শিমুল বিশ্বাসের শিকড় হাওয়ার নয় পরিবহণ শ্রমিকদের অন্তরে পোঁতা ।
এক শিমুলে সড়ক ফাঁকা”, শ্রমিকদের চাঁদার ভাগ খাওয়া নেতার জন্য কেন এত দরদ সাধারণ শ্রমিকদের এই তথ্য খুঁজে দেখা হয়নি।
কিশোর বয়সে স্কুলের পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম ‘সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে’ কিন্তু চুল পাকা বয়সে এসে দেখলাম ‘সংগ দোষে সব লোহাই ভাসে না, কিছু লোহা ডুবে যায়। এই কথাটুকু বলার কারণ হলো গত কয়েকদিন আগে ২/১ একটি গণমাধ্যমে একটি সিজোনাল (মৌসুমী) সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই শিরোনামে যে “এই দুঃসময়ে ৭০ লাখ পরিবহণ শ্রমিকের কল্যাণ তহবিলের টাকা কোথায়? এই সংবাদে ৫ জন শ্রমিক নেতার ছবি ব্যানার হেড জুড়ে দেওয়া হয়েছে আর তথ্য দেওয়া হয়েছে যে তহবিলে বছরে জমা হওয়া ২ হাজার কোটি টাকা লুটেপুটে খাচ্ছে ৫ জন শ্রমিক নেতা। সেখানে নাম জুড়ে দেওয়া হয়েছে ৮০ দশকের পাবনা রাজনীতির অংঙ্গনের রাজপথ কাঁপানো বিপ্লবী ছাত্র নেতা বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসের নামও। অন্য নেতাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ ও দেশবাসী ভালো বলতে পারেন। ওনাদের সাথে সংগ দোষে শিমুল বিশ্বাসের নামও ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে উক্ত কাগজে লেখা রিপোর্ট মোটেও সত্য নয় ডাহা মিথ্যা কথা। ভাঙ্গা রেকড বাঁজানোর মত হয়েছে। যিনি জীবন যৌবনের অধিকাংশ সময় কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের দাবী আদায়ের লড়াইয়ে অংশ নিয়ে জীবনের সোনালী দিন বছরের পর বছর মাটি চাপা দিয়ে এখনও টিকে আছেন সাধারণ মানুষের কাতারে। তাকে চাঁদাবাজের দলভুক্ত আখ্যা দেওয়ার আগে সঠিক তথ্য অনুসন্ধান করা উচিত ছিল। কারণ পরিবহণ শ্রমিকদের কাছে শিমুল বিশ্বাস একটি দরদী ও নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তি। গত জোট সরকারের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অনুপ্রাণিত করে তিনি সরকারী ভাবে পরিবহণ শ্রমিকদের জন্য “শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন” করিয়েছিলেন। যিনি বছরের পর বছর পারিবারিক অর্থ-সম্পদ, স্বজন ও বন্ধুদের সহযোগিতায় পরিবহণ শ্রমিকদের বিভিন্ন রকম সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তার নিজস্ব ইউনিয়নের মৃত্যুবরণকারী সদস্য শ্রমিকদের পরিবারকে ও দুর্ঘটনায় পঙ্গু শ্রমিকদের নিয়মিত প্রণোদনা দেওয়ার কর্মসূচি অব্যহত রেখেছেন। বর্তমানে করোনা সংকট কালে পাবনায় পরিবহণ শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। তাই তো প্রকাশিত সিজেনাল (মৌসুমী) সংবাদে তার নাম জড়িয়ে দেওয়ায় অনেক পরিবহণ শ্রমিক ব্যথিত হয়েছেন। তাদের প্রশ্ন শ্রমিক নেতা শিমুল বিশ্বাস রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে প্রায় ৩ বছর বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ও বাসভবনে অন্তরীণ থেকে প্রায় ১২২টি মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে আরও প্রায় ২ বছর কারাগারে থাকলেন। তাহলে এই কয়েক বছরে পরিবহণ শ্রমিকদের চাঁদার টাকার ভাগ তার পক্ষ থেকে কে নিলেন? এই তথ্য তো দেওয়া হল না। প্রথমবার তিনি যখন গ্রেফতার হলেন তার মুক্তির দাবীতে পরিবহণ শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দেন। সে দিন সারাদেশের পরিবহণ শ্রমিকরা স্বপ্রনোদিত হয়ে বাংলাদেশ অচল করে দিয়েছিলো। ঐ দিন বহুল প্রচারিত একটি জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম ছিল “এক শিমুলে সড়ক ফাঁকা”, শ্রমিকদের চাঁদার ভাগ খাওয়া নেতার জন্য কেন এত দরদ সাধারণ শ্রমিকদের এই তথ্য খুঁজে দেখা হয়নি। এর পর ১২২টির মত মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে ২ বছর কারাগারে থাকলেন। কিন্তু সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন শিমুল বিশ্বাসের মুক্তি দাবীতে একটা বিবৃতিও দেন নাই। এমন কি তৃণমুল পর্য্যায়ের পরিবহণ শ্রমিকরা শিমুল বিশ্বাসের মুক্তির জন্য কর্মসূচি দাবী করলে, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের কতিপয় নেতা অজ্ঞত কারণে তা কর্ণপাত করেনি। উপরন্ত যারা এই দাবী করেছে তাদেরই হুমকি ধামকি জেল জুলুমের ভয় দেখিয়ে দাবিয়ে রাখা হয়েছে। অথচ সেই ফেডারেশনের চাঁদার স্রোতে তার নাম ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেটা দেখে শুনে সাধারণ পরিবহণ শ্রমিকরা হতবাক হয়ে গেছেন। প্রকাশিত প্রচারিত সিজেনাল নিউজ (মৌসুমী সংবাদ) নিয়ে কথা হয় বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিক