বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। একইসঙ্গে কমছে মৃত্যুর সংখ্যাও। দীর্ঘ ৩৬ দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক মৃত্যু ৫০-এর নিচে নেমেছে। একই সঙ্গে দেশে করোনায় সর্বমোট সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। এদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৬৯৮ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন মোট ৭ লাখ ২ হাজার ১৬৩ জন, যা দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর ৯১ শতাংশের বেশি। গতকাল নাগাদ দেশে সর্বমোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬০ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন মোট ১১ হাজার ৭৯৬ জন। সুস্থ এবং মৃত্যু বাদ দিয়ে বর্তমানে মোট ৫৫ হাজার ২০১ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে গতকাল দেশে ৪১ জন করোনা রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন, যা গত ৩৯ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ এরচেয়ে কম ৩৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া চলমান করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত ৩১ মার্চ প্রথমবার মৃত্যু ৫০-এর ওপরে ওঠে। এরপর দীর্ঘ ৩৬ দিন পর গতকালই প্রথমবার মৃত্যু ৫০-এর নিচে নামল। তার আগে গত ১৯ এপ্রিল দেশে এক দিনে এ যাবৎ সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে এ ক’দিনে মৃত্যু ধীরে ধীরে কমেছে। দীর্ঘ ২৪ দিন পর গত ৩০ এপ্রিল দৈনিক মৃত্যু ৬০-এর নিচে নামে। তার ৬ দিনের মাথায় গতকাল তা ৫০-এর নিচে নামল।
অন্যদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগী শনাক্ত কমার গতি সম্প্রতি কিছুটা কমে এসেছে। গত ৩ মে শনাক্ত হার ৯ শতাংশের নিচে নামার পর গত চার দিন ধরে তা ৮ শতাংশের ঘরেই রয়েছে। প্রতিদিনই শনাক্ত হার কমেছে, তবে সেটা খুবই সামান্য। অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ২১ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৮২২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। শনাক্তের হার ছিল ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, যা গত ৫০ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ এরচেয়ে কম হারে রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা শনাক্তের পর গতকাল ছিল ৪২৪তম দিন। অধিদপ্তরের এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশে ৪২৮টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৫টি জিন-এক্সপার্ট, ২৬৬টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ও নতুন একটিসহ ১২৭টি আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার। এসব পরীক্ষাগারে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ২১ হাজার ৮২২ জনের। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ২১ হাজার ৫৮৫ জনের, যার মধ্যে ১ হাজার ৬৬৫টি নমুনা ছিল বিদেশ গমনেচ্ছুদের। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ৫৫ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এসব পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬০ জন। মোট পরীক্ষার বিপরীতে গড়ে ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ লোকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১১ হাজার ৭৯৬ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহার ১ দশমিক ৫৩ ও সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ২৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে পুরুষ ২২ ও নারী ১৯ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৫৬৬ পুরুষ ও ৩ হাজার ২৩০ নারী মৃত্যুবরণ করেছেন। শতকরা হিসাবে পুরুষ ৭২ দশমিক ৬২ ও নারী ২৭ দশমিক ৩৮ ভাগ। এদিন সর্বোচ্চ ২০ জন মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রামে ১৪, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটে ২ জন করে এবং খুলনায় ১ জন মারা গেছেন। বয়স অনুযায়ী সর্বশেষ মৃতদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ২৪, ৫১-৬০ বছরের ১৫ এবং ৪১-৫০ বছরের ছিলেন ২ জন। এদিন ২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১ জন বাসায় মারা গেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৯৮ রোগীকে আইসোলেশনে ও ১ হাজার ২৪৯ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আইসোলেশনে ১৯ হাজার ৮০ এবং কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৮ হাজার ৬৭৮ জন। সারা দেশে কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় ১২ হাজার ৮৩টি সাধারণ বেডের মধ্যে গতকাল রোগী ভর্তি ছিলেন ২ হাজার ৭৩২ টিতে। বাকিগুলো খালি ছিল। এ ছাড়া ১ হাজার ৭২টি আইসিইউর মধ্যে এদিন রোগী ভর্তি ছিলেন ৪৪৭টিতে।