পাবনা প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতি দিনদিন অবনতি হলেও একটি পিসিআর মেশিন পায়নি পাবনাবাসী। অবশেষে নমুনা পরীক্ষায় চরম ভোগান্তির অবসান হতে যাচ্ছে। পাবনা মেডিকেল কলেজ ভবনে ল্যাব নির্মাণের ৯৫ ভাগেরও বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং কিট এলেই চালু করা যাবে ল্যাবটি। বিষয়টি জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সদর আসনের এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্স। রোববার দুপুরে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভবনে পিসিআর মেশিন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পাবনাবাসীকে সুসংবাদ দিয়ে এমপি প্রিন্স জানান, জেলার সব শ্রেণি পেশার মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি পিসিআর মেশিন স্থাপনের। ইতোমধ্যে সেটি আমরা নিয়ে আসছি, এর কাজও প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। কিছু যন্ত্রাংশ, কিট ও টেকনিশিয়ান এলেই চালু হবে করোনা পরীক্ষার ল্যাব। সকল শ্রেনিপেশার মানুষই এখানে টেষ্ট করাতে পারবেন। দুর্ভোগ পোহাতে হবে না সাধারণ মানুষদেরও।
এমপি প্রিন্স আরও বলেন, শুধু লকডাউন দিয়েই করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়। ব্যক্তিগত সচেতনতাই ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। সারাবিশ্ব আজ এক ক্লান্তিকাল সময় অতিক্রম করছে বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক দিকনির্দেশনায় দেশে এখনো করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শুধু জনগণের মধ্যে একটু বাড়তি সতর্কতা আসলেই আমরা সুস্থ থাকতে পারবো। সবাইকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে হাট-বাজার বা রাস্তাঘাটে চলাচল করার আহবান জানান।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জে, কুষ্টিয়া, বগুড়া এবং রাজশাহীতে পিসিআর ল্যাব থাকলেও পাবনায় বাদ ছিল। পিসিআর ল্যাব না থাকায় নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জে। একবার নমুনা দিয়ে রিপোর্ট পেতে অপেক্ষা করতে হয় কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ দিন। এসব করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে তৈরি হয়েছিল অচল অবস্থা। এতে করোনার উপসর্গে থাকা এবং করোনা রোগীসহ তাদের স্বজনদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। সেই ভোগান্তির অবসান হয়ে নিজের জেলাতেই নমুনা পরীক্ষা করাতে পারবে। পাবনাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবিটি পূরণ হতে জেনে জনমনে আশার সঞ্চার হয়েছে।
পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বুলবুল হাসান বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আমাদের এখানে একটি আরটি পিসিআর ল্যাব দিয়েছেন। সেটি আমাদের কলেজ ভবনে স্থাপন করেছি। সব কাজই প্রায় শেষ অল্প একটু কাজ বাকি আছে সেটি হলেই আমাদের এখানে পিসিআর ল্যাব চালু হয়ে যাবে। তিনি আরও জানান, তার চাকরিকাল আর মাত্র ৪ মাস রয়েছে। তিনি চান পাবনাবাসীর জন্য অন্তত ল্যাবটি চালু করে দিয়ে যেতে। যন্ত্রপাতি ছাড়াও প্রয়োজনীয় কিট এবং ল্যাবের জন্য প্রয়োজনীয় জনবল এলেই এখানে নিজেদের মত করে করোনা পরীক্ষা করানো যাবে।
পরিদর্শন শেষে কলেজের কর্মচারীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। পরে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, পাবনা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাফিকুল হাসান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক ডা. জাহেদী হাসান রুমী, ডা. আহমদ তাউস, ডা. শাহিন ফেরদৌস শানু, ডা. বিপ্লব কুমার সাহা, ডা. রুহুল কুদ্দুস, ডা. মাসুদুর রহমান প্রিন্স, ডা. হাবিবুল্লাহ, ডা. শারমিন সবনম, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান রকিসহ প্রমূখ।