নেতাদের সাথে। বারবার সিজেনাল নিউজ শব্দটি ব্যবহার করছি এই কারণে যে আমাদের কিছু কিছু গণমাধ্যম কর্মীদের ফাইলে বছরের পর বছর কিছু সংবাদ রেখে দেওয়া হয়, শুধু দিন তারিখ সময় বদল করে পত্রিকায় চালিয়ে দেওয়া হয়। যেমন “প্রচন্ড গরমে হিট স্টোকে এত জনের মৃত্যু” “প্রচন্ড শীতে এত জনের মৃত্যু” “বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি” “ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশের ব্যাপক চাঁদাবাজী” ইত্যাদি। তেমনি শ্রমিক নেতা শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে ঐ সকল গণমাধ্যম তথ্য বিহীন সংবাদ পরিবেশন করেছে। এ সম্পর্কে পাবনা জেলা ট্রাক ট্রাকলরি ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল্লাহ হোসেনের কাছে এই চাঁদাবাজি সর্ম্পকে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পত্র পত্রিকায় শ্রমিক ফেডারেশনের চাঁদাবাজীর সাথে শিমুল বিশ্বাসের নাম জড়িয়ে যা প্রকাশ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা বানোয়াট এবং যড়যন্ত্রমুলক। কারণ শিমুল বিশ্বাসের মত শ্রমিক দরদী মানুষ, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনে ২য় জনও নাই। আমি এই সাংবাদিক কে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি উনি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, শিমুল বিশ্বাস ফেডারেশনের চাঁদা সাথে জড়িতে তাহলে আমি নিজেই শ্রমিক রাজনীতি ছেড়ে দেব।
কারণ যার কষ্ট মেধা শ্রম অর্থ সব কিছুই তিনি বিলিয়েছেন পরিবহণ শ্রমিকদের স্বার্থে। প্রায় ২ যুগ ধরে যিনি পাবনার দূর্ঘটনায় নিহত ড্রাইভার হেলপার এবং পঙ্গু হয়ে যাওয়া ড্রাইভার হেলপারদের নিজ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। শিমুল বিশ্বাস নিজ খরচে পরিবহণ শ্রমিকদের আইনী সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। যাবজ্জীবন দন্ড পাওয়া শ্রমিক থেকে শুরু করে কারাগারে যাওয়া অনেক শ্রমিককে তিনি মুক্ত করিয়েছেন, এমন কি কারাগারে থাকা অবস্থায়ও শিমুল বিশ্বাস বিপদগ্রস্থ শ্রমিকদের খোঁজ খবর রাখতেন। বর্তমানে করোনা সংকট কালে পাবনার প্রায় ৩ হাজার শ্রমিককে খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করেছেন। তাই যারা পত্র পত্রিকায় শিমুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এই সব লেখালেখি করছেন তারা সঠিক তথ্য সংগ্রহ না করে মনগড়া কথা লিখেছেন। মনগড়া মিথ্যা কথা লেখা নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের কোন মাথা ব্যথা নেই, কারণ শিমুল বিশ্বাস কেমন তা বাংলার শ্রমিকরা ভাল করেই জানে।
পাবনা জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফিরোজ হোসেনের কাছে ফেডারেশনের চাঁদাবাজীর সাথে শিমুল বিশ্বাসের নাম জড়িয়ে প্রকাশিত সংবাদ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এসব নিউজ বা সংবাদ যাই বলেন, তাহল “কাঠের বিড়াল দিয়ে ইদুর ধরার” মত, যে সাংবাদিক লিখলেন যে শিমুল বিশ্বাস সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের চাঁদাবাজীর সাথে জড়িত তিনি এই তথ্য কোথায় পেলেন? ঐ কাগজ শ্রমিকদের সামনে দেশবাসীর সামনে এই মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে কাদের খুশি করতে চেয়েছেন তা উনাকে জিজ্ঞাসা করুন। এব্যাপারে জানতে চাওয়া হয় পাবনা জেলা ট্রাক ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আঃ রাজ্জাকের কাছে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, পরিবহণ শ্রমিক নেতা হিসাবে কোন চাঁদাবাজীর সাথে শিমুল বিশ্বাসের সম্পর্ক আছে প্রমাণ করতে পারলে আমি শ্রমিক রাজনীতি ছেড়ে দেব। শিমুল বিশ্বাস শ্রমিক ফেডারেশনের চাঁদা ভাগ খান না। তিনি সব সময় বিনা পারিশ্রমিকে শ্রমিক ফেডারেশনে সকল কাজে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা দেন। যে সংবাদপত্র বা সাংবাদিক এটি লিখেছেন তারা ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কর্মচারীদের কাছে খবর নিক তাহলে প্রকৃত তথ্য পেয়ে যাবে। শিমুল বিশ্বাস নিজ জেলার ইউনিয়ন থেকে, উত্তরবঙ্গ অঞ্চলিক কমিটি থেকে এবং কেন্দ্রীয় ফেডারেশনের অভিস থেকে কখনো কোন ভাগ বা অর্থ নেয় না, এ কথা সাধারন শ্রমিকরা সকলেই জানে। শিমুল বিশ্বাসের চরিত্র হরণ করার জন্য এবং বিশেষ মহলকে খুশির জন্য এই সংবাদ পরিবেশন করে সাধারণ শ্রমিকদের মাঝ থেকে তার নাম মুছে ফেলা যাবে না। বাংলার হাজার হাজার পরিবহণ শ্রমিকদের হৃদয়ে থাকবে শিমুল বিশ্বাস।
তথ্য সংগ্রহ ও লেখক-
আঁখিনূর ইসলাম রেমন
বার্তা সম্পাদক
দৈনিক ইছামতি, পাবনা।