খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটন কেন্দ্র

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : ঢাকাসহ সারা দেশে গতকাল খুলে দেওয়া হয়েছে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। সমুদ্রসৈকত, চিড়িয়াখানা, থিমপার্কসহ সবখানে বাড়তি সতর্কতার দেওয়া হয়েছে পরামর্শ।

রাঙামাটি : জেলা প্রতিনিধি ফাতেমা জান্নাত মুমু জানান, পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গতকাল খুলেছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বুকিং শুরু হয়েছে হোটেল মোটেলগুলোতে। অগ্রিম বুকিং হয়েছে এক-তৃতীয় শতাংশ। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজান বিকাশ বড়ুয়া জানান, বৈশি^ক মহামারী করোনার জন্য স্থবির হয়ে পড়ে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। বন্ধ চার মাসে রাজস্ব খাতে ঘাটতি হয় প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এভাবে আর কয়েক মাস বন্ধ থাকলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ত পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

এদিকে পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিক সময়ে খুলে দেওয়া হয়েছে পার্বত্যাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। শুরু হয়েছে শরৎকাল। পাহাড়ে বৃষ্টির আমেজ কাটেনি এখনো। সবুজ বন, ফুল ফলে পরিপূর্ণ এখন পাহাড়। পাহাড়ি ছড়া, ঝরনাগুলো ফিরে পেয়েছে আপন রূপ। রাঙামাটিতে রয়েছে পর্যটকদের মন ভুলানো আকর্ষণীয় বিভিন্ন স্পট। রয়েছে পাহাড়, অরণ্য, হ্রদ ও ঝরনা। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা- যে কোনো রূপের জৌলুস থাকে এখানে। পার্থক্য কেবল ঋতুর সাজে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত মতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। বিধিনিষেধ অমান্য করা হলেই শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

কক্সবাজার : স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল খুলেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ পর্যটন কেন্দ্র। সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমুদ্রপাড়ে নেমেছেন পর্যটকরা। খোলা হয়েছে সব হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট। খুলেছে রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে সাগরপাড়ের ঝুপড়ি দোকান, ছাতা-চেয়ারও। সৈকতের ফটোগ্রাফার ও ঘোড়ার দৌড়ও থেমে নেই। সমুদ্রসৈকত ছাড়াও চেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে বিনোদন কেন্দ্রগুলো। স্বস্তিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি কড়া নজরধারিতে রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, সব হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউসে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অবহিত করা হয়েছে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৫০ শতাংশ কক্ষ ভাড়া দেওয়া হবে। যথাসম্ভব ঝুঁকিমুক্তভাবে পর্যটকদের সেবা দেওয়া হবে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানতে সতর্কতা মাইকিংসহ প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে এবং পর্যটন শিল্পকে অগ্রসর করতে পর্যটন ও সব বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে সরকারের বেঁধে দেওয়া সিদ্ধান্তগুলো মানতে হবে। সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি স্যানিটাইজার ও মুখে মাস্ক পরাসহ সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মৌলভীবাজার : জেলা প্রতিনিধি সৈয়দ বয়তুল আলী জানান, উন্মুক্ত হচ্ছে মৌলভীবাজারের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন পর্যটন সেবাদানকারী সব প্রতিষ্ঠান। দুই দফা লকডাউনে বন্ধ থাকার পর আর্থিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠাকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। হোটেল-রিসোর্ট মালিকদের সংগঠন পর্যটন সেবা সংস্থার দাবি, করোনাকালে লকডাউনে শ্রীমঙ্গলের হোটেল-রিসোর্ট ব্যবসায় প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

কুয়াকাটা : প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুয়াকাটা। এখানে দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট বড় পর্যটন স্পট। মহামারী করোনার কারণে পর্যটনসংশ্লিষ্টদের জীবন-জীবিকা পড়ে হুমকির মুখে। এই অবস্থায় গতকাল সকাল থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল রিসোর্টসহ সব বিনোদন কেন্দ্র উন্মুক্ত করা হয়েছে। নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

বাগেরহাট : জেলা প্রতিনিধি শেখ আহসানুল করিম জানান, করোনা পরিস্থিতির জন্য বন্ধ থাকা সারা দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো গতকাল থেকে খুলে দেওয়া হলেও এখনো খুলেনি সুন্দরবন। তবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয়েছে বাগেরহাটের অপর বিশ্ব ঐতিহ্য (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) ষাটগম্বুজ মসজিদ। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য গতকাল বিকাল পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো আদেশ আসেনি। তাই পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। সুন্দরবনের জন্য বন মন্ত্রণালয় বা বন অধিদফতর থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার আদেশ আসলে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড ষাটগম্বুজ মসজিদের ভারপ্রাপ্ত কাস্টডিয়ার ও খতিব মাওলানা হেলাল উদ্দিন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য গতকাল দুপুর ২টা থেকে ষাটগম্বুজ মসজিদ ও জাদুঘর খুলে দেওয়া হয়েছে।

নাটোর : দেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান নাটোরের উত্তরা গণভবন গতকাল থেকে দর্শনার্থীদের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক ও গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শামীম আহমেদ দুজন দর্শনার্থীর হাতে গণভবনে প্রবেশ টিকিট তুলে দিয়ে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, প্রবেশদ্বারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রানীভবানী রাজবাড়ীসহ জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রও একই সঙ্গে দর্শনার্থীদের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.