবে ২২৮ কোটি টাকা। খুলনায় ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্তকাজ ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১১৪ কোটি টাকা।