পাবিপ্রবির কর্মকর্তাকে হেনস্তা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে
পাবনা প্রতিনিধি : খেলাধুলার সরঞ্জামের কেনার নামে চাঁদা না দেয়ায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার শেখ শাহ জামালকে হেনস্তা ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় এঘটনা বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তা।
এদিকে এই ঘটনার একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। তাতে ভুক্তভোগী কর্মকর্তার সাথে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডার কথা শোনা যায়। অডিওতে এক পর্যায়ে একজনকে শোনা যায় কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দিতে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাফাত বিন ইসলাম শোভন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের যুগ্মা সাধারণ সম্পাদক আলমাছুর রহমান অয়ন, হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির রায়হান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মী মো. লিখন এবং তানভীর শান্ত। অভিযুক্তরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর অনুসারী।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, রবিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে একটি নাম্বার থেকে তার ফোনে কল আসে, তিনি তখন ট্রেজারার অফিসে ছিলেন। সেখান থেকে অয়ন, শোভন, লিখন, জহির, শান্ত সহ ১৫ থেকে ১৮ জন ছেলে তাকে শারীরিক শিক্ষা দপ্তরে ডেকে এনে হেনস্তা করেন এবং মৃত্যুর হুমকি সহ তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। এ সময় তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য বলেন, না গেলে খুন করে ফেলার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা শাহ জামাল বলেন, দুপুরে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী আমার কাছে এসে টাকা দাবি করেন কিন্তু আমি অফিশিয়াল প্রসিডিউর ছাড়া কাউকে টাকা দিতে পারি না। এর আগে আমাদের এক শিক্ষক রাহি স্যারের মাধ্যমে ওদের ব্যাডমিন্টন খেলার কিছু সরঞ্জাম প্রায় ৪০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে দেওয়া হয়েছে। ওদের নাকি ওগুলা শেষ হয়ে গিয়েছে, নতুন করে কেনার জন্য আমার কাছে টাকা দাবি করে। আমি বললাম তোমরা একটা লিখিত আবেদন করো তারপর আমি সেটা দেখবো। কিন্তু ওরা বললো এখনই টাকা দিতে হবে। আমি বললাম অফিশিয়াল প্রসিডিউর ছাড়া করতে পারবো না। এক পর্যায়ে ওরা আমাকে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে এবং বলে- ‘চাকরি এখন রিজাইন দিয়ে পাবনা ছাড়বি না হলে তোকে খুন করে ফেলবো।’ এর আগেও ওরা আমাদের সাথে এমন করেছে, আমি অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু বিচার পাইনি।’
এবিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে ওই কর্মকর্তা ছেলেপেলেদের ফেদার দেওয়া কথা ছিল, কিন্তু আজ দিচ্ছে কাল দিচ্ছে বলে তাদের ঘোরাচ্ছে। আজকে নাকি তার অফিসে ছেলেপেদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে, এইটুকুই জানি। ওদের মধ্যে দুই-একজন ছাত্রলীগের কেউ থাকতে পারে। বেশিরভাগই সাধারণ শিক্ষার্থী। এখন যেহেতু উনি বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই এটা দেখবে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমিও বিষয়টা শুনেছি। শুনেছি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে। এখন আসলে কি হয়েছিল সেটা জানার চেষ্টা করতেছি। এরপর এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।’