পাবনায় দুইদিন- রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী

ভ্রমণ কাহিনী- পাবনা

0

হালিম ভাইয়ের হঠাৎ ডাক এলো পাবনা যাই। আসলাম ১২ আগস্ট। পরদিন সকাল ঈশ্বরদী থেকে পাবনা। প্রথম যাত্রা শ্রদ্ধেয় রণেশ মৈত্রের বাড়ি। পৌঁছতে যতো দেরী হচ্ছিল তত দাদার মেসেজ আসছিলো অবিরত। অবশেষে পৌছলাম দেখা হলো। দাদা বৌদি পূরবী মৈত্র দুজনই অপেক্ষা করছিলেন। দাদা ৪ অক্টোবর ৯০ এ পা দিবেন। বৌদির চলছে ৮০। এই বয়সেই বৌদি নিজ হাতে আমাদেরকে আপ্যায়ন করলেন। তারপর চললো দেশ ও জীবনের কথা। ভাষা আন্দোলন থেকে আজ অব্দি এই মানুষটি সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। পাকিস্তান আমলের বড় অংশ কেটেছে জেল খানায়।

বহু জেলেই বঙ্গবন্ধুর সাথী হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলো গভীর ব্যক্তিগত সখ্যতা। জিয়া এরশাদের আমলেও জেল খেটেছেন বহুবার ।
সাংবাদিকতা করেছেন দীর্ঘকাল। পেশা জীবন থেকে সরে আসলেও সব সময় বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় কলাম লিখে যাচ্ছেন। আজকে সমকাল পত্রিকায় তাঁর কলাম ছাপিয়েছে। সাংবাদিকতায় তিনি একুশে পদক পেয়েছেন কিছুদিন আগে। নিজের আত্মজীবনি ও বঙ্গবন্ধু নিয়েও লিখেছেন।
চমৎকার লেখনি শক্তি। নব্বই বছরে ও মানসিকভাবে একজন তরতাজা তরুণ। তবে দেশের সামাজিক অধপতন,সাম্প্রদায়িকতা, দুর্নীতি ইত্যাদি দেখে খুব কষ্ট পান নিভৃতচারী এই বিপ্লবী মানুষটি। স্যালুট রণেশদা আপনার মতো মানুষরা আছেন বলেই আমরা আগামীর সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, দেখতে থাকবো। আপনারা দুজন শতায়ু হউন।

পাবনার কালের কণ্ঠের পাবনা প্রতিনিধি তরুণ সাংবাদিক প্রবীর সাহা তাঁর স্ত্রী তন্বীর আপ্যায়ন, সঙ্গ ভুলবার মতো না। বাংলাদেশ সুগার গবেষণা ইনস্টিটিউট রেষ্ট হাউসে থাকা খাবার ব্যবস্থাপনাসহ সারাক্ষণ প্রবীর সাহা আমাদের সাথে।

ঢাকার বাইরে এলে বুঝা যায় বাংলাদেশ কতো এগিয়ে যাচ্ছে।
◑ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরে ঈশ্বরদীতে কর্ম চাঞ্চল্য। বহু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশবিদেশ থেকে মানুষ আসে এখানে।
◑ পাবনা, ঈশ্বরদীতে ঘিরে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্ট । স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের অহিনের আপ্যায়ন ভুলবার মতো না ।


◑ স্বপ্নদ্বীপ রিসোর্টের উপদেষ্টা মান্না সরদারের অফিসে কিছু সময় খুব ভাল কেটেছে ।

◑ গতকাল প্রবীর নিয়ে গেলো রূপকথা রিসোর্টে। বিশাল এলাকা জুড়ে রিসোর্টটি। মালিক ড. সোহানী হোসেন একজন আর্টিষ্ট। শিল্পীর তুলিতে সাজিয়েছেন। যেদিকে চোখ যাবে মুগ্ধতায় মন ভরে যাবে। এদেরই রত্নদ্বীপ নামে একটি রিসোর্ট আছে শহরের অন্য প্রান্তে। যাওয়া হয়নি। সেটি নাকি আরো উন্নত।

◑ রূপ কথার কাব্য। একটি কফি হাউস। আকারে খুব বড়ো না। কিন্তু অপূর্ব শিল্পের ছোঁয়া। একদিকে কফির টেবিল। অন্য সাইডে সমৃদ্ধ বইয়ের সমাহার। বই হাতে কফির মজা নেয়া, কতো ভালো লাগার বিষয়। এটিও ড. সোহানী হোসেনের।

◑মহানায়িকা সুচিত্রা সেন পাবনার মেয়ে। তার শৈশব কৈশোর কেটেছে এখানে। এক সময় তাঁর বাড়ির একাংশ দখলে নিয়েছিলো জামাতীরা। এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে। দায়সারাভাবে দুএকজন কর্মচারী আছে। একটি ছেলেকে জিজ্ঞেস করতে বললো জেলা প্রশাসনের অধীনে মাষ্টার রোলে কাজ করে। বেতন মাসিক ৩,০০০। এর কাছ থেকে কি সেবা আশা করবেন! এরা একটা আশা নিয়ে থাকে যদি কোনদিন রেগুলার সরকারি চাকুরে হয়!

◑ হালিম ভাইয়ের স্নেহভাজন অনিরুদ্ধ লিখন। সে পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক। তার সাথে গেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। সাক্ষাৎ হলো ভিসি ম্যাডামের সাথে। ৯০ একর জায়গায় গড়ে উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

◑ পাবনা আসার কারনেই বিপ্লবী রনেশদার দেখা। দেখা পেলাম আরো অনেকের। অনেকের বলে আপনি ঘুরেন শুধু। আসলে সবাই কোথাও না কোথাও ঘুরে। বেশির ভাগ গোপন রাখে। আমি লিখে জানাই। এইটুকুই প্রভেদ। ঢাকার বাইরে যান দেখুন কোথায় যাচ্ছে বাংলাদেশ।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.