নতুন বছর নতুন প্রত্যাশা
হীরেন পণ্ডিত : নতুন বছর শুরু হলো। সদ্য বিদায়ী বছরের ফেলে আসা কিছু ঘটনা, আমাদের যেমন উচ্ছ¡সিত করে তেমনি নিক্ষিপ্ত করে আতঙ্কের মাঝে। আমরা ২০২৩ সালে অনেক কিছু অর্জন করেছি। তবে বিসর্জন বা অস্থিরতাও জন্ম দিয়েছি ভীষণভাবে, বিসর্জন দিয়েছি সহিষ্ণুতা, বিসর্জন দিয়েছি মনুষ্যত্ববোধ। একদিকে অভ্যন্তরীণ আরেকদিকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র, মিথ্যার বেড়াজাল ছিন্ন করে দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এবারের ইশতেহারের ¯স্লোগান-‘স্মার্ট বাংলাদেশ : উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’। এতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করে ১১টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
২৭ ডিসেম্বর এ ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইশতেহারে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে উত্তরণ প্রসঙ্গে তিনি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তি সক্ষমতা একান্ত প্রয়োজন। এজন্য ‘স্মার্ট নাগরিক’, ‘স্মার্ট সরকার’, ‘স্মার্ট অর্থনীতি’ ও ‘স্মার্ট সমাজ’-এই চারটি স্তম্ভের সমন্বয়ে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সাধারণ আয়ের মানুষকে চরম বিপদের মুখে ফেলেছে। এইরকম দম বন্ধ করা পরিস্থিতির মধ্যেও, নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কিছু বিষয় রয়েছে। বিশেষ করে, যোগাযোগের ক্ষেত্রে ২০২৩ সালে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল এরই মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত এবং সহজ হওয়ার কারণে অর্থনৈতিকভাবেও এর ফল বহুমাত্রিক। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি প্রমাণ করেছে, বাজার ব্যবস্থাপনায় সরকারের চরম ব্যর্থতা। পাশাপাশি ব্যাংক খাতে প্রভাবশালী ব্যক্তি বা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে জবাবদিহির সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। ফলে এ খাতে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। অনাদায়ী ঋণ, খেলাপি ঋণের কারণে এ খাত ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। আর্থিক খাত সংস্কার করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু এবং নারী নির্যাতনের সংখ্যাও গত বছর কম ছিল না।
নিজেদের আমরা সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ জীব দাবি করি এই দাবি করাকে মানুষকে প্রমাণ করতে হবে সে মনুষ্যত্ববোধ নিয়ে চলে। অবশ্য বিশে^র সবখানেই এখনো জাতি, ধর্ম বা বর্ণের ওপর ভিত্তি করে চলে নির্বিচার মানুষ হত্যা, হেরে যায় পারিবারিক স্নেহ, বন্ধন, হেওে যায় মনুষ্যত্ববোধ, যেখানে এখনো নারীকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার জন্য করে যেতে হয় প্রতিনিয়ত লড়াই, বিভিন্ন বিষয় বাড়িয়ে তোলে নারী নির্যাতনের মতো ঘটনা, মহাদুর্যোগের সময় যেখানে কতিপয় ব্যক্তিবর্গের জন্য হয়ে ওঠে মুনাফা লাভের মোক্ষম সুযোগ, আর তাই মানুষ কি এখন পশু বা তার চাইতে নিকৃষ্ট প্রাণীতে পরিণত হচ্ছে কিনা সেটিই একটি বড়ো প্রশ্ন। মানুষের স্বপ্ন তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে, কিন্তু একটা বিশ্ব, একটা পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজন সবার ভালোবাসা, পারস্পরিক সম্মানবোধ ও বোঝাপড়া।
আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য আজ আমরা যে বিশ্ব তৈরি করে যাচ্ছি, তা যেন পাঠ্যবইয়ে এমন কোনো বিলুপ্ত সময়ের প্রতিনিধিত্ব না করে, যা পড়ে তারা শঙ্কিত বোধ করবে, বরং সে বিশ্ব হোক ভালোবাসার আর উদারতার। জেগে উঠুক মানুষের মধ্যকার মনুষ্যত্ব আর মানবিকতাবোধ।
চিন্তা-চেতনা, বিবেক-বিবেচনা, কাণ্ড-জ্ঞান আর বিচার-বুদ্ধির ক্ষমতার কারণেই প্রেম-ভালোবাসা, দয়া-মায়া, উদারতা, সহযোগিতা, সহমর্মিতা, ধৈর্য, ত্যাগ, ক্ষমা, সহনশীলতা, সহানুভূতিশীলতা, সৌজন্যবোধ, শৃঙ্খলা, বিনয়, ভালো চিন্তা ও ভালো ব্যবহার ইত্যাদি আবার ফিরে আসুক নতুন বছরে, সাবলীলভাবে। মাধ্যমে মানুষ মনুষ্যত্বের অধিকারী হয়।
দান করা, দয়া দেখানো, ক্ষমাশীল হওয়া, সত্য প্রতিষ্ঠা করা, অহিংসা লালন করা, পরোপকার করা পূণ্যের কাজ হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত বিষয়গুলো আবার আসুক আমাদেও কাছে।
আমাদের কাছে থাকা মানবীয় গুণাবলী বিসর্জন দিচ্ছি প্রতিনিয়ত, হারিয়ে যাচ্ছে নীতি-নৈতিকতা, লোপ পাচ্ছে আমাদের ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা। মানুষের প্রতি মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে কালের গর্ভে, প্রেম-ভালোবাসা ও দয়া-মায়া, ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে।
