বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : করোনা মহামারীর কবল থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পেতে যাচ্ছে দেশ। দুর্বল হয়ে পড়ছে করোনার ছোবল। তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশে করোনা শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। গত ৩ জুনের পর এই প্রথম শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নামল। সরকার ঘোষিত টানা লকডাউন কার্যকর ও টিকাকরণ কর্মসূচীর পরিধি বাড়ানোয় করোনা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) সারাদেশে মোট ১৭ হাজার ৭৫০টি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার নেমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশে। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ১২ হাজার ২৬ জনে। এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫২টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত আরও ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬১ জনের মৃত্যুর ফলে দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৬ হাজার ৪৯৩ জনে।
করোনার ডেল্টা ধরনের কারণে চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছায়। দেশে ৫ আগস্ট সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন করোনা আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হন।
তবে আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে পরিস্থিতির ধারাবাহিক উন্নতি ঘটছে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু দ্রæত কমে আসছে। তাই অর্থনীতি সচল রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সবকিছুই খুলে দেয়া হয়েছে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হচ্ছে। আজ রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এই সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠক থেকেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৪২৪ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩ জন।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৩২ জন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৩, রাজশাহীতে ৪, খুলনায় ৬, বরিশালে ২, সিলেটে ১, রংপুরে ২ এবং ময়মনসিংহে ১ জন মারা গেছেন। নারী ও পুরুষের হিসাবে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ এবং ৩১ জন নারী। এদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ১৪৮ জন এবং নারী ৯ হাজার ৩৪৫ জন।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় ষাটোর্ধ ৩২ জন মারা গেছেন। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৪, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৬ জন এবং ২১-৩০ বছরের ২ জন মারা গেছেন। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।