নিজস্ব প্রতিনিধি : পাবনা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে করোনার নমুনা টেষ্ট সংগ্রহে নানা বিশৃংখলা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ টেষ্ট টিউব ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের জনৈক ব্যক্তি করোনা টেস্ট করাতে গিয়ে নানাবিধ অব্যবস্থাপনা ও বিশৃংখল পরিবেশে স্যাম্পল সংগ্রহ করতে দেখে বিষ্ময় প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছক জনৈক ব্রক্তি জানান, শহরের টাউন হল সংলগ্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকাল ১০টায় গিয়ে ১০০ টাকা জমা দিলে সেখান থেকে একটা স্লিপ নিয়ে রায়বাহাদুর গেটের ভিতরে ১টি কাচের টিউব হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি সেটি নিয়ে রায়বাহাদুর গেটের ভিতরে তাড়াশ ভবনের নিচ তলায় স্যাম্পল দেয়ার জন্য আসেন। সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত সেখানে সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যায়নি।
পরে একজন পুরুষ ও একজন মহিলা কর্মী এসে কোনরূপ লাইন না করেই এলোমেলো ভাবে কাজ শুরু করেন। করোনা রোগীদের জন্য কোনরূপ নিরাপদ দুরত্ব মানা হচ্ছে না। গাদাগাদি আর ঠেলাঠেলি করে করোনার নমুনা সংগ্রহ করতে দেখা গেছে।
করোনা নমুনা সংগ্রহের টিউব এর গায়ে মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ লেখা আছে জুন ২০২১। সেই টিউব দিয়েই চলছে করোনা টেস্ট। অপরদিকে নাকের ভিতরে যে কটনবার দিয়ে নমৃনা সংগ্রহ করা হয়, সেখানেই নেই কোন সর্তকতা। প্যাকেট ছিড়ে এলোমেলো ভাবে টেবিলের উপর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে অসর্তকতায় কটন বার ব্যবহার করছে। ফলে করোনা নেগেটিভ পজিটিভ একাকার হয়ে সংক্রমন হার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় সোহানুর রহমান নামে একজন যুবক জানান, সকালে করোনা টেষ্টের জন্য এখানে নমুনা দিতে এসে দেখি স্বাস্থবিধি মানার কোন বালাই নেই। তারপরও আবার মেয়াদ উত্তীর্ণ টেষ্ট টিউব দেখে হতবাক হই। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা বলে উপরে কথা বলেন বিষয়টি নিয়ে।
মেয়াদ উত্তীর্ণ টিউব এর ব্যাপারে জানতে চাইলে স্যাম্পল সংগ্রহকারীরা জানায়, সরকার এভাবেই সরবরাহ করেছে। ভিতরে মেয়াদ ঠিক আছে। পুনরায় জিজ্ঞাসা করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং এ বিষয়ে জানতে হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে যেতে বলেন।
নমুনা সংগ্রহে নেই কোন বুথ, নেই কোন বসার ব্যবস্থা। সেবা প্রত্যাশী মানুষ সিঁড়িতে বসে বা দাঁড়িয়ে সময় পার করছে। কোনরূপ লাইন ধরে নমুনা দেওয়ার কোন ধরণের ব্যবস্থাপনা নেই। এছাড়া নমুনা দিতে আসা রোগীদের অভিযোগ করে বলেন অসুস্থ্য শরীর নিয়ে এখানে এসে প্রথমে ফরম সংগ্রহ করতে হচ্ছে সেটি পূরণ করে আবার ফটোকপি করে টাকা জমা দেওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়াতে হচ্ছে,এবং পরে রায়বাহাদুর গেটের ভিতরে গিয়ে টেষ্ট টিউবের জন্য ঘন্টা ব্যাপি দাঁড়িয়ে থেকে টেষ্ট টিউব সংগ্রহ করে আবার নমুনা দেওয়ার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে নমুনা দিতে হচ্ছে । একজন অসুস্থ্য রোগীর এতসময় দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব না । এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের সদয় দৃষ্টি প্রত্যাশা করেন ভুক্তভোগীরা।
পাবনা সদর উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বেশ কিছু কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আমরা লোকবল সংকটে ভুগছি। কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে সেবা প্রদানে। তারপরও সুষ্ঠুভাবে সেবা প্রদানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনার সিভিল সার্জন ডাঃ মনিসর চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি, মুলত টেষ্ট টিউবের কোন মেয়াদ হয়না। এটাতে মেয়াদ দেয়া আছে, বিষয়টি আমি বুঝতে পারছি না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখছি। আর জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।