আমরা কিন্তু মানবীয় গুণাবলী হারিয়ে ক্রমেই মানুষ হিসেবে নয়, ক্রমেই অমানুষ হয়ে হিং¯্র প্রাণীর মতো নিষ্ঠুর আচরণ করছি।
আমরা প্রত্যেকেই দেশের শান্তির কথা বলি, সবার মিলনের কথা বলি, উজ্জ্বলতার কথা বলি, নীতির কথা বলি, সত্যের কথা বলি, সাফল্যের কথা বলি এমনকি এসব কথা শুনতেও পছন্দ করি, কাজের বেলায়ও এসবের তরে নিজেকে সঁেপ দিতে ভালো লাগে, কিন্তু যখন দেখা যায়, অন্যের তুলনায় নিজের থলেটা তেমনভাবে পূর্ণ হচ্ছে না তখনই বিবেক হয়ে ওঠে হিংস্র। আর যে শান্তি কিংবা অন্য ইতিবাচক কিছুর জন্য নিজেকে তুলে ধরা হয়েছিল সেসব কিছু একটি অসুস্থ বিবেক এসে ঢেকে ফেলে যেমন করে মেঘ এসে আকাশের নীলকে অদৃশ্য করে দেয়, যা নিতান্তই কষ্টের জন্ম দেয় সবার।
আমাদের নৈতিক স্খলন হচ্ছে প্রতিদিন তা আমরা ভেবে দেখিনা, জীবনযাত্রার দৌড়ে সবাই শামিল কে কাকে কিভাবে পেছনে ফেলে নিজে এগিয়ে যাবে তা নিয়েই জন্যই ব্যতিব্যস্ত, বিবেকের স্খলন হচ্ছে তা আমাদের কাছে ব্যাপার না। যে কোনো মূল্যে সম্পদশালী হতে হবে। আমাদের কাছে থাকা মানবীয় গুণাবলী বিসর্জন দিচ্ছি প্রতিনিয়ত, সম্পদ আহরণের জন্য, ভোগ বিলাসের জন্য। আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নীতি নৈতিকতা, লোপ পাচ্ছে আমাদের ভালো মন্দ বিচার করার ক্ষমতা। মানুষের প্রতি মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতা বিলীন হয়ে যাচ্ছে কালের গর্ভে, প্রেম-ভালোবাসা ও দয়া-মায়া, ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে।
শুধু আইনী কাঠামো দিয়ে এ অবক্ষয় দূর করা যাবেনা। এজন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক আন্দোলন এবং নাগরিক সমাজকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের মানবিক মূল্যবোধ একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এখন সহনশীলতা ও ধৈর্য আমরা হারিয়ে ফেলেছি। শিক্ষার হার এত যে বাড়ছে তাতে কী লাভ হচ্ছে? শিক্ষিত হয়ে আমরা আরো বর্বরতার দিকে ধাবিত হচ্ছি কিনা তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। কোনো ধরনের শিক্ষাই আমাদের মূল্যবোধ ও মনুষ্যত্ববোধ তৈরিতে সহায়ক হচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আমরা ক্রমেই আদিম যুগে ফিরে যাচ্ছি। ব্যাপারটি নিয়ে গভীরভাবে ভাবা জরুরি। একবার খাদের কিনার থেকে ছিটকে নিচে পড়ে গেলে কোমর সোজা করে উঠে দাঁড়ানো জাতির জন্য কঠিন হয়ে যাবে।
নিজের বিরুদ্ধেই প্রতিনিয়ত যুদ্ধে নামছে মানুষ। সেই যুদ্ধে হারিয়ে যাচ্ছে তাদের মূল্যবোধ। হারিয়ে যাচ্ছে মানবিকতাও। অন্ন-বস্ত্রের প্রাচুর্যের চেয়েও নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও মনুষ্যত্ব বড়। মানুষ যতদিন পর্যন্ত এই বোধটি ধারণ করবেন না, তত দিন পর্যন্ত কেউ মানবজীবনে সোনা ফলাতে পারবে না। তাদের মধ্যে সেই শিক্ষা প্রাথমিক পর্যায় থেকেই দিয়ে দিতে না পারলে কখনোই মূল্যবোধ সৃষ্টি হবে না। কেননা শিক্ষার আসল কাজই হলো মূল্যবোধ সৃষ্টি। শুধু জ্ঞান দান নয়। জ্ঞান মূল্যবোধ সৃষ্টির উপায়মাত্র।
এই দেশটিকে পাবার জন্য ৩০ লক্ষ শহীদ আত্মত্যাগ করেছেন অসংখ্য মা বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। একটি সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা মনোনিবেশ করি, আমরাই একটি সুন্দর সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
গত বছর জুড়ে বিএনপির আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচিতে সরগরম ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। একইসঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা তৎপরতা ছিল প্রকাশ্য। এরপর আসে ভিসা নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরে মূলত বিএনপি ও তার জোটের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিএনপির মিছিল, মিটিং, জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে দেশে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। উন্মত্ত রাজনৈতিক কর্মীর হাতে আহত-নিহত হতে থাকে মানুষ। বাস, ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে তৈরি হয় ভয়ংকর অরাজক পরিস্থিতি। যার রেশ নতুন বছরেও কাটেনি। এ রকম রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্যেই ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ক্ষমতায় আসবেন অনেকটাই বা কারা ক্ষমতার বাইওে থাকবেন কিন্তু তাতে কি নতুন বছরে দেশের রাজনীতি এবং অর্থনীতি স্থিতিশীল হবে?
