আরও ১০০ কূপ খননের পরিকল্পনা পেট্রোবাংলার

জ্বালানির সংকট মোকাবিলায় দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে ৪৮টি কূপ খননের কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি ২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১০০টি কূপ খনন করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেট্রোবাংলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহ পরিস্থিতি এবং দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সুযোগবিষয়ক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আরও ১০০ কূপ খনন করতে চান ভালো কথা, কোনটি কখন করতে চান, টাইমলাইন (সময়সীমা) থাকতে হবে। সাফল্য দেখে মূল্যায়ন করা হবে।

সাকসেস রেট (সাফল্যের হার) ভালো হলে রাখা হবে, জিরো হলে আপনিও জিরো। যিনি কাজ পারবেন না, তাকে বাদ দেওয়া হবে। আর সহ্য করার সময় নেই।’

পুরো অর্থনীতি জ্বালানি খাতের ওপর নির্ভরশীল জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, ‘যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। যত তদবির করেন, কাজ হবে না।’

গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোকে জবাবদিহিতায় আনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সমালোচনা রয়েছে, বিতরণ কোম্পানি টাকা নেয়, গ্যাস দেয় না। শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়ে বসব। চুক্তি থাকবে, গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহ করতে না পারলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর জরিমানা দিতে হবে।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘গ্যাসের জোগান দিতে পারলে ভর্তুকি ৭০ শতাংশ কমে আসত। গ্যাসের মজুদ কমে আসায় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদন কমতে শুরু করেছে। দুই-তিন বছর কমবে, তারপর আবার বাড়বে। ৪৮ কূপ খনন প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী দুই বছরে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফূট গ্যাস পাব। কিন্তু দুই বছরে চাহিদা কত হবে, ২০০০ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বাড়বে। কীভাবে ঘাটতি সামাল দেব, তার পরিকল্পনা থাকতে হবে।’

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব নুরুল আলম বলেন, ‘বেশি দামে এলএনজি আমদানি করে জ্বালানি চাহিদা বেশিদিন মেটানো সম্ভব নয়। এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে অনেক অনেক ঘাটতি হচ্ছে। এলএনজির ওপর নির্ভরতা বাড়লে ভবিষ্যতে গ্যাসের দাম কোনো পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে, সেটি ভাবার সময় এসেছে।’

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দরপত্র আহ্বান করতে প্রস্তুত হয়েছি।’

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (রিজার্ভ এবং ডেটা ম্যানেজমেন্ট) মেহেরুল হাসান।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, অধ্যাপক ড. এএসএম ওবায়দুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হুসেন মো. সায়েম, অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মো. ইজাজ হোসেন।

পেট্রোবাংলা
Comments (0)
Add Comment