তবে সমস্ত বাধাবিপত্তি কাটিয়ে সমষ্টিগতভাবে দেশের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিই আমাদের চাওয়া। শোষণমুক্ত ও বৈষম্যহীন একটি সমাজের স্বপ্নে যেন আমরা তাড়িত হই। কেটে যাক রাজনৈতিক বিভেদেও বেড়াজাল। আমরা যেন হতে পারি আমাদের। মত-অমত, মিল-অমিল, সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য থাকুক। এই থাকাটাই সুরুচিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিচয়। দেশের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যে পরিপূর্ণতা আসুক। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার দৃষ্টান্ত হোক বাংলাদেশ নতুন বছরে এই চাওয়া। আমরা সবাই বিভোর থাকতে চাই, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে। নতুন কোনো সম্ভাবনা, আশা জাগানিয়ার সমষ্টিগত কথা বলুক নতুন বছর।
যুক্তরাষ্ট্রের ও রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন যে যুদ্ধে জড়িয়েছে তা বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আবার এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে শর্তযুক্ত যে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তা এখন অনেকটা সংক্ষিপ্ত হয়ে এসেছে। মানবসৃষ্ট এইসব অশান্ত পরিবেশের কারণে বিশ্বে যে অর্থনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে তার রেশ এখনও দেশে দেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা আগামীতেও থাকার সম্ভাবনা দৃশ্যমান। এর বড় প্রমাণ বিশ্বের প্রায় সব দেশে লাগামহীন মুদ্রাস্ফীতি।
অসহিষ্ণু রাজনীতি পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা, প্রায় ত্রিশজন সাংবাদিককে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা, নতুন করে যোগ হলো যানবাহন, ট্রেনে অগ্নিসংযোগ, রেললাইন কেটে মতো ফেলার মতো লোমহর্ষক ও ভয়াবহ নাশকতামূলক কর্মকাÐ বছরটিকে এক হিংস্রের সময়ে পরিণত করেছে।
তাই সবার সামনে সময় এসেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্র্রীতি বজায় রেখে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার। সবশেষে ইশতেহারে অঙ্গীকার করা হয়েছে সুশাসনের। সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে অন্য বিষয়গুলো সমাধান এমনিতেই হবে বলে বিশেষজ্ঞ ব্যৃক্তিরা মনে করেন।। এটি করতে হলে আবারও যথাস্থানে যথা মানুষকে পদায়ন করা ও আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে থাকতে হবে নির্মোহ ও নিরপেক্ষ।
একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশ এক ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হতে যাচ্ছে দেশ। এ উত্তরণ যেমন একদিকে সম্মানের, অন্যদিকে বিশাল চ্যালেঞ্জেরও। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারকে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সক্ষমতা থাকতে হবে। একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে। মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়, মাতৃভূমির স্বাধীনতা থেকে শুরু করে এ দেশের যা কিছু মহৎ অর্জন, তা এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরেই ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃার্ট সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। নাগরিকমুখী, কল্যাণমূলক দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়া এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারবদ্ধ। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের মাধ্যমে দক্ষ, উদ্যোগী, তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ও দুর্নীতিমুক্ত দেশপ্রেমিক প্রশাসন গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
শান্তি ও ন্যায় বিচার বা নায্যতা। একটি ন্যায্য ও টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীল অবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে নিরাপত্তা ও অধিকারে প্রশ্নে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে, সুশাসনের শূন্যতা অধিকার প্রদানের নিশ্চয়তার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সমতা তৈরী একটি দেশের উন্নয়নের জন্য বাস্তব এবং কার্যকরী পদক্ষেপ। দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার পাশাপাশি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে টেকসই উন্নয়ন খুবই জরুরি। তাই নতুন বছর নতুন আশা নিয়ে সবাই এগিয়ে যাবে।
হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক ও গবেষক